ETV Bharat / state

Fast Food Addiction: ফাস্টফুডে আসক্তির জেরে বাড়ছে রোগ, সতর্কবার্তা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের

রকমারি খাবার ফাস্টফুড দেখে বাঙালি ভুলেছে ভাত-মাছ (Fast Food Addiction) ৷ যা ডেকে নিয়ে আসছে তাদের জীবনে বিপদ ৷ সচেতন হওয়ার পরামর্শ জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের ৷

ETV Bharat
Fast Food
author img

By

Published : Dec 28, 2022, 6:39 PM IST

রকমারি খাবার ফাস্টফুড দেখে বাঙালি ভুলেছে ভাত-মাছ

মেদিনীপুর, 28 ডিসেম্বর: সন্ধ্যে হলেই মেদিনীপুর শহর জুড়ে ফাস্টফুডের মেলা । রোল, চাওমিন, মোগলাই, বিরিয়ানি থেকে গরম ধোঁয়া ওঠা মোমো । সব কিছুই রয়েছে মেনুতে ৷ আর এর জেরে ঘরের খাবার ভুলে সেগুলির প্রতি আসক্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষের । যা ডেকে নিয়ে আসছে তাদের জীবনে বিপদ (Fast Food Addiction increasing Diseases ) ৷

জঙ্গলমহল মেদিনীপুরের শহরের আনাচে-কানাচে হঠাৎ করে গড়ে উঠেছে একাধিক ফাস্ট ফুডের দোকান ৷ কোথাও গরম গরম মোমো পাওয়া যাচ্ছে তো কোথাও চাওমিন,কোথাও বা শিক কাবাবের রমরমা । কোথাও মোগলাই তো কোথাও আবার ফুচকা । আর এই ফাস্টফুড খেতে রীতিমতো ভিড় জমাচ্ছেন আট থেকে আশির মানুষজন । ফাস্টফুডের কারণে ক্ষতি হচ্ছে শরীরের ৷ এর জেরে দেহে বাসা বাধছে প্রেসার, সুগার থেকে কোলেস্ট্রল, ঝুঁকি বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের ৷ তবু দেদার বিকচ্ছে ফাস্টফুড এবং মানুষ তা চেটেপুটে খাচ্ছে ৷

সম্প্রতি এক জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকরা বেশিরভাগই মানুষকে সতর্ক করছেন ফাস্টফুড না খেতে। কারণ তাদের বক্তব্য, ফাস্টফুড খেলে একদিকে যেমন তেল মশলাযর কারণে বাড়ছে কোলেস্টেরলের পরিমাণ, তেমনই হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতাও । একসময় যেখানে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হতেন বেশিরভাগ বয়স্ক মানুষ, সেখানে এখন তরুণ থেকে কিশোরদেরও হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু ঘটছে । এছাড়াও বিভিন্ন নার্ভের রোগ ছড়িয়ে পড়ছে । তাছাড়া সঙ্গে তো সুগার-প্রেসারের সমস্যা লেগেই রয়েছে ।

এই দীর্ঘমেয়াদি রোগ নিয়ে প্রতিদিন লম্বা লাইন পড়ছে ডাক্তারখানা, হাসপাতাল ও বড় বড় নার্সিংহোমগুলিতে । শুধু রাজ্যের হাসপাতাল নয়, এইমস এবং ব্যাঙ্গালোর-সহ বহু বড় বড় চিকিৎসা কেন্দ্রে লাইন লাগাচ্ছে সাধারণ মানুষ । তারপরও হুঁশ ফিরছে না তাদের । সেই ফাস্টফুড খেয়েই দিন কাটাচ্ছে তারা ৷

যদিও এই নিয়ে মানুষকেই দোষারোপ করেছে শিক্ষক বীরেন পাল থেকে স্থানীয় বাসিন্দা মানবকুমার মান্না ৷ তাঁদের কথা, "মানুষ সতর্ক ও সচেতন হলেও জিভের স্বাদ মেটাতে হাজির হচ্ছেন প্রতিদিন ফাস্ট ফুডের দোকানে । আর তারা অগোচরেই প্রয়োজনমতো না-খেয়ে প্রতিদিন খেতে খেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে ৷ যাতে ঘটছে বিপদ । আর তারা নিস্তব্ধে চলে যাচ্ছেন মৃত্যুর কোলে। এই নিয়ে যদি মানুষ ইতিমধ্যে সতর্ক না হয়, তাহলে আগামী প্রজন্মের হয়তো একাধিক রোগে আক্রান্ত হয়ে ওষুধ খেতে খেতেই বাকি জীবনটা কেটে যাবে । বাইরে বেরনো অভিভাবকরা তার বাচ্চাদের খেল না কিনে দিক, ফাস্টফুড না দিয়ে।"

আরও পড়ুন: বছরে শেষে করোনার ভ্রুকুটি ! পর্যাপ্ত বেড ও সরঞ্জাম-সহ তৈরি জঙ্গলমহল

ফাস্টফুড খাবারের বিক্রেতাদের বক্তব্য, "মানুষ অতি সহজেই এই রান্না করা খাবার পেয়ে যায় । যার ফলে তারা একদিকে যেমন বাড়ির রান্না করা ঝামেলা থেকে মুক্তি পায়, তেমনই চট জলদি খাবার খেয়ে তারা রওনা দেন গন্তব্যস্থলে । তাদের জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক এবং ফাস্টফুডের আয়োজন করেছি আমাদের দোকানে । যা খেতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন বয়স্ক থেকে কচি কাঁচারা । আমরা জানি অতিরিক্ত ফাস্টফুড শরীরের পক্ষে খারাপ ৷ কিন্তু আমরাও আমাদের পেটের তাগিদেই এই ব্যবসা করছি ।"

জেলাবাসীকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশংকর সারাঙ্গী । তিনি বলেন, "মানুষ স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন নন । এই ফাস্ট ফুডের দরুণ বহু রোগে আক্রান্ত হচ্ছে প্রতিদিন মানুষ । কম বয়সেই ওষুধের উপর নির্ভর হয়ে পড়েছে তারা । তবু ফাস্টফুড ছাড়ছে না । এক্ষেত্রে মানুষকেই সচেতন হতে হবে, তবেই মিলবে প্রেসার, সুগার, কোলেস্ট্রল-সহ দীর্ঘমেয়াদি রোগ থেকে মুক্তি ।"

আরও পড়ুন: ছিল ট্রাম লাইন, এখন সেখানেই সুসজ্জিত ক্যাফে

রকমারি খাবার ফাস্টফুড দেখে বাঙালি ভুলেছে ভাত-মাছ

মেদিনীপুর, 28 ডিসেম্বর: সন্ধ্যে হলেই মেদিনীপুর শহর জুড়ে ফাস্টফুডের মেলা । রোল, চাওমিন, মোগলাই, বিরিয়ানি থেকে গরম ধোঁয়া ওঠা মোমো । সব কিছুই রয়েছে মেনুতে ৷ আর এর জেরে ঘরের খাবার ভুলে সেগুলির প্রতি আসক্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষের । যা ডেকে নিয়ে আসছে তাদের জীবনে বিপদ (Fast Food Addiction increasing Diseases ) ৷

জঙ্গলমহল মেদিনীপুরের শহরের আনাচে-কানাচে হঠাৎ করে গড়ে উঠেছে একাধিক ফাস্ট ফুডের দোকান ৷ কোথাও গরম গরম মোমো পাওয়া যাচ্ছে তো কোথাও চাওমিন,কোথাও বা শিক কাবাবের রমরমা । কোথাও মোগলাই তো কোথাও আবার ফুচকা । আর এই ফাস্টফুড খেতে রীতিমতো ভিড় জমাচ্ছেন আট থেকে আশির মানুষজন । ফাস্টফুডের কারণে ক্ষতি হচ্ছে শরীরের ৷ এর জেরে দেহে বাসা বাধছে প্রেসার, সুগার থেকে কোলেস্ট্রল, ঝুঁকি বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের ৷ তবু দেদার বিকচ্ছে ফাস্টফুড এবং মানুষ তা চেটেপুটে খাচ্ছে ৷

সম্প্রতি এক জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকরা বেশিরভাগই মানুষকে সতর্ক করছেন ফাস্টফুড না খেতে। কারণ তাদের বক্তব্য, ফাস্টফুড খেলে একদিকে যেমন তেল মশলাযর কারণে বাড়ছে কোলেস্টেরলের পরিমাণ, তেমনই হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতাও । একসময় যেখানে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হতেন বেশিরভাগ বয়স্ক মানুষ, সেখানে এখন তরুণ থেকে কিশোরদেরও হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু ঘটছে । এছাড়াও বিভিন্ন নার্ভের রোগ ছড়িয়ে পড়ছে । তাছাড়া সঙ্গে তো সুগার-প্রেসারের সমস্যা লেগেই রয়েছে ।

এই দীর্ঘমেয়াদি রোগ নিয়ে প্রতিদিন লম্বা লাইন পড়ছে ডাক্তারখানা, হাসপাতাল ও বড় বড় নার্সিংহোমগুলিতে । শুধু রাজ্যের হাসপাতাল নয়, এইমস এবং ব্যাঙ্গালোর-সহ বহু বড় বড় চিকিৎসা কেন্দ্রে লাইন লাগাচ্ছে সাধারণ মানুষ । তারপরও হুঁশ ফিরছে না তাদের । সেই ফাস্টফুড খেয়েই দিন কাটাচ্ছে তারা ৷

যদিও এই নিয়ে মানুষকেই দোষারোপ করেছে শিক্ষক বীরেন পাল থেকে স্থানীয় বাসিন্দা মানবকুমার মান্না ৷ তাঁদের কথা, "মানুষ সতর্ক ও সচেতন হলেও জিভের স্বাদ মেটাতে হাজির হচ্ছেন প্রতিদিন ফাস্ট ফুডের দোকানে । আর তারা অগোচরেই প্রয়োজনমতো না-খেয়ে প্রতিদিন খেতে খেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে ৷ যাতে ঘটছে বিপদ । আর তারা নিস্তব্ধে চলে যাচ্ছেন মৃত্যুর কোলে। এই নিয়ে যদি মানুষ ইতিমধ্যে সতর্ক না হয়, তাহলে আগামী প্রজন্মের হয়তো একাধিক রোগে আক্রান্ত হয়ে ওষুধ খেতে খেতেই বাকি জীবনটা কেটে যাবে । বাইরে বেরনো অভিভাবকরা তার বাচ্চাদের খেল না কিনে দিক, ফাস্টফুড না দিয়ে।"

আরও পড়ুন: বছরে শেষে করোনার ভ্রুকুটি ! পর্যাপ্ত বেড ও সরঞ্জাম-সহ তৈরি জঙ্গলমহল

ফাস্টফুড খাবারের বিক্রেতাদের বক্তব্য, "মানুষ অতি সহজেই এই রান্না করা খাবার পেয়ে যায় । যার ফলে তারা একদিকে যেমন বাড়ির রান্না করা ঝামেলা থেকে মুক্তি পায়, তেমনই চট জলদি খাবার খেয়ে তারা রওনা দেন গন্তব্যস্থলে । তাদের জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক এবং ফাস্টফুডের আয়োজন করেছি আমাদের দোকানে । যা খেতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন বয়স্ক থেকে কচি কাঁচারা । আমরা জানি অতিরিক্ত ফাস্টফুড শরীরের পক্ষে খারাপ ৷ কিন্তু আমরাও আমাদের পেটের তাগিদেই এই ব্যবসা করছি ।"

জেলাবাসীকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশংকর সারাঙ্গী । তিনি বলেন, "মানুষ স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন নন । এই ফাস্ট ফুডের দরুণ বহু রোগে আক্রান্ত হচ্ছে প্রতিদিন মানুষ । কম বয়সেই ওষুধের উপর নির্ভর হয়ে পড়েছে তারা । তবু ফাস্টফুড ছাড়ছে না । এক্ষেত্রে মানুষকেই সচেতন হতে হবে, তবেই মিলবে প্রেসার, সুগার, কোলেস্ট্রল-সহ দীর্ঘমেয়াদি রোগ থেকে মুক্তি ।"

আরও পড়ুন: ছিল ট্রাম লাইন, এখন সেখানেই সুসজ্জিত ক্যাফে

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.