চন্দ্রকোনা, 28 জুন: পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় একের পর এক বন্ধ পার্টি অফিসে ফের খুলছে বামেরা ৷ পঞ্চায়েত ভোটের আগে নতুন করে উজ্জিবীত বামেরা ৷ তাদের অবশ্য দাবি, মানুষ সংগঠিত হচ্ছে বলেই এই পার্টি অফিস খোলা সম্ভব হয়েছে ৷ যদিও তা নিয়ে অবশ্য পালটা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে শাসক দল।
মূলত পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালেই দলীয় কর্মসূচি করতেই কর্মীদের সংগঠিত করে এই পার্টি অফিসের তালা খোলা হয়। আর তাতেই উচ্ছ্বসিত বামেরা। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটিতে সিপিএমের বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা দলীয় কার্যালয়ের তালা খুলল সিপিএম নেতৃত্ব। 2011 সালে পালাবদলের পর থেকে তৃণমূলের সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা দুই নম্বর ব্লকের ভগবন্তপুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষ্ণপুরে সিপিএমের দলীয় কার্যালয়টি বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ 12 বছর পর সেই দলীয় কার্যালয়ের মরচে পড়ে যাওয়া তালা খুলল বাম নেতৃত্ব।
মঙ্গলবার বিকালে কৃষ্ণপুর এলাকায় উপস্থিত হন জেলা ও সিপিএমের রাজ্য স্তরের নেতা-কর্মীরা। জানা গিয়েছে, ভগবন্তপুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বাম ও আইএসএফ যৌথভাবে বেশ কয়েকটি আসনে এবারে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে ৷ সিপিএমের পড়ে থাকা দলীয় কার্যালয় খোলার মুহুর্তে পতাকা হাতে উপস্থিত ছিলেন আইএসএফ কর্মীরাও। বাম-আইএসএফ যৌথ নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে শাসকের গড়ে দীর্ঘ দিন পড়ে থাকা দলীয় কার্যালয় তালা খোলা হয়। বাম জমানার অবসানের পরই কৃষ্ণপুরে সিপিএমের এই দলীয় কার্যালয় তৃণমূলের সন্ত্রাস ও কর্মীরা বাড়ি ছাড়া হওয়ার মতো ঘটনার জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মানুষকে সংগঠিত করতে 12 বছর সময় লেগে গিয়েছে ৷ আর তাই পুনরায় এই দলীয় কার্যালয় চালু করা হয়েছে, এমনটাই জানান জেলা সিপিএম নেতৃত্ব।
এলাকার সিপিএম নেতা সুস্মিতা পাল বলেন, "রাজ্যে পরিবর্তনের পরই তৃণমূলের সন্ত্রাসে বন্ধ হয়ে যায় আমাদের পার্টি অফিস। আমাদের বহু কর্মী-নেতারা গ্রাম ছাড়া ছিল। পরে কয়েকজন ফিরে এলেও বাকিরা নিখোঁজ ছিলেন ৷ কিন্তু এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় এলাকার মানুষের চাওয়াতেই আমরা ওই পার্টি অফিস খুলে দিলাম। এবং আমাদের কর্মী-সমর্থকদের সংগঠিত করেই আমরা লড়াই চালাব।" তিনি আরও বলেন, "আজ থেকে শুরু হয়ে গেল আমাদের পার্টি অফিসের রাজনৈতিক কাজকর্ম।"
আরও পড়ুন: লোকসভা ভোটে বাংলায় শাহী টার্গেটকেও ছাপিয়ে গেলেন শুভেন্দু
অন্যদিকে, তৃণমূল নেতা বলেন, "2011-এর পর সিপিএম শূন্য হয়ে পড়ে ৷ যার জন্যই ওদের পার্টি অফিস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং ওরা এলাকা ছেড়ে চলে যায়। যদিও এখন নতুন করে সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে আবার ওরা আইএসএফ-এর সঙ্গে জোট বেঁধে পার্টি অফিস খুলছে। আমরা কারও উপর হামলা বা সন্ত্রাস চালিয়েছি এমন কোনও দৃষ্টান্ত এখনও পর্যন্ত নেই। যদি কিছু ঘটে থাকে তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তবে ওরা আবার নতুন করে সন্ত্রাসের আবহাওয়া গড়ে তুলছে এই কৃষ্ণপুরে।" যদিও বামেদের এই দলীয় কার্যালয় পুনরায় খোলার বিষয়কে গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ৷