আসানসোল, 10 ফেব্রুয়ারি: যাত্রী সুরক্ষা আরও নিশ্চিত করতে এবং দুর্ঘটনা এড়াতে পূর্ব রেলের (Eastern Railway) আসানসোল রেল ডিভিশনে লাগানো হয়েছে হুইল ইমপ্যাক্ট লোড ডিটেক্টর (Wild System)। আসানসোল রেল ডিভিশনের পানাগড় রেল স্টেশনের এলসি গেটের কাছে এই হুইল ইমপ্যাক্ট লোড ডিটেক্টর লাগানো হল। আসানসোল রেল ডিভিশনে এটাই প্রথমবার এই সিস্টেম লাগানো হয়েছে। ট্রেনের চাকা বিকল হলে বা কোনও রকমের সমস্যা দেখা দিলে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের সাহায্যে এই সিস্টেম তৎক্ষণাৎ ডিভিশনে খবর পাঠাবে। ফলে এড়ানো যাবে দুর্ঘটনা।
হুইল ইমপ্যাক্ট লোড ডিটেক্টর আসলে কী-
হুইল ইমপ্যাক্ট লোড ডিটেক্টর আসলে এমন একটি সিস্টেম, যার সাহায্যে ট্রেনের চাকায় কোনও সমস্যা রয়েছে কি না, তা জানা যায়। ট্রেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল চাকা। চাকা ঘর্ষণে ক্ষয়ে যেতে পারে, চাকা ভেঙেও যেতে পারে, এছাড়াও চাকা জ্যাম হয়ে যেতে পারে। উচ্চগতি, ওজন ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। হুইল ইমপ্যাক্ট লোড ডিটেক্টর এমন একটি সিস্টেম যার সাহায্যে চাকা সঠিকভাবে রেললাইনে স্পর্শ করছে কি না, বোঝা যায়। এই সিস্টেমের একটি সেন্সর রেললাইনে লাগানো থাকে। সেই সেন্সর চাকার চাপ বা ওজনের ডাটা পাঠায় কম্পিউটারে।
রেল ট্র্যাকে চাকার সম্পূর্ণ চাপের রেকর্ড স্থির থাকে। যদি চাকা কোনও কারণে ক্ষয়ে যায়, কিংবা চাকার মধ্যেংশ ভেঙে যায় বা অন্য কিছুভাবে চাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে রেললাইনের ওই অংশে সঠিক অর্থে চাপ পড়বে না। তখনই বোঝা যাবে যে সেই চাকাটি খারাপ রয়েছে। রেল চললেই দ্রুততার সঙ্গে রেলের চাকার ওজনের কম্পিউটারের মাধ্যমে হিসেব-নিকেশ চলতে থাকে। কিছু গরমিল বা তারতম্য পেলেই ডিভিশনের কন্ট্রোলরুমে খবর পাঠাবে অমুক ট্রেনের অমুক চাকা খারাপ। ফলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এর ফলে বড়সড় দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে বলে আসানসোল রেল ডিভিশন সূত্রে খবর।
পানাগড়েই কেন লাগানো হল এই সিস্টেম-
আসানসোল রেল ডিভিশনের শুরু পানাগড় এলাকা থেকেই। এই ডিভিশন একেবারে বিহার পর্যন্ত বিস্তৃত। পানাগড়ে এই কারণেই লাগানো হয়েছে যে আসানসোল ডিভিশনের মধ্যে কোনও ট্রেন ঢুকলেই সেই ট্রেনের চাকায় যদি কোনও সমস্যা থাকে তাহলে তৎক্ষণাৎ ডিভিশন ব্যবস্থা নিতে পারবে। অন্যদিকে, আসানসোল রেল ডিভিশনের অণ্ডালেই রয়েছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় রেল ইয়ার্ড। যেখানে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে মালগাড়ি ঢোকে। মালবহনকারী এবং অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চলাচল করা মাল গাড়িগুলির চাকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
আরও পড়ুন: চলছে বর্ধমান জংশনের ওভারব্রিজ ভাঙার কাজ, বাতিল পূর্বরেলের বহু ট্রেন
ফলে সেই মাল গাড়িগুলির চাকার উপর নির্দিষ্ট নজর রাখা যাবে। অণ্ডালে ঢোকার আগেই পানাগড়ে মালগাড়ির চাকায় সমস্যা থাকলে তা বুঝে নেওয়া যাবে। আগামিদিনে আসানসোল রেল ডিভিশনের ঝাড়খণ্ডের জসিডি স্টেশনেও এই হুইল ইমপ্যাক্ট লোড সিস্টেম বা ডিটেক্টর সিস্টেম লাগানোর কথাবার্তা রয়েছে বলে আসানসোল রেল ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে। যাত্রী সুরক্ষায় আরও এক ধাপ আসানসোল রেল ডিভিশনের ৷