চন্দ্রকোনা, 30 এপ্রিল: বাড়িতে আসবে পাত্রপক্ষ ৷ আর তারপরে রাত পোহালেই বিয়ে ৷ তাও আবার নাবালিকার ৷ বিয়ে করতেই হবে ৷ তা না-হলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে হবে । অভিযোগ, এভাবেই মেয়েকে চাপ দিয়েছিলেন বাবা-মা ৷ তাই কোনও উপায় না-দেখে সন্ধ্যেবেলা সবার নজর এড়িয়ে বিডিও অফিসে হাজির হল সে ৷ বিয়ে আটকাল একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ৷ শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা 2 নম্বর ব্লকে ৷
চন্দ্রকোনার বাসিন্দা ওই কিশোরীর বাবা-মা তার বিয়ের জন্য পাত্র ঠিক করে ফেলেছিলেন ৷ এমনকি সে এ বিষয়ে কিছু জানতও না ৷ একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে কয়েকদিন আগে পাত্রপক্ষ বাড়িতে এসে দেখে যায় ৷ তখনই সে জানতে পারে, তার অমতে বাবা-মা বিয়ে ঠিক করেছে ৷ মেধাবী ওই ছাত্রী বিয়েতে তার আপত্তির কথা বাবা-মাকে জানিয়ে দেয় ৷ তার স্পষ্ট বক্তব্য ছিল, সে এখন পড়াশোনা করতে চায় ৷ কিন্তু অভিযোগ বাবা-মা তার উপরে চাপ তৈরি করতে থাকে ৷ এমনকি হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে ৷ তাকে বলা হয়, বিয়ে না-করলে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হবে ৷
কোনও উপায় না-দেখে বিয়ের আগে শনিবার সন্ধ্যেয় বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় ওই নাবালিকা ৷ বাস ধরে 10 কিলোমিটার দূরে চন্দ্রকোনার বিডিও অফিসে হাজির হয় সে ৷ সেখানে বিডিও-কে সব ঘটনা জানায় ওই নাবালিকা ছাত্রী ৷ লিখিতভাবে নিজের অভিযোগ বিডিও-র কাছে জানায় সে ৷ লিখিত অভিযোগ পেয়ে চন্দ্রকোনা 2 নম্বর ব্লকের বিডিও অমিত ঘোষ পুলিশকে খবর দেন ৷ এরপর পুলিশ রাতেই ওই নাবালিকার বাবা-মাকে চন্দ্রকোনা থানায় নিয়ে যায় ৷ সেখানে তাঁদের দিয়ে মুচলেকা লেখানো হয় ৷ সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে ৷ মেয়ে সাবালিক না হওয়া পর্যন্ত এবং তার মতের বিরুদ্ধে বিয়ে দেওয়া যাবে না ৷
আরও পড়ুন: নাবালিকার বিয়ে রুখল পুলিশ, ছাঁদনাতলা থেকে চম্পট বরের ; আটক পুরোহিত
পুরো ঘটনাটি নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন চন্দ্রকোনা 2 নম্বর ব্লকের বিডিও অমিত ঘোষ ৷ তিনি বলেন, ‘‘সরকারের একাধিক সুযোগ-সুবিধা ও প্রশাসনের প্রচার সত্ত্বেও মানুষ সচেতন নয় ৷ গ্রামে-গঞ্জে সেই বার্তা পৌঁছানো যাচ্ছে না ৷ ফলে নাবালিকাদের বিয়ে রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না ৷’’