আসানসোল, 26 মে : একমাস আগেই এক বোনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছিল ৷ সেবারও কাউকে কিছু না জানিয়ে মৃতদেহ সৎকার করে দিয়েছিলেন দাদা ৷ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে যাচ্ছিল বুধবার ৷ অভিযোগ, এদিন অন্য এক বোনেরও মৃতদেহ চুপিসাড়ে সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করছিলেন ওই ব্যক্তি ৷ তা দেখতে পেয়ে আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা ধরে ফেলেন প্রয়াত দুই বোনের দাদাকে ৷ কীভাবে মৃত্য়ু হল বোনের ? তা ওই ব্য়ক্তির কাছে জানতে চান তাঁরা ৷ সদুত্তর না পেয়ে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আসানসোলের সারদা পল্লির ঘটনায় বাড়ছে রহস্য় ৷ প্রয়াত মহিলার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ৷
আসানসোলের সারদা পল্লি এলাকারই বাসিন্দা বিধানচন্দ্র পাল ৷ বাবা, মা আগেই মারা গিয়েছেন ৷ বিধানের সঙ্গে থাকতেন তাঁর দুই অবিবাহিত বোন শম্পা ও সিমা ৷ গত 14 এপ্রিল শম্পা পাল মারা যান ৷ বিধান কাউকে কিছু না জানিয়েই শম্পা পালের দেহ সৎকার করে দেন ৷ তাঁর এই আচরণে সন্দেহ হয়েছিল আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের ৷ তবে তখন এ নিয়ে বড় কোনও হইচই হয়নি ৷
এদিকে, বুধবার সকালে বিধান আবারও একইভাবে তাঁর আর এক বোন সিমা পালের (47) মৃতদেহ সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ ৷ প্রায় দেড় মাসের ব্য়বধানে দুই বোনের এই মৃত্যু নিয়ে দানা বাঁধে রহস্য ৷ কীভাবে মৃত্য়ু হল বোনের, তার কোনও জবাব দিতে পারেননি বিধানও ৷ এরপরই তাঁকে আটকান প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা ৷ তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় ৷ মৃতদেহ পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য ৷
বিধান পালের খুড়তুতো ভাই প্রণব পালের মতে, ‘‘এক-দেড়মাসের মধ্যে দুই বোনের এভাবে মৃত্যু হওয়াটাই সন্দেহজনক ৷ তাই আমরা ওঁকে আটকেছি ৷ পোস্টমর্টেম হোক ৷ মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানার পরেই দেহ সৎকার করা হবে ৷’’
আরও পড়ুন : টাকা চেয়ে না পেয়ে মাকে খুন, গ্রেফতার ছেলে
প্রণবের দাবি, বিধান অনলাইনে লটারি খেলেন ৷ সেখানে টাকা খুইয়ে বাড়ি-ঘরও বিক্রি করতে হয়েছে তাঁকে ৷ সেই ঘটনার সঙ্গে দুই বোনের মৃত্যুর কোনও যোগ রয়েছে কিনা, তা ভাবাচ্ছে মৃতদের আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের ৷
যদিও বিধান পালের দাবি, ‘‘হার্টফেল করে আমার বোন মারা গিয়েছে ৷ আমার কাছে ডেথ সার্টিফিকেটও আছে ৷ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে ৷ আমি নাকি বোনকে গলা টিপে মেরেছি ৷’’ ঘটনায় সন্দেহভাজন বিধানচন্দ্র পালকে আটক করেছে পুলিশ।