মেদিনীপুর, 21 জানুয়ারি : হকারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার । রেললাইনের ধারে একটি গাছে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় । মৃতের নাম প্রেমচাঁদ সাউ । পরিবারের বক্তব্য, লোকাল ট্রেন চালু হলেও তাতে হকারি করার সুবিধা পাচ্ছেন না স্থানীয় হকাররা । তাই আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন ওই হকার ।
সকাল থেকে সন্ধ্যা । লোকাল ট্রেনের এক কামরা থেকে অন্য কামরায় হকারি করেই জীবনযাপণ করতেন মেদিনীপুরের রাঙামাটি ঝরণাডাঙ্গার বাসিন্দা প্রেমচাঁদ সাউ ৷ কিন্তু কাল হল কোরোনা ৷ লকডাউনের জন্য অন্য সব পরিষেবার মতো বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল ৷ একই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় প্রেমচাঁদবাবুর জীবিকাটুকু ৷ দীর্ঘদিন ধরে অল্প অল্প করে জমানো টাকায় সংসার চালাচ্ছিলেন ৷ লকডাউন ওঠার পর ট্রেন চলাচল শুরু হলে আশার আলো দেখেছিলেন ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত ট্রেনে হকারি করার অনুমতি দেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ ৷
দীর্ঘ প্রায় আটমাস লোকাল ট্রেন চলাচল না করায় হকারি করতে পারেননি প্রেমচাঁদবাবুর মতো অসংখ্য হকার ৷ লোকাল ট্রেন টালু হলেও হকারি করতে পারছেন না । এই অবস্থায় চরম অসন্তোষে হকাররা । তারমধ্যেই দীর্ঘদিনের পেশা ছেড়ে অন্য কাজ ও অল্প কিছু জমানো টাকা দিয়েই সংসার চালাচ্ছিলেন প্রেমচাঁদবাবু ৷ কিন্তু সম্প্রতি বেশ কিছু সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি ৷ এরই মধ্যে ট্রেনে ফের হকারি শুরু করতে গেলে রেল পুলিশ এবং রেল কর্তৃপক্ষের হয়রানির শিকার হন তিনি ৷ অভিযোগ, তাতেই বিতৃষ্ণা ও অভাবের তাড়নায় আত্মঘাতী হন তিনি ৷
এবিষয়ে এক হকার নেতা দিলীপ কুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ট্রেন বন্ধ থাকায় আমরা হকারি থেকে বঞ্চিত । এই অবস্থায় আমাদের সংসার চলছিল না ৷ আমরা অন্যান্য কাজের চেষ্টা করছিলাম এবং যা পাচ্ছিলাম তাই করছিলাম । সম্প্রতি রেল পরিষেবা শুরু হয়েছে এবং তাতে আমরা আশার আলো দেখতে পেয়েছিলাম । কিন্তু আমরা হকারি করতে গিয়ে বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হই ৷ সেই অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়েই আত্মহত্যা করল আমাদের এক কর্মী ৷ এই ঘটনায় আমরা উপযুক্ত তদন্তের দাবি জানাচ্ছি ৷’’