মেদিনীপুর, 24 ডিসেম্বর : পক্ষাঘাতে আক্রান্ত বাবা । মা অসুস্থ । অভিযোগ, অসহায় বাবা-মাকে দেখেন না ছেলে সব্যসাচী দাস । তিনি পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার । বাবা-মাকে না দেখলেও অভিযোগ, তিনি প্রতি মাসে বাবার বেতনের টাকা তুলে নেন । এমনকী, বাবার সহকর্মীরা সাহায্য হিসেবে যে চাল-ডাল দেন, সেসবও না কি নিয়ে যান । প্রতিবাদ করলে জোটে মারধর । দেখানো হয় আইনের ভয় । সব্যসাচীর এক বোনও রয়েছে । কিন্তু অভিযোগ, তিনিও খেয়াল রাখেন না বাবা-মার। অমানবিক ঘটনাটি মেদিনীপুরের কোতবাজার এলাকার ।
অসিত দাস পেশায় শিক্ষক । বাড়ি মেদিনীপুরের কোতবাজার এলাকায় । পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে 3 বছর ধরে বাড়িতে পড়ে আছেন । মেদিনীপুর সদর ব্লকের শাওড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন । 2013 সালে প্রতারণার অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয় তাঁকে । তার দু'বছর পর থেকে স্নায়ুর রোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী । অভিযোগ, বাবার এই অসুস্থতার সুযোগ নেয় সব্যসাচী । বাবার হয়ে প্রতিমাসে সে বেতন তুলে নেয় কিন্তু চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি । অসিতবাবু ও তাঁর স্ত্রী মনীষার এই অবস্থা দেখে অন্যান্য শিক্ষকরা মাঝেমধ্যে চাল ,ডাল দিয়ে সাহায্য করেন । রান্নার গ্যাস দিয়ে যান । কিন্তু সেই সমস্ত না কি শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যান সব্যসাচী । সেখানেই স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে তিনি থাকেন ।
অসিতবাবুর সহকর্মীরা আজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সব্যসাচীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন । তাঁরা বলেন, "অন্তত অসুস্থ বাবার চিকিৎসার ব্যবস্থা করুক সব্যসাচী ।" অসিতবাবুর সহকর্মী প্রদীপ মাইতি বলেন , "অসিতবাবুর সঙ্গে আমরা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতা করছি । আমাদের কুড়ি বছরের শিক্ষকতার জীবন । কিন্তু দুর্ঘটনাবশত পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে তিনি শয্যাশায়ী । আমরা বেঙ্গালুরু নিয়ে যাওয়ার জন্য সব্যসাচীর হাতে টাকা তুলে দিয়েছি । কিন্তু সেখানে গেলেও চিকিৎসা না করে ফিরে এসেছে । মাস ফুরোলেই সব্যসাচী বেতনের টাকা তুলে নিয়ে চলে যায় । আমরা বন্ধুর পাশে এসে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি । বিভিন্ন সময়ে আমি এবং আমার সহকর্মীরা চাঁদা তুলে অসিতের বাড়িতে চাল, ডাল, গ্যাস পৌঁছে দিয়ে এসেছি । কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেসব ছেলে নিয়ে চলে যায় । আমরা চেষ্টা করেও সব্যসাচীকে বোঝাতে পারছি না । আমরা আর কত সাহায্য করব ? তাই শেষ পর্যন্ত আমরা আপনাদের (সাংবাদিক) দ্বারস্থ হয়েছি অসুস্থ অসিতবাবুকে বাঁচানোর জন্য ।"
সব্যসাচীকে ফোন করে এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, "লোকজন আমাকে হেনস্থা করার জন্য এই ধরনের কুরুচিকর মন্তব্য করছে । আমার সঙ্গেও সাংবাদিকদের যোগাযোগ রয়েছে । "