ETV Bharat / state

অন্য় পাড়ায় গেলেই শুনতে হচ্ছে ভাইরাস ছড়াতে এসেছি...

কোরোনা সংক্রমণের জেরে ছেদ পড়েছে ব্যবসায় । সংক্রমণের আশঙ্কায় অন্য গ্রামেও নিজেদের তৈরি জিনিস বিক্রি করতে যেতে পারছেন না বাঁশ শিল্পীরা । তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে । কীভাবে চলবে সংসার ? চিন্তায় ঘুম উড়েছে শিল্পীদের ।

Bamboo artists
Bamboo artists
author img

By

Published : Jul 31, 2020, 4:32 PM IST

মেদিনীপুর, 31 জুলাই : কোরোনার থাবা হস্ত শিল্পে । লকডাউনের জেরে বেহাল দশা বাঁশ শিল্পেরও । বন্ধ কাজ । দিনরাত এক করে আর বোনা হচ্ছে না ঝুড়ি, বেত, কুলো, ডিঙি, হাঁড়ি-কুড়ি । আধপেটা খেয়েই দিন কাটাচ্ছেন বাঁশ শিল্পীরা ।

মেদিনীপুর সদরের 15 কিলোমিটারের মধ্যে কেরানিচটির শিরোমনি গ্রাম-পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কালন্দি গ্রাম । বেশিরভাগ অনগ্রসর জাতিভুক্ত পরিবার পুরুষ ও মহিলারা বাঁশ কেটে এনে বাঁশের ঝুড়ি, বেত, কুলা, ধামা তৈরি করেন । এরপর সেই বাঁশের তৈরি হস্তশিল্পের জিনিস হাটে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন তাঁরা । কিন্তু, কোরোনার সংক্রমণে ছেদ পড়েছে ব্যবসায় । আগে বাঁশের তৈরি এ'সব জিনিস খুব সহজেই বিক্রি হত । গ্রামে-গ্রামে গিয়ে বিশেষত মেলায় ও হাট-বাজারে এই বাঁশের ঝুড়ি কুলোর চাহিদাও ছিল যথেষ্ট । তবে, লকডাউনের জেরে এখন বিক্রিবাটা একেবারেই বন্ধ । সংক্রমণের ভয়ে অন্য গ্রামেও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না শিল্পীদের । তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে । বাস, রেল বন্ধ থাকায় অন্য জেলায় রপ্তানিও করা যাচ্ছে না এই সামগ্রী । শিল্পীদের ঘরেই পড়ে রয়েছে বাঁশের ঝুড়ি । আশঙ্কায় দিন কাটছে শিল্পীদের ।

লকডাউনের আগে প্রতিদিন এক-একটি ঝুড়ি বিক্রি করে 30 থেকে 40 টাকা পেতেন শিল্পীরা । বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানে মাত্র 10 টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা । তা-ও খদ্দের নেই বললেই চলে । সাধারণত পুজোর মরসুমে এই শিল্পের বাজার জমে ওঠে, বিক্রিবাটা হয় দেদার । কিন্তু, এখন দু'বেলা দু'মুঠো ভাত জোটাতে হিমশিম খাচ্ছেন এই কালন্দি গ্রামের মানুষজন । লকডাউনের প্রথম দিকে বেশ কিছু সংস্থা তাঁদের চাল, ডাল, আলু দিয়ে সাহায্য করেছিল । বন্ধ হয়ে গিয়েছে সেগুলিও । সরকারি সাহায্য বলতে রেশনের চাল আর আটা ছাড়া কিছুই জোটেনি । এই অবস্থায় সরকারি সাহায্যের দিকেই তাকিয়ে বাঁশ শিল্পীরা ।

বেহাল দশা বাঁশ শিল্পের

যমুনা কালন্দি নামে এক শিল্পী বলেন, "ছোট থেকেই এই বাঁশের হস্তশিল্পের ওপর নির্ভরশীল । বাঁশ কেটে এনে তা ছাড়িয়ে তার থেকে বাঁশের যাবতীয় জিনিস তৈরি করি । এসব জিনিস বিক্রি করে ভালো টাকা পাওয়া যায় । কিন্তু কোরোনা সংক্রমণের জেরে বাজার বন্ধ । জিনিস বিক্রি করতে পারছি না । প্রতিদিন প্রচুর ক্ষতি হচ্ছে ।" "রেশনের চাল, আটাটুকু ছাড়া কিছুই জোটেনি কপালে," অভিযোগ বাঁশ শিল্পী অনুপা কালন্দির । আরও এক শিল্পী কুসুম কালন্দি বললেন, "এখন বাঁশ আনতে অন্য গ্রামে গেলে লোক তাড়া করছে । বলছে আমরা নাকি কোরোনা ভাইরাস গ্রামে ছড়িয়ে দেব । আশেপাশে গ্রামে ঢুকতে দিচ্ছে না আমাদের ।"

পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অংশে ছড়িয়ে রয়েছে এই বাঁশের হস্তশিল্প । জঙ্গলমহল এলাকায় গড়বেতা, চন্দ্রকোনা, শালবনি, ঘাটাল, দাসপুর, কেশপুরে এই শিল্পের ওপর নির্ভরশীল বহু পরিবার । গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় দেড় থেকে দু'হাজার পরিবার এই হস্তশিল্পের ওপরই জীবিকা নির্বাহ করেন । লকডাউন শিথিল হলেও পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে জানেন না কেউ । সরকারি সাহায্যের অপেক্ষাতেই রয়েছেন জেলার বাঁশশিল্পীরা ।

মেদিনীপুর, 31 জুলাই : কোরোনার থাবা হস্ত শিল্পে । লকডাউনের জেরে বেহাল দশা বাঁশ শিল্পেরও । বন্ধ কাজ । দিনরাত এক করে আর বোনা হচ্ছে না ঝুড়ি, বেত, কুলো, ডিঙি, হাঁড়ি-কুড়ি । আধপেটা খেয়েই দিন কাটাচ্ছেন বাঁশ শিল্পীরা ।

মেদিনীপুর সদরের 15 কিলোমিটারের মধ্যে কেরানিচটির শিরোমনি গ্রাম-পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কালন্দি গ্রাম । বেশিরভাগ অনগ্রসর জাতিভুক্ত পরিবার পুরুষ ও মহিলারা বাঁশ কেটে এনে বাঁশের ঝুড়ি, বেত, কুলা, ধামা তৈরি করেন । এরপর সেই বাঁশের তৈরি হস্তশিল্পের জিনিস হাটে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন তাঁরা । কিন্তু, কোরোনার সংক্রমণে ছেদ পড়েছে ব্যবসায় । আগে বাঁশের তৈরি এ'সব জিনিস খুব সহজেই বিক্রি হত । গ্রামে-গ্রামে গিয়ে বিশেষত মেলায় ও হাট-বাজারে এই বাঁশের ঝুড়ি কুলোর চাহিদাও ছিল যথেষ্ট । তবে, লকডাউনের জেরে এখন বিক্রিবাটা একেবারেই বন্ধ । সংক্রমণের ভয়ে অন্য গ্রামেও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না শিল্পীদের । তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে । বাস, রেল বন্ধ থাকায় অন্য জেলায় রপ্তানিও করা যাচ্ছে না এই সামগ্রী । শিল্পীদের ঘরেই পড়ে রয়েছে বাঁশের ঝুড়ি । আশঙ্কায় দিন কাটছে শিল্পীদের ।

লকডাউনের আগে প্রতিদিন এক-একটি ঝুড়ি বিক্রি করে 30 থেকে 40 টাকা পেতেন শিল্পীরা । বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানে মাত্র 10 টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা । তা-ও খদ্দের নেই বললেই চলে । সাধারণত পুজোর মরসুমে এই শিল্পের বাজার জমে ওঠে, বিক্রিবাটা হয় দেদার । কিন্তু, এখন দু'বেলা দু'মুঠো ভাত জোটাতে হিমশিম খাচ্ছেন এই কালন্দি গ্রামের মানুষজন । লকডাউনের প্রথম দিকে বেশ কিছু সংস্থা তাঁদের চাল, ডাল, আলু দিয়ে সাহায্য করেছিল । বন্ধ হয়ে গিয়েছে সেগুলিও । সরকারি সাহায্য বলতে রেশনের চাল আর আটা ছাড়া কিছুই জোটেনি । এই অবস্থায় সরকারি সাহায্যের দিকেই তাকিয়ে বাঁশ শিল্পীরা ।

বেহাল দশা বাঁশ শিল্পের

যমুনা কালন্দি নামে এক শিল্পী বলেন, "ছোট থেকেই এই বাঁশের হস্তশিল্পের ওপর নির্ভরশীল । বাঁশ কেটে এনে তা ছাড়িয়ে তার থেকে বাঁশের যাবতীয় জিনিস তৈরি করি । এসব জিনিস বিক্রি করে ভালো টাকা পাওয়া যায় । কিন্তু কোরোনা সংক্রমণের জেরে বাজার বন্ধ । জিনিস বিক্রি করতে পারছি না । প্রতিদিন প্রচুর ক্ষতি হচ্ছে ।" "রেশনের চাল, আটাটুকু ছাড়া কিছুই জোটেনি কপালে," অভিযোগ বাঁশ শিল্পী অনুপা কালন্দির । আরও এক শিল্পী কুসুম কালন্দি বললেন, "এখন বাঁশ আনতে অন্য গ্রামে গেলে লোক তাড়া করছে । বলছে আমরা নাকি কোরোনা ভাইরাস গ্রামে ছড়িয়ে দেব । আশেপাশে গ্রামে ঢুকতে দিচ্ছে না আমাদের ।"

পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অংশে ছড়িয়ে রয়েছে এই বাঁশের হস্তশিল্প । জঙ্গলমহল এলাকায় গড়বেতা, চন্দ্রকোনা, শালবনি, ঘাটাল, দাসপুর, কেশপুরে এই শিল্পের ওপর নির্ভরশীল বহু পরিবার । গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় দেড় থেকে দু'হাজার পরিবার এই হস্তশিল্পের ওপরই জীবিকা নির্বাহ করেন । লকডাউন শিথিল হলেও পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে জানেন না কেউ । সরকারি সাহায্যের অপেক্ষাতেই রয়েছেন জেলার বাঁশশিল্পীরা ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.