ETV Bharat / state

Chandrakona School Problem: ভগ্নপ্রায় স্কুল, একটা ঘরে একসঙ্গে চলছে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস

স্কুলভবন তৈরির ফলক অক্ষত রইলেও ভেঙে পড়েছে ঘর ৷ দেওয়ালে গজিয়েছে পরগাছা ৷ প্রতিমুহূর্তে বিপদের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই এই ঘরের পাশেই চলছে ক্লাস ৷ এমনই অবস্থা চন্দ্রকোনার বাঁশদহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৷

Etv Bharat
চন্দ্রকোনায় প্রাথমিক স্কুলে সমস্যা
author img

By

Published : Jul 27, 2023, 2:52 PM IST

চন্দ্রকোনার ভগ্নপ্রায় স্কুলের কাহিনি

চন্দ্রকোনা, 27 জুলাই: ভেঙে পড়েছে ছাদ ৷ বিপজ্জনক অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে স্কুলভবন । বছরের পর বছর কেটে গেলেও বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতরে ওই ভবন ভেঙে নতুন ভবন তৈরির আবেদন জানিয়েও কোনও সাড়া মেলেনি । এমতাবস্থায় পাশেই একটি মাত্র ভবনে কিছু পড়ুয়াকে মেঝেতে ও কিছুজনকে বেঞ্চে বসিয়ে গাদাগাদি করে চলছে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস । যার ফলে লাটে উঠেছে প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের পঠনপাঠন । দ্রুত ভগ্নপ্রায় স্কুল ভবন ভেঙে নতুন ভবন তৈরির দাবি করেছেন অভিভাবক থেকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ।

প্রাথমিক স্কুলের এমন ভগ্নদশার ছবি দেখলে আঁতকে উঠবে যে কেউ । ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা পৌরসভার 6 নং ওয়ার্ডের বাঁশদহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের । আগে সংখ্যাটা বেশি থাকলেও বর্তমানে এই স্কুলে 37 জন ছাত্রছাত্রী, দু'জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও একজন প্যারাটিচার রয়েছেন । এরই সঙ্গে মিড-ডে মিলের জন্য রয়েছে দু'জন রাঁধুনি ।

1959 সালে স্থাপিত হয় এই বাঁশদহ প্রাথমিক বিদ্যালয় । যার একটি মাত্র ভবনে চলত পঠনপাঠন । 2007 সালে পাশেই তৈরি হয় নতুন একটি স্কুল ভবন । এরপর 2010 সালের আগে পুরনো স্কুল ভবনটিতে ফাটল দেখা দেয় ৷ তারপর থেকেই একটু একটু করে বর্তমানে পুরো স্কুল ভবনটি ভগ্নপ্রায় অবস্থায় দাঁড়িয়েছে । ওই ভবনের ভিতরে কংক্রিটের ছাদ ভেঙে ঝুলছে, দেওয়ালের ভিতরে ও বাইরে একাধিক জায়গায় বড় বড় ফাটল তৈরি হয়েছে । স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, 2010 সাল থেকেই তালা পড়ে পুরনো ভবনটিতে । বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ওই ভবনটি । বর্ষার মরশুমে যে কোনওদিন তা ভেঙে পড়তে পারে । অন্যদিকে, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নজর এড়িয়ে ওই ভবনের দুয়ারে চলে যায় খুদে স্কুল পড়ুয়ারা ৷ যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় বিপদের সম্মুখীন হতে পারে পড়ুয়ারা ।

এই বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রত্না কুন্ডু সেন জানান, 2010 থেকে 2022 সাল পর্যন্ত স্থানীয় পৌরসভা, বিডিও, ব্লকের স্কুল পরিদর্শক থেকে ডিপিএসসি এই সমস্ত দফতরে একাধিকবার লিখিত আকারে আবেদন করা হয় । পুরানো ভগ্নপ্রায় ভবনটি ভেঙে ফেলা এবং শ্রেণিকক্ষ বাড়ানোর জন্য । কিন্তু সমস্ত দফতরে জানানো হলেও এখনও পর্যন্ত কোনও সাড়া মেলেনি ।

এভাবে স্কুলে পঠনপাঠনে অখুশি অভিভাবকরাও । তাঁদের কথায়, ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকতে হয় । কারণ শিক্ষিকাদের নজর এড়িয়ে যদি ছেলেমেয়েরা ভাঙাচোরা ভবনের দিকে চলে যায় এবং কোনও দুর্ঘটনা ঘটে ৷ আর একটি রুমে সব ক্লাসের পড়ুয়াদের নিয়ে ক্লাস নিতে হওয়ায় আদৌ তাদের ছেলেমেয়েরা কিছু বুঝতে বা শিখতে পারে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন অভিভাবকরা ।

আরও পড়ুন : ভাড়াবাড়িতে ভগ্নপ্রায় সরকারি প্রাথমিক স্কুল, নেই পানীয় জল ও বাথরুম

স্কুলের এহেন সমস্যা ও বেহাল দশার কথা মেনে নিয়েছেন চন্দ্রকোনা 2 চক্রের স্কুল পরিদর্শক দীপাঞ্জন মণ্ডল । তিনি বলেন, "স্কুলের তরফে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছিল নতুন শ্রেণিকক্ষ তৈরির জন্য ৷ সেইমতো আমরা ভেটিং করে ডিপিএসসি এবং সর্বশিক্ষা মিশনে পাঠিয়ে দিয়েছি । আর পুরনো ভবনটি ভেঙে ফেলার জন্যও আমরা অনুমতির আবেদন করেছি ৷ তবে এখনও কোনও অনুমতি মেলেনি ৷ তা পেয়ে গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।"
শৌচাগার থেকে মিড-ডে মিলের রান্না ঘর, সবই স্কুল চত্বরে থাকলেও নেই পর্যাপ্ত ক্লাসরুম ৷ তার উপর পাশেই বিপজ্জনকভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভগ্ন এই স্কুল ভবনটি ৷ ভয় ভীতি ও আতঙ্কের প্রহর গোনার সঙ্গেই একপ্রকার যেনতেনভাবে খুদে পড়ুয়াদের পাঠদান চলছে বাঁশদহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৷ কবে প্রশাসনের হুঁশ ফেরে সেদিকেই তাকিয়ে সকলেই ।

চন্দ্রকোনার ভগ্নপ্রায় স্কুলের কাহিনি

চন্দ্রকোনা, 27 জুলাই: ভেঙে পড়েছে ছাদ ৷ বিপজ্জনক অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে স্কুলভবন । বছরের পর বছর কেটে গেলেও বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতরে ওই ভবন ভেঙে নতুন ভবন তৈরির আবেদন জানিয়েও কোনও সাড়া মেলেনি । এমতাবস্থায় পাশেই একটি মাত্র ভবনে কিছু পড়ুয়াকে মেঝেতে ও কিছুজনকে বেঞ্চে বসিয়ে গাদাগাদি করে চলছে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস । যার ফলে লাটে উঠেছে প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের পঠনপাঠন । দ্রুত ভগ্নপ্রায় স্কুল ভবন ভেঙে নতুন ভবন তৈরির দাবি করেছেন অভিভাবক থেকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ।

প্রাথমিক স্কুলের এমন ভগ্নদশার ছবি দেখলে আঁতকে উঠবে যে কেউ । ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা পৌরসভার 6 নং ওয়ার্ডের বাঁশদহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের । আগে সংখ্যাটা বেশি থাকলেও বর্তমানে এই স্কুলে 37 জন ছাত্রছাত্রী, দু'জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও একজন প্যারাটিচার রয়েছেন । এরই সঙ্গে মিড-ডে মিলের জন্য রয়েছে দু'জন রাঁধুনি ।

1959 সালে স্থাপিত হয় এই বাঁশদহ প্রাথমিক বিদ্যালয় । যার একটি মাত্র ভবনে চলত পঠনপাঠন । 2007 সালে পাশেই তৈরি হয় নতুন একটি স্কুল ভবন । এরপর 2010 সালের আগে পুরনো স্কুল ভবনটিতে ফাটল দেখা দেয় ৷ তারপর থেকেই একটু একটু করে বর্তমানে পুরো স্কুল ভবনটি ভগ্নপ্রায় অবস্থায় দাঁড়িয়েছে । ওই ভবনের ভিতরে কংক্রিটের ছাদ ভেঙে ঝুলছে, দেওয়ালের ভিতরে ও বাইরে একাধিক জায়গায় বড় বড় ফাটল তৈরি হয়েছে । স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, 2010 সাল থেকেই তালা পড়ে পুরনো ভবনটিতে । বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ওই ভবনটি । বর্ষার মরশুমে যে কোনওদিন তা ভেঙে পড়তে পারে । অন্যদিকে, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নজর এড়িয়ে ওই ভবনের দুয়ারে চলে যায় খুদে স্কুল পড়ুয়ারা ৷ যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় বিপদের সম্মুখীন হতে পারে পড়ুয়ারা ।

এই বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রত্না কুন্ডু সেন জানান, 2010 থেকে 2022 সাল পর্যন্ত স্থানীয় পৌরসভা, বিডিও, ব্লকের স্কুল পরিদর্শক থেকে ডিপিএসসি এই সমস্ত দফতরে একাধিকবার লিখিত আকারে আবেদন করা হয় । পুরানো ভগ্নপ্রায় ভবনটি ভেঙে ফেলা এবং শ্রেণিকক্ষ বাড়ানোর জন্য । কিন্তু সমস্ত দফতরে জানানো হলেও এখনও পর্যন্ত কোনও সাড়া মেলেনি ।

এভাবে স্কুলে পঠনপাঠনে অখুশি অভিভাবকরাও । তাঁদের কথায়, ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকতে হয় । কারণ শিক্ষিকাদের নজর এড়িয়ে যদি ছেলেমেয়েরা ভাঙাচোরা ভবনের দিকে চলে যায় এবং কোনও দুর্ঘটনা ঘটে ৷ আর একটি রুমে সব ক্লাসের পড়ুয়াদের নিয়ে ক্লাস নিতে হওয়ায় আদৌ তাদের ছেলেমেয়েরা কিছু বুঝতে বা শিখতে পারে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন অভিভাবকরা ।

আরও পড়ুন : ভাড়াবাড়িতে ভগ্নপ্রায় সরকারি প্রাথমিক স্কুল, নেই পানীয় জল ও বাথরুম

স্কুলের এহেন সমস্যা ও বেহাল দশার কথা মেনে নিয়েছেন চন্দ্রকোনা 2 চক্রের স্কুল পরিদর্শক দীপাঞ্জন মণ্ডল । তিনি বলেন, "স্কুলের তরফে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছিল নতুন শ্রেণিকক্ষ তৈরির জন্য ৷ সেইমতো আমরা ভেটিং করে ডিপিএসসি এবং সর্বশিক্ষা মিশনে পাঠিয়ে দিয়েছি । আর পুরনো ভবনটি ভেঙে ফেলার জন্যও আমরা অনুমতির আবেদন করেছি ৷ তবে এখনও কোনও অনুমতি মেলেনি ৷ তা পেয়ে গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।"
শৌচাগার থেকে মিড-ডে মিলের রান্না ঘর, সবই স্কুল চত্বরে থাকলেও নেই পর্যাপ্ত ক্লাসরুম ৷ তার উপর পাশেই বিপজ্জনকভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভগ্ন এই স্কুল ভবনটি ৷ ভয় ভীতি ও আতঙ্কের প্রহর গোনার সঙ্গেই একপ্রকার যেনতেনভাবে খুদে পড়ুয়াদের পাঠদান চলছে বাঁশদহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৷ কবে প্রশাসনের হুঁশ ফেরে সেদিকেই তাকিয়ে সকলেই ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.