মেদিনীপুর, 31 মার্চ : দিন কয়েক আগে মন কি বাতের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, লকডাউনের কথা ঘোষণা করে তিনি যদি কোনও কঠোর পদক্ষেপ করে থাকেন, তাহলে তিনি ক্ষমাপ্রার্থী । বুঝিয়েছিলেন দেশকে কোরোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে হলে এই লকডাউন বা গৃহবন্দী হয়ে থাকাই একমাত্র পথ । আরও একবার সেই বার্তাই দিলেন BJP নেত্রী ভারতী ঘোষ । আজ এক ভিডিয়ো বার্তায় তিনি বলেন, "দেশবাসীকে সুস্থ রাখতে, কোরোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচাতেই ঘরে থাকার আবেদন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী । দয়া করে এই গৃহবন্দী শব্দটিকে বিকৃত করবেন না । এর কোনও খারাপ উদ্দেশ্য নেই। "
দেশে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা হাজারেরও বেশি। এপর্যন্ত 32 জনের মৃত্যু হয়েছে । গতকালই স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে এই মুহূর্তে লোকাল ট্রান্সমিশনের স্টেজে রয়েছে দেশ । এই মুহূর্তে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, গৃহবন্দী থাকা, নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখাই এই ভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র পথ । কিন্তু তাও দেশের নানা প্রান্তে প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে অনেকেই অযথা রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছেন । সামাজিক দূরত্ব তো অনেক দূর, কোথাও কোথাও ভিড় দেখে আঁতকে উঠছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা । অনেকে আবার মজা করে ফেসবুক-হোয়াটস অ্যাপে নানা মন্তব্য করছেন । ভিডিয়ো পোস্ট করছেন । কেউ কেউ সোশাল মিডিয়ায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন । কেউ কেউ এভাবে ঘরে থাকার কারণ জানতে চাইছে । এই পরিস্থিতিতে ভিডিয়ো বার্তার মাধ্যমে মানুষজনকে সচেতন করলেন প্রাক্তন IPS অফিসার তথা BJP নেত্রী ভারতী ঘোষ ।
হাত জড়ো করে সাধারণের উদ্দেশে ভারতীর বার্তা, "প্রধানমন্ত্রী 21 দিনের লকডাউন জারি করেছেন । আপনাদের বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে । কিন্তু এটাকে অন্যভাবে নেবেন না । নিজেকে এবং পরিবারকে কোরোনা সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে আপনারা আপাতত বাড়িতেই থাকুন । তাই 130 কোটির ভারতকে কোরোনার হাত থেকে বাঁচানোর একমাত্র উপায় বাড়িতে থাকা । একে গৃহবন্দী বলে অন্যভাবে বিকৃত করবেন না । যে কোনও সশস্ত্র যুদ্ধের থেকে বড় এই কোরোনা যুদ্ধ । এই যুদ্ধের একমাত্র কৌশল বাড়িতে থাকা । এই পরিস্থিতিকে অহেতুক বিকৃতি করে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করবেন না ।"
আজকের ভিডিয়ো বার্তায় রাজ্য সরকারের কাছে বেশ কয়েকটি অনুরোধ রাখেন ভারতী ঘোষ । তিনি জানান, প্রতিদিন হাজার হাজার শ্রমিক বাইরে থেকে জেলায় এবং রাজ্যে প্রবেশ করছে । তাঁদের জন্য যদি আলাদাভাবে কোনও কোয়ারান্টাইন সেন্টার গড়ে তোলা যায়, তাহলে সংক্রমণের মাত্রা অনেকটা কমবে । বিষয়টি নিয়ে যদি রাজ্য সরকার চিন্তাভাবনা করে তাহলে ভালো হয় ।
পাশাপাশি ভারতীর পরামর্শ, এই পরিস্থিতিতে প্রসূতিদের চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার । ওরা যাতে সংক্রমিত না হন, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে । এধরনের জরুরি পরিষেবায় স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে জেলায় জেলায় টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে । তিনি বলেন, "রাজ্য সরকারের একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করলে হবে না । যাতে জেলায় জেলায় হেল্পলাইন চালু করা যায় সেদিকেও নজর দিতে হবে ।"