চন্দ্রকোনা, 28 জুলাই : পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল পৌরসভার অস্থায়ী কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ৷ খবর সংগ্রহে গিয়ে বাধা পেলেন সাংবাদিকরা ৷ পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা 2 ব্লকের অন্তর্গত চন্দ্রকোনা পৌরসভার ঘটনা ।
অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য রয়েছে রাজ্য সরকারের সামাজিক সুরক্ষা যোজনার ভবিষ্যনিধি প্রকল্প ৷ একটা নির্দিষ্ট সময় অন্তর এই প্রকল্পের বই পুনর্নবীকরণ করতে হয় উপভোক্তাদের ৷ মঙ্গলবার সেই মতো কিছুজন উপভোক্তা চন্দ্রকোনা পৌরসভায় যান প্রকল্পের বই পুনর্নবীকরণ করাতে ৷ অভিযোগ, এই কাজ করতে তাঁদের কাছে টাকা চান পৌরসভার কর্মচারীরা ৷ খবর পেয়ে সংবাদমাধ্যম গিয়ে পৌঁছালে মোবাইল কেড়ে নিয়ে কাজে বাধা দেন অভিযুক্ত এক কর্মী ৷
চন্দ্রকোনা 2 ব্লকের শ্রমদফতরের পক্ষ থেকে চন্দ্রকোনা পৌরসভা এলাকার উপভোক্তাদের জন্য পৌরসভায় অস্থায়ীভাবে কয়েকজন কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা যোজনার এই প্রকল্পের কাজ দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় । যদিও চন্দ্রকোনা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের দাবি, এই বিষয়ে পৌরসভার কোনও ভূমিকা নেই ৷ ব্লকের আবেদনের ভিত্তিতে পৌরসভায় বসে কাজ পরিচালনার জন্য ওই কর্মীদের বসার ব্যবস্থাটুকু করে দেওয়া হয় ৷
আরও পড়ুন : খুনের মামলায় জেলবন্দি আনিসুরের ঠোঁটে সিগারেট, কানে ব্লু টুথ !
রাজ্য সরকারের সামাজিক সুরক্ষা যোজনার ভবিষ্যনিধি প্রকল্পের বেশ কিছু উপভোক্তার অভিযোগ, পৌরসভায় থাকা শ্রমদফতরের এক মহিলা কর্মী স্নিগ্ধা দাস তাদের থেকে অনৈতিকভাবে বই পুনর্নবীকরণ করার জন্য টাকা চান ৷ কয়েকজন তা দিতে অস্বীকার করায় তাদের বই ছুড়ে ফেল দিয়ে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন ওই কর্মী ৷
যদিও এই প্রকল্পের জন্য বর্তমানে উপভোক্তাদের কোনও টাকা দিতে হয় না ৷ পুরো টাকাই সরকারের তরফে জমা করা হয় এবং এককালীন এই প্রকল্প থেকে অসংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিকরা ভবিষ্যনিধি প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে থাকেন ।
উপভোক্তাদের থেকে খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট অস্থায়ী কর্মী স্নিগ্ধা দাসের কাছে প্রতিক্রিয়া চাইতে গেলে প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও পরবর্তী সময়ে ওই মহিলা কর্মী এক সাংবাদিককে ক্যামেরা বন্ধ করতে বলেন এবং তা না করায় রীতিমতো চেয়ার ছেড়ে উঠে মোবাইল ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন । কোনও ক্রমে ক্যামেরা উদ্ধার করে পুনরায় তাঁর প্রতিক্রিয়া নিতে গেলে মুখে কুলুপ আঁটেন শ্রমদফতরের ওই অস্থায়ী মহিলা কর্মী ।
আরও পড়ুন : ভুয়ো পুলিশের পরিচয় দিয়ে 48 লাখ টাকার জালিয়াতি, শ্রীঘরে সিভিক ভলান্টিয়ার
এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই ব্লকের শ্রমদফতরের পাশাপাশি বিডিওকেও লিখিতভাবে অভিযোগ জানান উপভোক্তারা । এ ঘটনায় বিডিও অমিত ঘোষ জানান, একটা লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে ৷ সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে । এছাড়াও সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে ওই মহিলা কর্মীদের দুর্ব্যবহারের ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন ৷
এই ঘটনায় ঘাটালের শ্রমদফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট লেবার কমিশনার গোবর্ধন দাস বলেন, "এই প্রকল্পের জন্য কোনও টাকা লাগে না ৷ এমনকি বই পুনর্নবীকরণের জন্যও না । যদি এমনটা হয়ে থাকে আমরা ব্লকের আধিকারিকের থেকে রিপোর্ট চেয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করব ।"