দাসপুর, 13 অগাস্ট : কোরোনা আবহের মধ্যে রাজ্য সরকারি নিয়মকে তোয়াক্কা না করে স্কুল খোলার জন্য শোকজ় নোটিস পাঠাল শিক্ষা দপ্তর ৷ সঙ্গে স্কুল বন্ধের নোটিস দেওয়া হল স্কুল কর্তৃপক্ষকে ৷ দাসপুরের বি সি রায় উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনা ৷
গতকালের চিত্র ছিল, স্কুলের ঘণ্টা বাজতেই ক্লাসে হাজির ছাত্রছাত্রীরা । শিক্ষকরা ক্লাস নিলেন । কোরোনা পরিস্থিতিতে এই কথাগুলো শুনতে অবাক লাগলেও অসাধ্য সাধন করেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর 1 ব্লকের হাটসরবেড়িয়া বি সি রায় উচ্চ বিদ্যালয় ।
প্রধান শিক্ষক বৃন্দাবন ঘটকের কাছে স্বাস্থ্য বিধি মেনে স্কুল খোলার আবেদন জানিয়েছিলেন অভিভাবকরা । সেই আবেদনের ভিত্তিতে বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সঙ্গে মিটিং হয় ৷ আর সেই মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় কোরোনা সংক্রমণের সমস্ত নির্দেশিকাকে মান্যতা দিয়ে চালু হবে স্কুলে পঠনপাঠন ।
12 আগস্ট বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসে ৷ পুরানো ছন্দে বাংলা, অঙ্ক, ইংরেজি সমস্ত বিষয় পড়ালেন শিক্ষকরা ৷ দিলেন বাড়ির কাজও । তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোরোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কড়াকড়ি ব্যবস্থা রাখে । প্রবেশ পথেই থার্মাল স্ক্রিনিং, স্যানিটাইজ়েশনের ব্যবস্থা যেমন ছিল, ঠিক তেমনই মুখে মাস্ক এবং শ্রেণিকক্ষে সামাজিক দূরত্ব মেনে পঠনপাঠনের রীতি ।
দীর্ঘদিন পরে স্কুলে পড়াশোনা চালু হাওয়ায় বেশ খুশি ছাত্রছাত্রী থেকে অভিভাবক ৷ অভিভাবকদের কথায়, দীর্ঘদিন ধরে কোরোনার জেরে বন্ধ ছিল স্কুলের পঠনপাঠন ৷ স্কুলে পঠন পাঠনের রীতি যাতে ফের শুরু হয় তাই নিয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন অভিভাবকরা ৷ তাঁদের কথায় মান্যতা দিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্লাস চালু করায় খুশি অভিভাবকরা ।
কোরোনা সংক্রমণ রুখতে শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশেই রাজ্যের সমস্ত বিদ্যালয়ে বন্ধ পঠনপাঠন । তারই মাঝে দাসপুরের এই বিদ্যালয়ে শুরু হয় পঠনপাঠন । বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বৃন্দাবনবাবু বলেন, "অভিভাবকদের আবেদনের ভিত্তিতে আমরা স্কুল খোলার জন্য কোরোনা সংক্রমণ রোধের সমস্ত ব্যবস্থা করেই পরীক্ষামূলকভাবে পঠনপাঠন চালু করেছি । বুধবার থেকে শুধুমাত্র দশম শ্রেণির পঠন পাঠন চালু হল । সাফল্য পেলে আংশিকভাবে ছোটো ছোটো গ্রুপে অন্যান্য ক্লাসও চালু হবে । তবে শিক্ষা দপ্তর এনিয়ে কোনও নির্দেশ দিলে আমরা ক্লাস স্কুলে বন্ধ করে দেব । তবে আমাদের শিক্ষক শিক্ষিকারা বিদ্যালয়ের বাইরে কোনও খোলা নিরাপদ জায়গায় ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠন জারি রাখবেন ।"
দেশজুড়েই বন্ধ রয়েছে স্কুল কলেজ ৷ এমন পরিস্থিতিতে একমাত্র দাসপুরের ওই স্কুল খুলে যায় ৷ চালু হয় পঠনপাঠন ৷ খবর মিলতেই তড়িঘড়ি স্কুলকে শোকজ়ের নির্দেশ দিল স্কুল শিক্ষা দপ্তর ৷ এছাড়া আজ শিক্ষা দপ্তরের প্রতিনিধি দল উপস্থিত হয় ৷ সংশ্লিষ্ট স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে স্কুল বন্ধ করার নোটিস দেয় ৷
