আসানসোল , 9 এপ্রিল : সালানপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে রুক্ষ পাথুরে মাঠেই ফুটবলের প্রশিক্ষণ শুরু। তারপর থেকেই গড়ে উঠেছিল মহিলাদের ফুটবল ক্লাব । আর সেই ক্লাব থেকে বহু কিশোরী জাতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করেছে । আজ এই লকডাউনের পরিস্থিতিতে সেই গ্রামগুলিতে অভাবের অন্ধকার নেমে এসেছে । এমনকী, জাতীয় দলে খেলা ফুটবলারদের দু'বেলা খাবার পর্যন্ত জুটছে না । সেই খবর পেয়ে মহিলা ফুটবলারদের পাশে দাঁড়াল বার্নপুরের নববিকাশ ক্লাব । আজ তারা ফুটবলারদের হাতে ত্রাণ তুলে দেয় ৷
সালানপুর ব্লকের রূপনারায়ণপুর সংলগ্ন মালবহল গ্রাম । এই গ্রামেই গড়ে উঠেছে মহিলাদের ফুটবল ক্লাব । 2014 থেকে সালানপুরের এই মালবহল গ্রামের পাথুরে জমিতে 50 জন মহিলা ফুটবলার প্র্যাকটিস করে । আশেপাশের গ্রাম সামডি, বোলকুন্ডা, লালগড় থেকে মেয়েরা আসেন । বেশিরভাগ মেয়েদের পরিবারই দুস্থ , নিম্নবিত্ত । তপশিলী জাতি , উপজাতি শ্রেণিভুক্ত এই কিশোরীদের বাবারা কেউ দিনমজুর , নয়তো ছোটোখাটো ব্যবসা করেন । হিন্দুস্থান কেবেলস কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সংসার আরও অচল হয়েছে । কিন্তু ফুটবল ছাড়েনি ওই কিশোরীরা । কোচ সঞ্জীব বাউরি-র তত্ত্বাবধানে সুপ্রিয়া হাঁসদা , মোনালিসা মারান্ডি , পূজা মুর্মু , কবিতা হেমব্রম , রুপালি বাউরি ,মারিয়া ব্রেনসি , পূর্ণিমা মুর্মু একাধিকবার জাতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করেছেন । কিন্তু তারপরেও এই লকডাউনে কষ্টে আছে এই ফুটবলার ও তাঁদের পরিবার । বার্নপুরের ক্রীড়াপ্রেমী ক্লাব “নববিকাশ” এই খবর জেনেই আজ ওই মালবহল গ্রামে যায় । 50 জন মহিলা ফুটবল খেলোয়াড়ের হাতে ত্রাণ তুলে দেয় । ত্রাণের প্যাকেটে ছিল পাঁচ কেজি চাল, দুই কেজি আলু , এক কেজি পেঁয়াজ , এক প্যাকেট বিস্কুট , এক প্যাকেট মুড়ি , এক প্যাকেট সয়াবিন , এক প্যাকেট লবন , 500 গ্রাম চিনি , 500 গ্রাম ডাল , 200 গ্রাম সরষের তেল , একটি করে গায়ে মাখার ও কাপড় কাচার সাবান ।
নববিকাশ ক্লাবের সম্পাদক বাপ্পা তালুকদার বলেন , “আমরা ক্লাবের পক্ষ থেকে এখানে অনুশীলন করা সব মহিলা ফুটবলারকেই ত্রাণ তুলে দিয়েছি । আগামী দিনেও সবরকমভাবেই তাঁদের পাশে আছি । ওঁরা যেন অনুশীলন বন্ধ না করেন ।”
তবে শুধু মহিলা ফুটবল দলকেই নয় , লকডাউন চলাকালীন বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দুস্থ মানুষদের বিশেষ ত্রাণ তুলে দিচ্ছে নববিকাশ । কমপক্ষে 500 জনকে এই ত্রাণ দিয়েছে তারা । মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলেও নববিকাশ ক্লাব 60 হাজার টাকা দান করেছে ।