ETV Bharat / state

মুগ-জিলিপি খান মন ভরে, যেতে হবে কেশপুরে

পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরের রসালো মুগের জিলিপি। 40-45 বছর ধরে আজও ক্রেতাদের আকর্ষণের তালিকায়। লকডাউনের প্রভাব পড়েছে অনেক ব্যবসাতেই । তবে বিক্রি অব্যাহত এই জিলিপির।

কেশপুরের মুগের জিলিপি
কেশপুরের মুগের জিলিপি
author img

By

Published : Jun 16, 2020, 9:35 PM IST

কেশপুর, 16 জুন : ময়দার জিলিপি কিংবা ছানার জিলিপির সঙ্গে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। কিন্তু, কলকাতায় বসে কোনও দিন খেয়েছেন মুগের ডালের জিলিপি? হ্যাঁ, মুগের ডালের জিলিপি। সুস্বাদ এই মিষ্টিটি পাওয়া যায় পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে। সম্প্রতি লকডাউনের জেরে বন্ধ ছিল মিষ্টির দোকানগুলি। ফলে এই জিলিপির স্বাদ বেশ কিছুদিন পাননি কেশপুরবাসী। তবে লকডাউন উঠতেই গৃহবন্দীর একঘেয়েমি কাটাতে ফের মুগের জিলিপিতে মজেছেন কেশপুরবাসী।

বিভিন্ন জায়গার মিষ্টি বিভিন্নভাবে প্রসিদ্ধ। কলকাতার রসগোল্লা, ক্ষীরপায়েস, জয়নগরের মোয়া, বীরভূমের মোরব্বা, বর্ধমানের সীতাভোগ-মিহিদানা অথবা কেশপুরের মুগের জিলিপি। এক সময় বামেদের লালদুর্গ হিসাবে পরিচিত ছিল এই কেশপুর। কেশপুর সাক্ষী রয়েছে বহু রাজনৈতিক হিংসার। তবে এই জায়গার একটি অন্য রূপও রয়েছে। যা কেশপুরের ঐতিহ্যের শোভা বাড়িয়ে তুলছে আজও। যার স্বাদ পেতে আজও মানুষ ছুটে যান সেখানে। সেটি হল কেশপুরের বিখ্যাত মুগের ডালের জিলিপি।

এই মিষ্টির উৎপত্তি নিয়ে জেলায় একাধিক মত প্রচলিত আছে। কেউ বলেন, এক সময় নাড়াজোল জমিদারি অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে মুগ কলাই-এর চাষ হত। পরবর্তীকালে নাড়াজোল রাজবাড়ির হাত ধরে এই মিষ্টির উৎপত্তি। আবার কেউ কেউ বলেন, পাঁশকুড়ার নিকটবর্তী হাউরের পুলিনবিহারী ভৌমিক নামে এক ব্যক্তি সর্বপ্রথম এই মিষ্টি প্রস্তুত করেন। পরবর্তীকালে তাঁর উত্তরসূরি কিশোরী রঞ্জন পাল, কালীপদ প্রামাণিক, বাসুদেব মণ্ডল, সুকদেব সরকার, সুধীরকুমারের হাত ধরে এই মিষ্টি জেলা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছে।

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কীভাবে বানানো হয় মুগের জিলিপি। প্রথমে মুগডাল ও বিউলি অথবা কলাই ডাল- এই দুটি ডালকে পরিমাণমতো নিয়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রাখা হয়। এরপর এই মুগ ও বিউলির ডাল ভালো করে বেঁটে 15 মিনিট ধরে ফেটিয়ে নিতে হবে। ডালের এই মিশ্রণটিকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় 'খামি'। এই খামিটি এমন হতে হবে যে, জলে দিলে তা ভেসে ওঠে। এরপর মিশ্রণটিতে পরিমাণমতো লবণ জল ও এলাচের গুঁড়ো দিয়ে পুনরায় ভালো করে ফেটিয়ে নিতে হবে । স্বাদ ও গন্ধের বৈচিত্র আনতে মিশ্রণটিকে একটি মাটির মালসায় রেখে কাপড় দিয়ে ঢেকে সারারাত খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়। অন্যদিকে অপর একটি পাত্রে পরিমাণমতো জল, চিনি, এলাচ এবং কেশর মিশিয়ে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে তৈরি করা হয় জিলিপির রস। এরপর কড়াইয়ে তেল গরম করে ছানতার সাহায্যে ওই মিশ্রণটিকে পরিমাণমতো ঘি ও তেলের সহযোগে ভেজে নেওয়া হয়। এরপর তেলের কড়া থেকে গরম গরম জিলিপি তুলে তা রসের কড়াইতে ডুবিয়ে রাখা হয় কিছুক্ষণের জন্য। এই ভাবেই তৈরি হয় সুস্বাদু মচমচে স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় জিভে জল আনা মুগের জিলিপি। অনেকে আবার স্বাদ আনতে মৌরি বা জিরে গুঁড়ো মেশান। বেলা বারোটা বাজলেই শুরু হয় গরম গরম মুগের জিলিপি ভাজা। এরপরই লোকেরা মুগের জিলিপি খেতে ভিড় জমান দোকানে। বর্তমানে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর, ঘাটাল, মুগবাসান, গড়বেতা, চন্দ্রকোনা, কেশিয়ারি, দাঁতন, খড়গপুর ও মেদিনীপুর শহর মিলিয়ে প্রায় ৪০টি মিষ্টির দোকানে এই জিলিপি পাওয়া যায়। তবে শুধুমাত্র শীতের মরশুমেই। কারণ শীতকালে মুগ ডালের ফলন হয়। ফলে সেই সময়ই প্রধানত দোকানিরা এই জিলিপি বানান। আর সারা বছর এই জিলিপি পাওয়া যায় শুধুমাত্র কেশপুর বাজারের দে মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে। তারা পূর্বপুরুষ থেকে মুগের জিলিপি সারা বছর বিক্রি করে চলেছে কেশপুরে। বর্তমানে মুগের জিলিপির চাহিদা তুঙ্গে। বেলা বারোটা বাজলেই শুরু হয় এই মুগের জিলিপি ভাজা এবং সেই ভাজার গন্ধে দোকানে ভিড় জমান জিলিপি প্রেমীরা। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত চলে মুগের জিলিপির বিকিকিনি ।

কেশপুরের মুগের জিলিপি
কেশপুরের মুগের জিলিপি

দে মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মালিক বুদ্ধদেব দে জানিয়েছেন, দীর্ঘ 40-45 বছর ধরে তাঁরা এই জিলিপি বানিয়ে আসছেন। একসময় এই জিলিপি বিক্রি হত 50 পয়সা দামে । বর্তমানে এটির দাম 5 টাকা। এই রসে ভরা মচমচে জিলিপির স্বাদ নিতে শুধুমাত্র কেশপুরবাসীই নয়, জেলার অন্যান্য জায়গা থেকেও বহু মানুষ ছুটে আসেন দে মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে। একসময় এই মুগের জিলিপি বাম দুর্গ কেশপুরের বামনেতাদের খুবই প্রিয় ছিল। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কেশপুরে জনসভা করতে গিয়েও এই জিলিপি চেখে দেখেন এবং এই জিলিপি তাঁদের জন্য কলকাতায় ডেলিভারিও যেত।

দে পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের বুদ্ধদেব দে বলেন, "এই মুগের জিলিপি তৈরির বিভিন্ন প্রণালী রয়েছে আমাদের কাছে। আমরা মুগ ও কলাই দিয়ে এই জিলিপি তৈরি করি। আগে পাথরের সিলে বাঁটা হত, এখন মেশিনে বাঁটা হয়। এই কেশপুর চত্বরে আমরা একমাত্র ব্যবসায়ী যারা সারা বছর মুগের জিলিপি বিক্রি করে থাকি। এর গন্ধ ও স্বাদ গ্রহণের জন্য ছুটে আসেন বহু মানুষ।"

এই বিষয়ে মিষ্টি ব্যবসায়ী শ্যাম সুন্দর দে বলেন, দীর্ঘ 40-45 বছর ধরে বানিয়ে আসছি এই মুগের জিলিপি। এখনও একই স্বাদ সঙ্গে গন্ধের বৈচিত্র রয়েছে। স্বাদে আমরা কোনও পরিবর্তন করিনি। এক সময় এটি 50 পয়সায় বিক্রি হত। এখন জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় তা হয়েছে 5 টাকা।" দোকানে জিলিপি খেতে আসা এক ক্রেতা জানিয়েছেন, বহু বছর ধরে এই জিলিপি খেয়ে আসছি। জিলিপির স্বাদে কোনও পরিবর্তন হয়নি। আরেক ক্রেতা বলেন, এই সুস্বাদ জিলিপির টানে বেলা বারোটা বাজতেই দোকানে এসে হাজির হই।

কেশপুর, 16 জুন : ময়দার জিলিপি কিংবা ছানার জিলিপির সঙ্গে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। কিন্তু, কলকাতায় বসে কোনও দিন খেয়েছেন মুগের ডালের জিলিপি? হ্যাঁ, মুগের ডালের জিলিপি। সুস্বাদ এই মিষ্টিটি পাওয়া যায় পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে। সম্প্রতি লকডাউনের জেরে বন্ধ ছিল মিষ্টির দোকানগুলি। ফলে এই জিলিপির স্বাদ বেশ কিছুদিন পাননি কেশপুরবাসী। তবে লকডাউন উঠতেই গৃহবন্দীর একঘেয়েমি কাটাতে ফের মুগের জিলিপিতে মজেছেন কেশপুরবাসী।

বিভিন্ন জায়গার মিষ্টি বিভিন্নভাবে প্রসিদ্ধ। কলকাতার রসগোল্লা, ক্ষীরপায়েস, জয়নগরের মোয়া, বীরভূমের মোরব্বা, বর্ধমানের সীতাভোগ-মিহিদানা অথবা কেশপুরের মুগের জিলিপি। এক সময় বামেদের লালদুর্গ হিসাবে পরিচিত ছিল এই কেশপুর। কেশপুর সাক্ষী রয়েছে বহু রাজনৈতিক হিংসার। তবে এই জায়গার একটি অন্য রূপও রয়েছে। যা কেশপুরের ঐতিহ্যের শোভা বাড়িয়ে তুলছে আজও। যার স্বাদ পেতে আজও মানুষ ছুটে যান সেখানে। সেটি হল কেশপুরের বিখ্যাত মুগের ডালের জিলিপি।

এই মিষ্টির উৎপত্তি নিয়ে জেলায় একাধিক মত প্রচলিত আছে। কেউ বলেন, এক সময় নাড়াজোল জমিদারি অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে মুগ কলাই-এর চাষ হত। পরবর্তীকালে নাড়াজোল রাজবাড়ির হাত ধরে এই মিষ্টির উৎপত্তি। আবার কেউ কেউ বলেন, পাঁশকুড়ার নিকটবর্তী হাউরের পুলিনবিহারী ভৌমিক নামে এক ব্যক্তি সর্বপ্রথম এই মিষ্টি প্রস্তুত করেন। পরবর্তীকালে তাঁর উত্তরসূরি কিশোরী রঞ্জন পাল, কালীপদ প্রামাণিক, বাসুদেব মণ্ডল, সুকদেব সরকার, সুধীরকুমারের হাত ধরে এই মিষ্টি জেলা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছে।

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কীভাবে বানানো হয় মুগের জিলিপি। প্রথমে মুগডাল ও বিউলি অথবা কলাই ডাল- এই দুটি ডালকে পরিমাণমতো নিয়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রাখা হয়। এরপর এই মুগ ও বিউলির ডাল ভালো করে বেঁটে 15 মিনিট ধরে ফেটিয়ে নিতে হবে। ডালের এই মিশ্রণটিকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় 'খামি'। এই খামিটি এমন হতে হবে যে, জলে দিলে তা ভেসে ওঠে। এরপর মিশ্রণটিতে পরিমাণমতো লবণ জল ও এলাচের গুঁড়ো দিয়ে পুনরায় ভালো করে ফেটিয়ে নিতে হবে । স্বাদ ও গন্ধের বৈচিত্র আনতে মিশ্রণটিকে একটি মাটির মালসায় রেখে কাপড় দিয়ে ঢেকে সারারাত খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়। অন্যদিকে অপর একটি পাত্রে পরিমাণমতো জল, চিনি, এলাচ এবং কেশর মিশিয়ে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে তৈরি করা হয় জিলিপির রস। এরপর কড়াইয়ে তেল গরম করে ছানতার সাহায্যে ওই মিশ্রণটিকে পরিমাণমতো ঘি ও তেলের সহযোগে ভেজে নেওয়া হয়। এরপর তেলের কড়া থেকে গরম গরম জিলিপি তুলে তা রসের কড়াইতে ডুবিয়ে রাখা হয় কিছুক্ষণের জন্য। এই ভাবেই তৈরি হয় সুস্বাদু মচমচে স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় জিভে জল আনা মুগের জিলিপি। অনেকে আবার স্বাদ আনতে মৌরি বা জিরে গুঁড়ো মেশান। বেলা বারোটা বাজলেই শুরু হয় গরম গরম মুগের জিলিপি ভাজা। এরপরই লোকেরা মুগের জিলিপি খেতে ভিড় জমান দোকানে। বর্তমানে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর, ঘাটাল, মুগবাসান, গড়বেতা, চন্দ্রকোনা, কেশিয়ারি, দাঁতন, খড়গপুর ও মেদিনীপুর শহর মিলিয়ে প্রায় ৪০টি মিষ্টির দোকানে এই জিলিপি পাওয়া যায়। তবে শুধুমাত্র শীতের মরশুমেই। কারণ শীতকালে মুগ ডালের ফলন হয়। ফলে সেই সময়ই প্রধানত দোকানিরা এই জিলিপি বানান। আর সারা বছর এই জিলিপি পাওয়া যায় শুধুমাত্র কেশপুর বাজারের দে মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে। তারা পূর্বপুরুষ থেকে মুগের জিলিপি সারা বছর বিক্রি করে চলেছে কেশপুরে। বর্তমানে মুগের জিলিপির চাহিদা তুঙ্গে। বেলা বারোটা বাজলেই শুরু হয় এই মুগের জিলিপি ভাজা এবং সেই ভাজার গন্ধে দোকানে ভিড় জমান জিলিপি প্রেমীরা। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত চলে মুগের জিলিপির বিকিকিনি ।

কেশপুরের মুগের জিলিপি
কেশপুরের মুগের জিলিপি

দে মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মালিক বুদ্ধদেব দে জানিয়েছেন, দীর্ঘ 40-45 বছর ধরে তাঁরা এই জিলিপি বানিয়ে আসছেন। একসময় এই জিলিপি বিক্রি হত 50 পয়সা দামে । বর্তমানে এটির দাম 5 টাকা। এই রসে ভরা মচমচে জিলিপির স্বাদ নিতে শুধুমাত্র কেশপুরবাসীই নয়, জেলার অন্যান্য জায়গা থেকেও বহু মানুষ ছুটে আসেন দে মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে। একসময় এই মুগের জিলিপি বাম দুর্গ কেশপুরের বামনেতাদের খুবই প্রিয় ছিল। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কেশপুরে জনসভা করতে গিয়েও এই জিলিপি চেখে দেখেন এবং এই জিলিপি তাঁদের জন্য কলকাতায় ডেলিভারিও যেত।

দে পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের বুদ্ধদেব দে বলেন, "এই মুগের জিলিপি তৈরির বিভিন্ন প্রণালী রয়েছে আমাদের কাছে। আমরা মুগ ও কলাই দিয়ে এই জিলিপি তৈরি করি। আগে পাথরের সিলে বাঁটা হত, এখন মেশিনে বাঁটা হয়। এই কেশপুর চত্বরে আমরা একমাত্র ব্যবসায়ী যারা সারা বছর মুগের জিলিপি বিক্রি করে থাকি। এর গন্ধ ও স্বাদ গ্রহণের জন্য ছুটে আসেন বহু মানুষ।"

এই বিষয়ে মিষ্টি ব্যবসায়ী শ্যাম সুন্দর দে বলেন, দীর্ঘ 40-45 বছর ধরে বানিয়ে আসছি এই মুগের জিলিপি। এখনও একই স্বাদ সঙ্গে গন্ধের বৈচিত্র রয়েছে। স্বাদে আমরা কোনও পরিবর্তন করিনি। এক সময় এটি 50 পয়সায় বিক্রি হত। এখন জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় তা হয়েছে 5 টাকা।" দোকানে জিলিপি খেতে আসা এক ক্রেতা জানিয়েছেন, বহু বছর ধরে এই জিলিপি খেয়ে আসছি। জিলিপির স্বাদে কোনও পরিবর্তন হয়নি। আরেক ক্রেতা বলেন, এই সুস্বাদ জিলিপির টানে বেলা বারোটা বাজতেই দোকানে এসে হাজির হই।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.