ক্ষীরপাই, 11 নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষীরপাই পৌরসভার 1 নম্বর ওয়ার্ডের চিরকুনডাঙা এলাকায় রয়েছেন কংক্রিটের তৈরি 45 ফুট উচ্চতার বিশালাকার কালী প্রতিমা ৷ যা ভক্তদের কাছে 'বড়মা' নামেই পরিচিত। এবছর বড়মায়ের পুজো 21 বছরে পড়তে চলেছে। শুধু চন্দ্রকোনা নয়, জেলা ছাড়িয়ে ভিন জেলার মানুষও এই কালীমাকে বড়মা নামেই জানে। ক্ষীরপাইয়ের বড়মার পুজোর অপেক্ষায় থাকে অগণিত মানুষ। পুজোর সময় স্থানীয় আশপাশের মানুষ ছাড়াও জেলা ও ভিন জেলার দূর-দূরান্তের মানুষও ভিড় জমায়।
শ্মশানকালী হলেও এই পুজোয় বলি হয় না। সমস্ত রীতি মেনেই এখানে পুজো হয়। পুজোর পরের দিন হাজার হাজার মানুষ আসে মায়ের খিচুড়ি প্রসাদ খাওয়ার জন্য। 20 বছর আগে শ্মশানের উপর বড়মায়ের মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন ওই ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা শুদ্ধদেব রায়। সূত্র অনুযায়ী জানা যায়, কোনও একসময় মাটির চালায় প্রতিমা তৈরি করে পুজোর শুরু করেন প্রতিষ্ঠাতা শুদ্ধদেব রায়। যা তখন ছোটোমা নামে জানত সবাই। তবে বন্যাকবলিত এলাকা হওয়ায় একবার ছোটো মায়ের মাটির চালা ডুবে গিয়ে মূর্তি ভেঙে যায়।
যদিও মায়ের একটি ভাঙা হাত রয়ে গিয়েছিল যা আজও ছোটো মায়ের নতুন মূর্তির পাশে রাখা রয়েছে। পরে ছোটো মায়ের পাশেই 45 ফুট উচ্চতার কংক্রিটের মায়ের মূর্তি নির্মাণ করে মন্দির স্থাপন হয়। যা জেলা কেন রাজ্যও এত বড়মাপের কালী প্রতিমা নেই বলেই মত প্রতিষ্ঠাতা থেকে অগণিত ভক্তদেরও। অমবস্যা তিথি ছাড়া বড়মায়ের মন্দিরে থাকেন না কোনও পূজারী ৷ অন্যসময় ভক্তদের হাতেই ছেড়ে দেওয়া হয় মন্দিরের পুজো আর্চনার কাজ। যে যার নিজের মতো করে পুজো দেন বড়মাকে।
আগত ভক্তদের নিষেধ আছে কোনও রুপ দক্ষিণা যেন না-দেওয়া হয় ৷ কোনও প্রণামী বক্সের ঠাঁই নেই মন্দিরে। কোনও রুপ আর্থিক সাহায্য বা দক্ষিণা হিসাবে কোনও পয়সা দেওয়া যাবে না, তা বিজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে মন্দির চত্বরে ৷ বড় মায়ের এক হাতে রয়েছে পৃথিবী আর এক হাতে রয়েছে সাদা পায়রা। এছাড়াও বাকি দুই হাতে কাতান ও মুণ্ডচ্ছেদ। মায়ের রুদ্র রুপের পাশাপাশি, ধরিত্রীর রক্ষাকর্তা ও শান্তির বাহক হিসেবে একহাতে পৃথিবী ও অপর হাতে পায়রা রয়েছে বলে জানা যায় ৷
আরও পড়ুন: