সবং, 27 ডিসেম্বর : চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটল পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ে (Class Four Student Unnatural Death) ৷ চাষের জমিতে কাজ করতে গিয়েছিলেন বছর নয়েকের ওই বালিকার মা-বাবা ৷ বাড়ি ফিরে তাঁরা দেখেন মেয়ের ঝুলন্ত দেহ ৷
বীরহাটা গ্রামের এই খবর ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি ৷ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ভিড় করেন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ চলতে থাকে আলোচনা ৷ মেয়েটি কি আত্মহত্য়া করেছে, নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ, আপাতত সেই বিষয়টি জানতে উৎসুক পরিবার-পরিজন-পড়শিরা ৷
সবং থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ৷ ময়নাতদন্ত হয় ৷ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সবংয়ের এসডিপিও গোবিন্দ শিকদার ৷ তবে পুলিশ এখনও পর্যন্ত এই ঘটনা নিয়ে কিছু জানায়নি ৷ তবে পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, মোবাইল গেমের আসক্তিতে এমন করুণ পরিণতি হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তের পর মনে করা হচ্ছে ৷
সত্যিই কি মোবাইলে আসক্তির (Mobile Game Addiction) জেরে আত্মহত্যা করল বীরহাটার মাম্পি খাটুয়া ? উত্তর নেই পরিবারের কাছে ৷ তার বাবা পূর্ণচন্দ্র খাটুয়া জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়িতে দু’টি মোবাইল ৷ একটি তিনি ব্যবহার করেন ৷ দ্বিতীয়টি তাঁর স্ত্রী ৷ ওই মোবাইলেই বুঁদ হয়ে থাকত মাম্পি ৷
পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, মাম্পির মায়ের মোবাইলে অনেক গেম ডাউনলোড করা ছিল ৷ মাম্পি সেগুলি নিয়েই ব্যস্ত থাকত বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে ৷
তাহলে কি মোবাইল ব্যবহারে বাধা দেওয়াতেই কি আত্মহত্যা ? পূর্ণচন্দ্র খাটুয়া জানালেন, পরীক্ষার আগে মোবাইল ব্যবহার নিয়ে বকাবকি করা হত ৷ কিন্তু পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়ায় আর তাকে বাধা দেওয়া হত না ৷
তাহলে কী এমন ঘটল যে চরম সিদ্ধান্ত নিল 9 বছরের মাম্পি ? তার বাবার দাবি, রবিবার তিনি চাষের খেতে কাজ করতে গিয়েছিলেন ৷ পরে বাড়িতে ফোন করেন স্ত্রীকে ডাকার জন্য ৷ যে সময় ফোন করেছিলেন, তখন মাম্পি মোবাইলে ব্যস্ত ছিল ৷ তাই ফোন ধরতে দেরি হয়ে যায় ৷ এই নিয়ে তাঁর স্ত্রী মেয়েকে বকাবকি করেন ৷ মোবাইল নিয়ে চাষের জমির উদ্দেশে রওনা দেন ৷ তার পর বাড়ি ফিরে দেখেন রান্নাঘরে ঝুলছে মাম্পির নিথর দেহ ৷
আরও পড়ুন : Courts Verdict on Acid Attack : 17 বছর পর অ্যাসিড হামলার রায়, জেল ও জরিমানা 4 অভিযুক্তের
এই ঘটনাকে যথেষ্ট আশঙ্কার বলে মনে করছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ ৷ কারণ, গত 20 দিনে সবং থানা এলাকায় মোবাইলে আসক্তির জেরে এমন অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা এই নিয়ে দু’টি হল ৷ গত এক মাসের মধ্যে জেলায় এই ধরনের ঘটনা আরও একটি ঘটেছে ৷