কেশপুর, 7 জুন : কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী এক প্রতিবাদ সভার মঞ্চ থেকে কেশপুরের তৃণমূল নেতা মহম্মদ রফিকের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছিল সোমবার ৷ অভিযোগ, ওই তৃণমূল নেতার মন্তব্যের চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা ঘটল কেশপুরে (clash in Keshpur after alleged provocative comment of TMc leader)। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে 10 জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক । আহতদের ভর্তি করা হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে । যদিও এই ঘটনাকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে মানতে রাজি নয় শাসকদল ৷
সোমবার কেশপুরের কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে তৃণমূল কংগ্রেসের বিক্ষোভ সমাবেশ হয় । এই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ রফিক ৷ অভিযোগ, এই সভা থেকে একাধিক উত্তেজক মন্তব্য করেন ওই তৃণমূল নেতা ৷ পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, "মাত্র আধ ঘণ্টার জন্য এসি ঘরে রেস্ট নিন ৷ বাকিটা আমাদের হাতে ছেড়ে দিন । কেশপুর-আনন্দপুরের মাটিতে যা খেলা হবে তা বিরোধীরা সহজে টের পাবে।"
অভিযোগ, তাঁর এই মন্তব্যের পরেই মঙ্গলবার ভোর থেকে কেশপুর ব্লকের 10 নম্বর অঞ্চলের অন্তর্গত গরগোজপোতা গ্রামে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ লেগে যায় । আহত হয়েছেন তিন মহিলা, এক শিশু-সহ মোট 10 জন ৷ লাঠির আঘাতে মাথা ফেটে গিয়েছে এক তৃণমূল কর্মীর ৷ আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে কেশপুর থানার পুলিশ । চোট গুরুতর হওয়ায় 4 জনকে ইতিমধ্যেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে ৷ এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী ৷ সোমবার গভীর রাতে ওই এলাকায় একাধিক বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলেও অভিযোগ ৷
আরও পড়ুন : সিবিআই দফতরে অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী
তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান অজিত মাইতি এই ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠাদ্বন্দ্বের বিষয়টি মানতে চাননি ৷ তিনি বলেন,"আসল ব্যাপার হল এখন সমস্ত গ্রামগঞ্জে সবাই তৃণমূল । পারিবারিক ও পাড়ার গন্ডগোলকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে প্রচার করছে বিরোধীরা ৷ তবে পুলিশকে বলেছি নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে ৷ দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে । যদিও পুলিশ নিরপেক্ষভাবেই কাজ করছে ।" এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে বিজেপি ।
ঘাটাল বিজেপি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তন্ময় দাস বলেন, "এখন সরকারি টাকা আত্মসাতের জন্য তৃণমূলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে । তাই ভাগবাটোয়ারা নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছে ৷ তার সঙ্গে তৃণমূলের নেতারা যেভাবে উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখছেন তাতে সাধারণ মানুষ আহত ও আক্রান্ত হচ্ছে । আমরা দাবি করছি ওই সমাবেশে থাকা মহম্মদ রফিক এবং মন্ত্রী শিউলি সাহাকে উস্কানিমূলক বক্তব্যের জন্য গ্রেফতার করতে হবে । যদিও এই ঘটনাযর পরেও নিজের বক্তব্য থেকে সরে আসেননি ওই তৃণমূল নেতা মহম্মদ রফিক । তাঁর দাবি,তিনি যা বক্তব্য রেখেছেন তা উস্কানিমূলক নয় । পারিবারিক গন্ডোগোলকেও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে প্রচার করা হচ্ছে ৷