মেদিনীপুর, 10 সেপ্টেম্বর: ডেঙ্গি রুখতে এবার তৎপর হল মেদিনীপুর পৌরসভা । থানায় এফআইআর করা হল প্রায় 18টি পুকুর মালিকের বিরুদ্ধে । এরই সঙ্গে ড্রোন উড়িয়ে ডেঙ্গি রোধ করতে হবে বলে জানালেন মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া । গোটা রাজ্যের পাশাপাশি মেদিনীপুর পৌরসভায় ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত । প্রতিদিনই হু হু করে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৷ সঙ্গে জ্বর ও আনুসাঙ্গিক সমস্যায় ভুগছেন মেদিনীপুরবাসী । তাই ডেঙ্গি রোধে এবার কড়া ভূমিকা নিতে তড়িঘড়ি বৈঠকে বসলেন মেদিনীপুরের বিধায়ক তথা অভিনেত্রী জুন মালিয়া-সহ জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকরা । রবিবার সার্কিট হাউসে এই বৈঠক হয় ৷ যেখানে উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান-সহ ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ব্লকের আধিকারিকেরাও ।
মূলত এদিনের বৈঠকে ডেঙ্গি রোধ করতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, কী কী করণীয়, কোন কোন ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে, সেই বিষয়েও আলোচনা করেন জুন মালিয়া । বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, "ডেঙ্গি রোধ করতে আমরা বদ্ধপরিকর । পৌরসভা থেকে মেশিনগান, ধোঁয়া, লার্ভানাশক-সহ কীটনাশক ছড়ানো হচ্ছে ৷ এরই সঙ্গে ওয়ার্ড-এর মানুষদেরকে মশারি দেওয়ার কাজ চলছে আমাদের । বারে বারে নালা পরিষ্কারের জন্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে দল পাঠিয়ে কাজ চলছে । আমরা প্রত্যন্ত এলাকার ডেঙ্গি রোধ করার জন্য ইতিমধ্যেই ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার করার কথা ভাবছি । এই নিয়ে পুলিশ আধিকারিদের সঙ্গে আমাদের এক প্রস্থ আলোচনাও হয়েছে ।"
আরও পড়ুন: ফাইবারের মশা তৈরি করে ডেঙ্গি সচেতনতা বৃদ্ধিতে নয়া উদ্যোগ প্রশাসনের
পাশাপাশি তিনি জানান, জল অপরিষ্কার রাখার জন্য 18টি পুকুর মালিকের বিরুদ্ধে মেদিনীপুর পৌরসভার থেকে ইতিমধ্যে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে । প্রশাসন বাকি পুকুর মালিকদের সঙ্গেও কথা বলছে । তাঁর কথায়, পকুরে নোংরা জমা জল রাখলে এবং দীর্ঘদিন পুকুরের আবর্জনা পরিষ্কার না করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । এ দিন বড় বড় ফ্ল্যাট মালিকদের নিয়েও অভিযোগ করেন বিধায়ক ৷ তিনি বলেন, "বড় বড় অ্যাপার্টমেন্ট এবং ফ্ল্যাট মালিকরাও অনেকেই ডোবা বানিয়ে জল রেখেছে ৷ যার থেকে ডেঙ্গির মশার জন্ম নিচ্ছে । তাদের বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা নেওয়ার এক প্রস্থ ভাবনাচিন্তা নিচ্ছি । তাদের বৈঠকে ডেকে সচেতনার পাশাপাশি কড়া নির্দেশিকা পাঠাব ।"
তবে এ দিন জুন মালিয়া জানান যে একই সঙ্গে মানুষকে সজাগ ও সচেতন হতে হবে । কারণ একা পৌরসভা, স্বাস্থ্য দফর বা প্রশাসন কোনওভাবেই কোন কিছুকে অতি সহজে রোধ করতে পারবে না । তার জন্য এলাকার মানুষকেও সজাগ সতর্ক হতে হবে । যার ডেঙ্গি হয়েছে তাকে মশারি টাঙিয়ে শুতে হবে । যাতে তার থেকে অন্য কারোর ছড়িয়ে না পড়ে । জ্বর হলে অবহেলা করা যাবে না । ওষুধ খেতে হবে এবং ঘরে কোনওভাবেই জল জমতে দেওয়া যাবে না । বিশেষ করে ফুলের টব,ডাব্বা বা পুরনো ভাঙা কলসি ও মাটির হাঁড়ি থাকলে তাতে জল জমতে দেওয়া যাবে না কোনওভাবেই । তিনি বলেন," আমরা চাই পুরোপুরি ডেঙ্গি থেকে মুক্তি পাক মেদিনীপুর ।"
আরও পড়ুন: ফের ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু কলকাতায়, এবার প্রাণ গেল পুলিশকর্মীর
ৃমেদিনীপুর জেলায় ইতিমধ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় 619 । যার মধ্যে সক্রিয় ডেঙ্গি রোগী রয়েছেন 40 জন । গতকাল রাজ্য কমিশন থেকে লোক এসে এই ডেঙ্গি নিয়ে আলোচনা করেন ৷ কথা বলে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন । এ দিন স্বাস্থ্য আধিকারিকও ডেঙ্গির প্রকোপ নিয়ে কড়া বার্তা দেন এই বৈঠকে ।