গোয়ালতোড়, 1 সেপ্টেম্বর: নয় নয় করে 23 দিন পার, এখনও নিখোঁজ নাবালিকা মেয়ে ৷ আর নবম শ্রেণির পড়ুয়া সেই নাবালিকাকে ফিরে পেতে প্রশাসনের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন মেয়েটির বাবা-মা । এরকমই ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গোয়ালতোড়ের সাহেবডাঙা এলাকায় । জানা গিয়েছে, 23 দিন আগে গত 10 অগস্ট স্কুলে ফর্ম জমা দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয় ওই ছাত্রী ৷ এরপর নিখোঁজ হয়ে যায় সে । বহু জায়গায় খোঁজাখুঁজি করার পরেও মেয়ের সন্ধান না পেয়ে অবশেষে ওই স্কুল ছাত্রীর বাবা-মা দ্বারস্থ হন গোয়ালতোড় থানায় ।
কিন্তু অভিযোগ দায়েরের দু-চারদিন পরেও পুলিশ কোনও খোঁজ দিতে না পারায় নাবালিকার মা-বাবার তরফ আবেদন করা হয় জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে । কিন্তু এরপরেও মেয়ের সন্ধান পাননি ওই দম্পতি ৷ বারবার থানায় গিয়ে হাজিরা দেন তাঁরা এবং মেয়েকে খুঁজে দেওয়ার কাতর আবেদন জানান ৷ কিন্তু 23 দিন পেরিয়ে গেলেও মেয়ের খোঁজ না পেয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা ৷ একটাই আবেদন তাঁদের, মেয়েকে ফিরিয়ে দিক প্রশাসন ।
এই বিষয়ে নিখোঁজ নাবালিকার মা তাপসী মণ্ডল বলেন, "মেয়ে আমার 15 বছরের, নবম শ্রেণিতে পড়ে । স্কুলে ফর্ম ফিলাপের জন্য বেরিয়েছিল তারপর আর বাড়ি ফিরেনি । এরপর মেয়ের আর খোঁজ খবর না পেয়ে আমরা থানায় অভিযোগ করেছি । সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি চেষ্টা করেছি তারপরও মেয়েকে পাওয়া যায়নি । থানায় গেলে উলটে পুলিশ অফিসাররা বকাঝকা করে তাড়িয়ে দেন ।" যদিও নিখোঁজ ওই মেয়েটির মেয়ের মায়ের বক্তব্য, এর আগেও তাঁর নাবালিকা মেয়ে গ্রামেরই এক ছেলের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিল । কিন্তু তারপরই তাকে উদ্ধার করে পুলিশ । কিন্তু এবারে আর তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না ৷ গত 23 দিনে মেয়ের কোনও ফোনও আসেনি মা-বাবার কাছে ৷ মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে বলে তাঁর আশঙ্কা ৷
আরও পড়ুন: নিজের বাড়িতেই দেহ উদ্ধার অভিনেত্রী অপর্ণার, তদন্তে পুলিশ
এই প্রসঙ্গে মেয়ের বাবা উত্তম মণ্ডল জানান, তাঁদের একমাত্র কন্যা এতদিন ধরে নিখোঁজ । স্থানীয় থানা, জেলা পুলিশ সুপার এবং জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানিয়েও মেয়ের খোঁজ মেলেনি ৷ তাঁর কথায়, "মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না । মেয়ে ভালো আছে না খারাপ আছে? আদৌ বেঁচে আছে কি না তা নিয়েও আমরা চিন্তায় রয়েছি । আমরা চাই অতি তৎপরতার সঙ্গে মেয়েকে খুঁজে দিক প্রশাসন । এরপর তাকে যদি হোমে রাখা হয় আমরা রাজি আছি এবং তাকে যেন পড়াশোনা করানো হয় ।"
যদি এই দিন গোয়ালতোড় থানার তরফে এই কেসের ইনচার্জ এএসআই স্বরূপ মণ্ডল বলেন, "23 দিন কেন 10 মাসও লাগতে পারে । তদন্ত চলছে, লোকেশনও ট্র্যাক করার চেষ্টা চলছে ৷ আগেও এই মেয়ে নিখোঁজ হয়েছিল, তাদের খুঁজে আনা হয় ৷ ওনারা লোক ভালো নয় । আমরা চেষ্টা করছি এর আগে কিছু বলতে পারব না ।" যদিও গোয়ালতোড়ের আইসি পলাশ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, "খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি দেখছি আমরা ।" অন্যদিক, জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকারকে এবিষয়ে জানানো হলে তিনি বলেন, "আমরা অতি তৎপরতার সঙ্গে বিষয়টি দেখছি । খোঁজখবর নিচ্ছি এবং ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ।"