কাঁকসা, 6 মে : পরিকল্পিনা মাফিক খুন করা হয় এক যুবতিকে ৷ অভিযুক্ত ওই যুবতির স্বামী ৷ যুবতির 6 বছরের পুত্রসন্তানের সাক্ষ্যে পরিষ্কার হয়, পরিকল্পিতভাবেই যুবতিকে খুন করে তাঁর স্বামী ৷ আজ সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কাঁকসার শেরপুরে ৷
মৃত ওই যুবতির নাম ঝুমা টুডু বাগদি (29) ৷ বাড়ি পানাগড় রেলপাড় এলাকায় । তাঁর স্বামীর নাম প্রশান্ত বাগদি ৷ বাড়ি সিলামপুরে ৷ বছর দশেক আগে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল ৷ বিয়ের পর থেকে তাঁরা শেরপুরে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন ৷ ঝুমার বাবার বক্তব্য, বিয়ের পর থেকেই তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ লেগেই ছিল ৷ প্রশান্ত একটি পোলট্রি ফার্ম করেছিল কাঁকসার ঝিনুকগড় গ্রামে । দেনার দায়ে জর্জরিত প্রশান্তর পাশে দাঁড়ানোর জন্য ঝুমা অন্ডালে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে আয়ার কাজ শুরু করেছিলেন ৷ কিন্তু অভিযোগ, প্রশান্ত মাঝেমধ্যেই ঝুমাকে সন্দেহবশত মারধর করত ৷
আজ সকাল 6টা নাগাদ কাঁকসা থানার পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে পৌঁছায় ৷ পুলিশ ঝুমার বাড়ি পৌঁছে দেখে ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে ঝুমার মৃতদেহ ৷ তাঁর গলায় রয়েছে ফাঁসের দাগ । আর ঝুমার মৃতদেহের পাশে বসে অঝোরে কাঁদছে তাঁর 3 বছরের মেয়ে ও 6 বছরের ছেলে । এরপরই পুলিশ তাঁর শিশুপুত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ৷ আর তাতেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য । ওই শিশু পুলিশকে বলে, "আজ ভোর 5টা নাগাদ আমি পাশের ঘরে যখন শুয়ে ছিলাম খুব জোরে আওয়াজ পাই । আমি যখন মা-বাবার ঘরে যাই তখন দেখি মা মেঝেতে পড়ে রয়েছে ৷ আর বাবাকে দেখলাম বাইক নিয়ে বেরিয়ে গেল । আমি বাবাকে মায়ের ফোন থেকে ফোন করি ৷ বাবা পাশের বাড়ির কাকুকে ডাকতে বলে । বাবা সেই মুহুর্তেই ঘরে আসে ।" অথচ প্রশান্তর বক্তব্য, রাতের বেলায় তাঁদের বাড়িতে চোর এসেছিল ৷ ঘরের লন্ডভন্ড করা আলমারিটি দেখিয়ে পুলিশের কাছে তিনি দাবি করেন, চোর তাঁর স্ত্রীকে খুন করেছে ৷ এছাড়াও প্রশান্ত যে পরিকল্পিতভাবেই খুন করে ঝুমাকে তার আরও একটি প্রমাণ হাতে পায় পুলিশ ৷ মাস দুয়েক আগেই প্রশান্ত ঝুমার নামে লাইফ ইনসিওরেন্স কর্পোরেশনে 5 লাখ টাকার বিমা করেছিল ৷
আজ সকালে ঝুমার মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রশান্তের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছেন ৷ ঝুমার বাবার অভিযোগ, দাম্পত্য কলহ চরমে পৌঁছানোয় পরিকল্পিতভাবেই তাঁর মেয়েকে প্রশান্ত খুন করেছে ৷ পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় ৷ প্রশান্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ৷ দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে ৷