মেদিনীপুর, 26 অগস্ট: অবশেষে দীর্ঘ আট বছর পর 20 হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে শর্তসাপেক্ষে জামিনে ছাড়া পেলেন নেতাই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত বাম নেত্রী ফুল্লরা মণ্ডল (Netai Incident Accused)। তাঁর মুক্তির আনন্দে কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ভিড় জমান শতাধিক বাম কর্মী ও সমর্থক (CPIM Leader Fullora Mondal)। ফুলের মালা, স্তবক দিয়ে স্বাগত জানানো হয় নেত্রীকে ৷ অভ্যর্থনা জানান সিপিআইএমের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ (Sushanta Ghosh) ও সিপিআইএম-এর আইনজীবীরাও । প্রতিহিংসা পরায়ণ সরকার নেতাইতে সিপিআইএমের সংগঠন শেষ করতেই ফুল্লরাকে ফাঁসিয়েছে বলে অভিযোগ করে বাম নেতৃত্ব ।
অবশেষে দীর্ঘ 8 বছর পর জামিনে মুক্তি পেলেন নেতাই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ফুল্লরা মণ্ডল । তিনি জেল থেকে মুক্তি পাওয়ায় খুশির জোয়ারে ভাসলেন জেলা বাম নেতাকর্মী ও সমর্থকরা । 2011 সালে 7 জানুয়ারি লালগড়ে নেতাই গ্রামে সিপিআইএম কর্মী রথীন দণ্ডপাটের বাড়ি থেকে নির্বিচারে গুলি চালানো হয় গ্রামবাসীদের উপর । এই ঘটনায় মৃত্যু হয় 9 জন গ্রামবাসীর ৷ আহত হন 30 জন । এই ঘটনার পরপরই বাংলায় ভেঙে পড়ে বাম সাম্রাজ্য ৷ রাজ্যে পরিবর্তনের জোয়ার এনে বাংলার মসনদে বসে তৃণমূলের সরকার ।
এরপরই ফুল্লরা মণ্ডল, রথীন দণ্ডপাট, অনুজ পাণ্ডে, ডালিম পাণ্ডে-সহ মোট 20 জনের নামে নেতাই মামলা শুরু হয় । এই মামলা আজ পর্যন্ত চলছে আদালতে । তবে বামেরা তাদের সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করছে, যাতে এই নেতাই মামলা থেকে তাঁদের নেতা কর্মীদের মুক্তি দেওয়া যায় । কিন্তু দীর্ঘ মামলা চলার পরেই মোট 20 জন সিপিআইএম নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল । সেই মামলার প্রেক্ষিতে ফুল্লরা মণ্ডল-সহ মোট পাঁচজন এখনও পর্যন্ত জামিন পেলেন । তবে এই মামলায় একজনের মৃত্যু হওয়ায় এখনও পর্যন্ত 14 জন জেলে রয়েছেন । সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করায় শর্তসাপেক্ষে 20 হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে ফুল্লরা মণ্ডলের জামিন মঞ্জুর করে সর্বোচ্চ আদালত ।
আরও পড়ুন: নেতাই গণহত্যার মূল অভিযুক্ত রথীন দণ্ডপাটের জামিন খারিজ
সেই নির্দেশ মেনেই এ দিন বাম নেত্রীকে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয় । সংশোধনাগারে সিপিআইএমের নেতাকর্মীরা এসে মালা দিয়ে তাঁকে বরণ করে নেন । ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান বাম নেত্রীকে । উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএমের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষও ৷ জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ফুল্লরা মণ্ডল বলেন, "কোনও কারণ ছাড়াই জেল খেটেছি । প্রতিহিংসাপরায়ণ সরকার ৷ তবে আইনের প্রতি আস্থা আছে ।"
একই সুর শোনা যায় সিপিআইএমের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষের গলাতেও ৷ তিনি বলেন, "দুর্বৃত্ত ও প্রতিহিংসাপরায়ণ সরকার । যে সরকার আমাদের নেতা-কর্মীদের বিনা কারণে এত বছর জেল খাটালো । কারণ নেতাইয়ে সিপিআইএমের একটা বড় সংগঠন রয়েছে ৷ আর সেই সংগঠনের নেত্রী এই ফুল্লরা মণ্ডল । এই ফুল্লরাকে সরাতে তৃণমূল ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁকে নেতাই মামলায় ফাঁসিয়েছে । তবে আমাদের আইনের প্রতি আস্থা আছে ৷ আজ নয় কাল, কাল নয় পরশু এই দুর্বৃত্তের সরকারের পতন হবেই ।"