মেদিনীপুর, 13 জানুয়ারি : রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের রাত্রিবাসের জন্য রয়েছে সরকারি সুযোগ-সুবিধা । কিন্তু, তা সত্ত্বেও রোদ-জলে, প্রবল ঠান্ডায় ত্রিপল পেতেই মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রাত কাটাতে হচ্ছে তাঁদের ।
মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেই কোনও প্রতীক্ষালয় । নেই রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের রাত্রিবাসের জন্য কোনও ব্যবস্থাও । অথচ এই হাসপাতালেই রোগীর পরিজনদের জন্য একসময় পৌরসভা থেকে সরকারি সুযোগ-সুবিধায় মাত্র কুড়ি টাকার বিনিময়ে রাত্রিবাসের ব্যবস্থা করেছিল পৌরসভা । তার দেখভালের দায়িত্বে ছিল পৌরসভা । কিন্তু, তা সত্বেও খোলা আকাশের নিচে, ত্রিপল পেতে, নোংরা-আবর্জনার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন রোগীর আত্মীয়-স্বজনরা ।
অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে হেলদোল নেই প্রশাসন এমনকী পৌরসভারও । মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ সদর হাসপাতাল হওয়ার পর থেকেই এখানে রোগীদের ভিড় উপচে পড়ে । বিভিন্ন ব্লক থেকে শ'য়ে শ'য়ে গরিব মানুষ আসেন সরকারি সুযোগ-সুবিধায় চিকিৎসা করাতে । কিন্তু, মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ভেতরে রোগীর পরিজনদের থাকার জন্য কোনও প্রতীক্ষালয় নেই । কাজেই চিকিৎসার প্রয়োজনে এসে মশার কামড়ের মধ্যে করিডরে রাত্রিযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীর পরিবারের লোকজন ।
উদাসীন পৌরসভা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । যদিও মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের জন্য একসময় পৌরসভা কর্তৃক দুটি সরকারি শয্যাগার গঠন করা হয়েছিল, একটির নাম রাজীব গান্ধি পুরোনিলয়ম, অপরটি আবুল কালাম আজাদ । এই বিল্ডিংয়ে থাকার জন্য কুড়ি টাকা করে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছিল সেসময় । কিন্তু বর্তমানে সেই ভাড়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে 50 টাকা থেকে 150 টাকা । পাশাপাশি এই শয্যাগারটি একটি নার্সিংহোমকে ভাড়া দিয়ে দিয়েছে মেদিনীপুর পৌরসভা । সরকারি প্রতীক্ষালয়ে একটি নার্সিংহোমের রমরমা বাজার চলছে । তাই বাধ্য হয়েই হাসপাতালের নোংরা ডাস্টবিনের সামনে রাতের পর রাত কাটাচ্ছেন রোগীর আত্মীয়-স্বজনরা ।
অভিযোগ, প্রতীক্ষালয়ের জন্য বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা সত্ত্বেও কোনও সুরাহা হয়নি । এ'বিষয়ে মহকুমা শাসকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, "আমি বিষয়টা ঠিক জানি না ৷ তবে মানুষ যে ওখানে থাকতে পারছে না সে-বিষয়ে খোঁজখবর নেব ৷ তারপর ব্যবস্থা নেব ।" শয্যাগার বেসরকারি নার্সিংহোমকে ভাড়া দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "এটা পৌরসভার তৎকালীন বিষয় ছিল । বর্তমানে পৌর বোর্ড ভেঙে যাওয়ায় আমি দায়িত্বে আছি । পুরো বিষয়টা নিয়ে আমি ওয়াকিবহাল নই, তবে দ্রুত ব্যবস্থা নেব ।" বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসক রেশমি কমলের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, "পুরো বিষয়টি সম্পর্কে আমি ঠিক জানি না । তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখব এবং ব্যবস্থা নেব । তাছাড়াও, শীঘ্রই আমরা মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে একটি প্রতীক্ষালয় বানিয়ে দেব । তার ব্যবস্থাও চলছে ।"