পশ্চিম মেদিনীপুর, 11 জুন : বিপর্যয়ের জেরে সিপিআইএম’র দলীয় কার্যালয়ের জন্য নেওয়া জমি বিক্রি করতে বাধ্য হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্ব । প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকায় 9 কাঠা ওই জমি স্থানীয় এক প্রোমোটারের কাছে বিক্রি করা হয়েছে ৷ যদিও সিপিআইএম’র জেলা নেতৃত্বের দাবি পুরনো দলীয় কার্যালয়ের মেরামত-সহ নেতা কর্মীদের সাহায্য করার জন্যই রাজ্য নেতৃত্ব এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।
2011 সালে রাজ্যে তৃণমূলের কাছে হেরে ক্ষমতা চ্যূত হয়েছিল বামেরা । যদিও, ভাবনা ছিল ক্ষমতায় ফিরে এসে পুনরায় আরও শক্তিশালী করা বামফ্রন্টকে ৷ কিন্তু সেই স্বপ্নে জল ঢেলে দিয়ে বিপর্যয় ঘটে বামেদের এবং পরাজিত হয় পরবর্তীকালেও । 2016 সালে হাতেগোনা কয়েকটি আসন পেয়েছিল বামেরা ৷ কিন্তু, 2021 বিধানসভা নির্বাচনে একেবারে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেছে সিপিআইএম তথা বামেরা ৷ কংগ্রেস ও আইএসএফ-কে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোটকে নিজেদের দিকে টানতে চেয়েছিল সিপিআইএম সহ অন্যান্য বাম দলগুলি ৷ কিন্তু, বাংলার মানুষ সেই জোটে বিশ্বাস রাখেনি ৷
প্রসঙ্গত, 2011 সালের পর থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরে বহু সিপিআইএম নেতার বিরুদ্ধে মামলা চলছে ৷ তা সে জেলার আদালতে হোক বা হাইকোর্টে ৷ সেই মামলাগুলি চালানোর জন্য সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করতে হচ্ছে জেলা নেতৃত্বকে ৷ যার জেরে জেলা নেতৃত্বের ভাঁড়ার কার্যত শূন্য ৷ তাই এবার পরিস্থিতি সামাল দিয়ে নতুন দলীয় কার্যালয়ের জন্য কেনা জমি বিক্রি করে দিল পশ্চিম মেদিনীপুরের সিপিআইএম নেতৃত্ব ৷
আরও পড়ুন : ক্ষুব্ধ ফরওয়ার্ড ব্লক, পরিস্থিতি সামলাতে শনিবার ফ্রন্টের বৈঠকের ডাক বিমানের
কুড়ি বছর আগে মেদিনীপুর শহরে 2 কোটি টাকা দিয়ে 9 কাঠা ওই জমিটি কেনা হয়েছিল ৷ তৎকালীন জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের নেতৃত্বে মেদিনীপুর শহরের কেরানিতলায় একটি লজের পাশে এই ফাঁকা জমিটি কেনা হয় ৷ ঠিক ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা মেদিনীপুরে সিপিআইএম‘র প্রতিষ্ঠাতা সুকুমার সেনগুপ্তর নামে একটি ভবন তৈরি করা হবে সেখানে । সেটাই হতো সিপিআইএম‘র জেলা কার্যালয় ৷ সিপিআইএম সূত্রে খবর, বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে জঙ্গলে ভরে যাওয়া ওই জমিটি প্রায় সাড়ে 6 কোটি টাকায় এক প্রোমোটারকে বিক্রি করা হয়েছে ।
আরও পড়ুন :মানুষের পাশে রেড ভলান্টিয়ার, করোনা মোকাবিলায় বামেদের নতুন প্যারোডি
যে প্রোমোটার এই জমি কিনেছেন, তাঁর কথায়, সেখানে 600 সিটের একটি অডিটোরিয়াম গড়ে তোলা হবে । যেখানে সুকুমার সেনগুপ্তর একটি মূর্তি বসানোর আবেদন করেছে জেলা সিপিআইএম নেতৃত্ব ৷ যদিও এ বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সম্পাদক আশিস চক্রবর্তী বলেন সিপিআইএম ভুল বার্তা দিয়ে জমিটি বিক্রি করেছে । আসলে ওরা প্রমোটিং করানোর জন্যই জমিটা বিক্রি করেছে । তবে, দলীয় কার্যালয়ের জন্য কেনা জমি বিক্রি করায় সিপিআইএম’র অন্দরেও ক্ষোভ রয়েছে ।