ETV Bharat / state

বন্ধ বিয়ের অনুষ্ঠান, হচ্ছে না পুজোও ; আর্থিক সমস্যায় মেদিনীপুরের মৃৎশিল্পীরা - lockdown

পশ্চিম মেদিনীপুরে এমন শিল্পীর সংখ্যা রয়েছে প্রায় তিন হাজার । কেশিয়াড়ি, দাঁতন, ঘাটাল, দাসপুর, কেশপুর, গড়বেতা, চন্দ্রকোণা, শালবনিসহ বিভিন্ন জায়গায় এই ছোটো-বড় কুমোরেরা ব্যবসা করেন । তাঁদের অভিযোগ, লকডাউনে এখনও পাননি সরকারি সাহায্য । এভাবে চললে আগামীদিনে পেটে খাবার জুটবে না ।

আর্থিক সমস্যায় মেদিনীপুরের মৃৎ শিল্পীরা
আর্থিক সমস্যায় মেদিনীপুরের মৃৎ শিল্পীরা
author img

By

Published : Jun 28, 2020, 3:33 PM IST

Updated : Jul 31, 2020, 11:29 AM IST

মেদিনীপুর, 28 জুন : লকডাউনে বন্ধ বিক্রিবাট্টা । নেই মাটির হাঁড়ি বা ভাঁড়ের চাহিদা । বন্ধ পুজোও । তাই একেবারেই বিক্রি হচ্ছে না সরা, ঘট বা প্রদীপ । এই পরিস্থিতিতে ধুঁকছে মৃৎ শিল্প । সমস্যায় মেদিনীপুরের কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীরা । মিলছে না প্রতিমা গড়ার বরাতও ৷ ফলে, সরকারি সাহায্যের দিকেই তাকিয়ে তাঁরা ।

কোরোনার প্রভাব পড়েছে সব ক্ষেত্রেই । সরকারি, বেসরকারি, ক্ষুদ্র, ছোটো, মাঝারি শিল্প, বাদ যায়নি কিছুই । হস্তশিল্পে এর প্রভাব আরও অনেকটা বেশি । পশ্চিম মেদিনীপুর, জঙ্গলমহল অধ্যুষিত বেশিরভাগ এলাকার মানুষই স্বনির্ভর হয়েছে হস্তশিল্পের মাধ্যমে । মেদিনীপুর শহরে এরকম একটি কুমোরপাড়া রয়েছে যেখানে মাটির ঘটি, বাটি, ভাঁড়, সরা, টব বিক্রি হয় । পুজোর নানা মাটির সামগ্রীও এখান থেকে বিভিন্ন জেলায় যায় । পুজোর আগে রাতদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে এইসব মাটির দ্রব্য তৈরি করেন এখানকার শিল্পীরা । বিয়ের মরশুমেও মাটির দ্রব্যের চাহিদা বেশি থাকে । রোজই লোকজন ভিড় করে জিনিস কিনতে । কিন্তু এবার এখানকার চিত্রটা পালটেছে । মার্চের পর থেকে বন্ধ হয়েছে লোকজনের আনাগোনা । প্রথম দিকে বিক্রি একটু আধটু হলেও জেলায় কোরোনা সংক্রমিতের খোঁজ পাওয়ার থেকে তা একেবারেই বন্ধ হয়ে যায় । ফলে, সমস্যায় পড়েছেন এখানকার শিল্পীরা ।

দুর্গাপুজো হবে এই আশায় অনেকেই কিছু কাজ করে রেখেছেন । তাঁদের কথায়, এবার যদি দুর্গাপুজোও না হয়, তাহলে খাবার জুটবে না আমাদের । বিয়ের অনুষ্ঠানও তো বন্ধ । তাঁদের অভিযোগ, কোনও রাজনৈতিক দল, সরকার বা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আমাদের সাহায্য করেনি । ফলে, আগামীদিনে পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়াবে বুঝতে পারছি না । কীভাবে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা চলবে, কীভাবেই বা পরিবারের বাকি খরচা উঠবে তা জানা নেই ।

Clay artisans
পড়ে রয়েছে চাকা, মাটির অভাবে তৈরি হচ্ছে না কলসি, প্রদীপ বা ভাঁড়

এবিষয়ে কুমোরপাড়ার বাসিন্দা অরূপ পাল বলেন, "দীর্ঘ 30 বছরের বেশি সময় ধরে এই কুমোর পাড়ায় মাটির জিনিস তৈরি করে আসছি । এই করেই আমাদের সংসার চলে । কিন্তু এখন গোটা কুমোরপাড়াজুড়ে হাহাকার । কারণ দীর্ঘ লকডাউনে সবই বন্ধ । এই অবস্থা চলছে গত তিন মাস ধরে । এখনও মেলেনি কোনও সরকারি সাহায্য । তাই গোটা কুমোরপাড়া এখন আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে ।"

শিল্পী দীনবন্ধু দাস বলেন, "মাটির জিনিসপত্র তৈরি করা বন্ধ হয়ে গেছে এই লকডাউনে । বিশেষ করে এই মাটির জিনিসের চাহিদা থাকে বেনে দোকান, পুজো-পার্বণ এবং মিষ্টির দোকানগুলিতে । বিভিন্ন ভাঁড়, মাটির খুরি, মাটির সরাসহ বিভিন্ন দ্রব্য মানুষের চাহিদা মেটায় এখান থেকেই । কিন্তু লকডাউনে এসব বন্ধ দীর্ঘদিন । সেই কারণে আমাদের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে । আরও এক বছর আমাদের এরকম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে । তাই আশঙ্কায়, আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি । মেলেনি কোনও সাহায্য ।"

দেখুন কী বলছেন মৃৎ শিল্পীরা

এবিষয়ে শিল্পী যোগেন্দ্রনাথ দাস বলেন, "একদিকে লকডাউনে জিনিসপত্র কেনাকাটা নেই, অপরদিকে মাটি পাওয়া যাচ্ছে না । মাটি আনতে গেলে সমস্যা তৈরি হচ্ছে । ফলে মাটি না পেয়ে আমরা প্রায় সমস্ত কাজ বন্ধ করে দিয়েছি । এতে ক্ষতি সবার । আমাদের কোনও সাহায্য মিলছে না কীভাবে দিন কাটবে সেই চিন্তায় রয়েছে ।"

মেদিনীপুর, 28 জুন : লকডাউনে বন্ধ বিক্রিবাট্টা । নেই মাটির হাঁড়ি বা ভাঁড়ের চাহিদা । বন্ধ পুজোও । তাই একেবারেই বিক্রি হচ্ছে না সরা, ঘট বা প্রদীপ । এই পরিস্থিতিতে ধুঁকছে মৃৎ শিল্প । সমস্যায় মেদিনীপুরের কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীরা । মিলছে না প্রতিমা গড়ার বরাতও ৷ ফলে, সরকারি সাহায্যের দিকেই তাকিয়ে তাঁরা ।

কোরোনার প্রভাব পড়েছে সব ক্ষেত্রেই । সরকারি, বেসরকারি, ক্ষুদ্র, ছোটো, মাঝারি শিল্প, বাদ যায়নি কিছুই । হস্তশিল্পে এর প্রভাব আরও অনেকটা বেশি । পশ্চিম মেদিনীপুর, জঙ্গলমহল অধ্যুষিত বেশিরভাগ এলাকার মানুষই স্বনির্ভর হয়েছে হস্তশিল্পের মাধ্যমে । মেদিনীপুর শহরে এরকম একটি কুমোরপাড়া রয়েছে যেখানে মাটির ঘটি, বাটি, ভাঁড়, সরা, টব বিক্রি হয় । পুজোর নানা মাটির সামগ্রীও এখান থেকে বিভিন্ন জেলায় যায় । পুজোর আগে রাতদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে এইসব মাটির দ্রব্য তৈরি করেন এখানকার শিল্পীরা । বিয়ের মরশুমেও মাটির দ্রব্যের চাহিদা বেশি থাকে । রোজই লোকজন ভিড় করে জিনিস কিনতে । কিন্তু এবার এখানকার চিত্রটা পালটেছে । মার্চের পর থেকে বন্ধ হয়েছে লোকজনের আনাগোনা । প্রথম দিকে বিক্রি একটু আধটু হলেও জেলায় কোরোনা সংক্রমিতের খোঁজ পাওয়ার থেকে তা একেবারেই বন্ধ হয়ে যায় । ফলে, সমস্যায় পড়েছেন এখানকার শিল্পীরা ।

দুর্গাপুজো হবে এই আশায় অনেকেই কিছু কাজ করে রেখেছেন । তাঁদের কথায়, এবার যদি দুর্গাপুজোও না হয়, তাহলে খাবার জুটবে না আমাদের । বিয়ের অনুষ্ঠানও তো বন্ধ । তাঁদের অভিযোগ, কোনও রাজনৈতিক দল, সরকার বা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আমাদের সাহায্য করেনি । ফলে, আগামীদিনে পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়াবে বুঝতে পারছি না । কীভাবে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা চলবে, কীভাবেই বা পরিবারের বাকি খরচা উঠবে তা জানা নেই ।

Clay artisans
পড়ে রয়েছে চাকা, মাটির অভাবে তৈরি হচ্ছে না কলসি, প্রদীপ বা ভাঁড়

এবিষয়ে কুমোরপাড়ার বাসিন্দা অরূপ পাল বলেন, "দীর্ঘ 30 বছরের বেশি সময় ধরে এই কুমোর পাড়ায় মাটির জিনিস তৈরি করে আসছি । এই করেই আমাদের সংসার চলে । কিন্তু এখন গোটা কুমোরপাড়াজুড়ে হাহাকার । কারণ দীর্ঘ লকডাউনে সবই বন্ধ । এই অবস্থা চলছে গত তিন মাস ধরে । এখনও মেলেনি কোনও সরকারি সাহায্য । তাই গোটা কুমোরপাড়া এখন আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে ।"

শিল্পী দীনবন্ধু দাস বলেন, "মাটির জিনিসপত্র তৈরি করা বন্ধ হয়ে গেছে এই লকডাউনে । বিশেষ করে এই মাটির জিনিসের চাহিদা থাকে বেনে দোকান, পুজো-পার্বণ এবং মিষ্টির দোকানগুলিতে । বিভিন্ন ভাঁড়, মাটির খুরি, মাটির সরাসহ বিভিন্ন দ্রব্য মানুষের চাহিদা মেটায় এখান থেকেই । কিন্তু লকডাউনে এসব বন্ধ দীর্ঘদিন । সেই কারণে আমাদের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে । আরও এক বছর আমাদের এরকম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে । তাই আশঙ্কায়, আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি । মেলেনি কোনও সাহায্য ।"

দেখুন কী বলছেন মৃৎ শিল্পীরা

এবিষয়ে শিল্পী যোগেন্দ্রনাথ দাস বলেন, "একদিকে লকডাউনে জিনিসপত্র কেনাকাটা নেই, অপরদিকে মাটি পাওয়া যাচ্ছে না । মাটি আনতে গেলে সমস্যা তৈরি হচ্ছে । ফলে মাটি না পেয়ে আমরা প্রায় সমস্ত কাজ বন্ধ করে দিয়েছি । এতে ক্ষতি সবার । আমাদের কোনও সাহায্য মিলছে না কীভাবে দিন কাটবে সেই চিন্তায় রয়েছে ।"

Last Updated : Jul 31, 2020, 11:29 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.