মেদিনীপুর, 11 এপ্রিল: কুড়মিদের আন্দোলনে রেলের প্রচুর সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে ৷ রেলের এই ক্ষতির জন্য দায়ী রাজ্য সরকার ৷ মঙ্গলবার মেদিনীপুরে এসে ঠিক এভাবেই মমতা সরকারকে বিঁধলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ । এরই সঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় তকমা হারানো প্রসঙ্গে তিনি মত প্রকাশ করেন ৷ বলেন, "তৃণমূলের স্বপ্ন অধরা থেকে গেল ।"
প্রসঙ্গত, নানা দাবি দাওয়া নিয়ে কিছুদিন অন্তর লাগাতার আন্দোলনে নামছে কুড়মি সমাজ ৷ সম্প্রতি এই আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজনেরা পুরুলিয়ার খেমাশুলি ও কুস্তাউর রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় ৷ তারা রাজ্য সরকারের সঙ্গে নিজেদের দাবি দাওয়া নিয়ে কথা বলতে চায় ৷ কুড়মিদের আন্দোলনের জেরে রেলপথ অবরুদ্ধ হয় ৷ বহু ট্রেন ঘুরপথে চালানো হয় ৷
ওই আন্দোলনের জেরে রেলের বহু টাকা লোকসানে রাজ্য সরকারকেই দায়ী করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি । মঙ্গলবার রেলের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে মেদিনীপুর লোকসভার সাংসদ দিলীপ ঘোষ জানান, এই ধরনের আন্দোলন পশ্চিমবাংলায় বেশি হয় । সিএএ নিয়ে, নুপূর শর্মার ঘটনা নিয়ে, রেলকেই বেশি টার্গেট করা হয়েছে । আর সম্প্রতি আদিবাসী কুড়মি সম্প্রদায়ের যে আন্দোলন তাতেও রেলকেই টার্গেট করা হচ্ছে ৷ রেলের সম্পত্তি নষ্ট করা হচ্ছে । এর সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব এখানকার সরকারের ।
তিনি বলেন, "সুরক্ষা দেওয়া তো ছেড়ে দিন, তারা নেগোসিয়েশন পর্যন্ত করে না । কথা পর্যন্ত বলেন না, কলকাতাতে জায়গায় জায়গায় ধরনা চলছে ৷ কেউ দিল্লি চলে যাচ্ছে । তাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করতে দেখা যায়নি । যার ফলে নিত্যদিন লোকেদের জেদ বাড়ছে, তারা আন্দোলন করছে । রাজ্য সরকারের কথা বলার যদি মানসিকতা না থাকে তাহলে এই ধরনের সমস্যা বাড়বে ।"
এরপর তৃণমূলের জাতীয় দলের তকমা হারানো প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, "এটা হওয়ার ছিল । কারণ সারা ভারতবর্ষের তিন চারটি রাজ্যে বিশেষ পরিমাণে সিট বা ভোট পেতে হয় । কোথাও কোথাও পেয়েও ছিল ওরা । কিন্তু পশ্চিমবাংলায় যে ধরনের প্রশাসন চলছে, স্বৈরাচারী শাসন, হিংসার রাজনীতি হচ্ছে, দুর্নীতি হচ্ছে । এটা দেখে সারা ভারতবর্ষের লোক বুঝে গিয়েছে তৃণমূল কী ! সেজন্য তাদের আর ভোট দিচ্ছে না, সেজন্য সেই স্বপ্ন অসম্পূর্ণ থাকবে । প্রধানমন্ত্রী হওয়া বা দেশের রাজত্ব করা, এখন সেটা আর হবে না ।"
আরও পড়ুন: কুড়মিদের অবরোধে ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ঘিরে উত্তেজনা