দুর্গাপুর, 16 ফেব্রুয়ারি : আদিবাসীদের প্রায় 15 ঘণ্টা আন্দোলনের চাপে শেষ পর্যন্ত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ 10 জন আদিবাসীকে চাকরিতে নিল । দু'মাসের মধ্যে বাকি 7 জনকে চাকরি দেওয়ার অঙ্গীকারও করে কর্তৃপক্ষ । দুর্গাপুরের বিজড়ায় 17 জন আদিবাসী যুবকের চাকরির দাবিতে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও স্যাটেলাইট টাউনশিপের মূল গেট ও রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করছিলেন কয়েকশো আদিবাসী । দফায় দফায় আলোচনার পর অবশেষে আদিবাসীদের দাবি মেনে নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । তবে এভাবে রাস্তায় গাছ ফেলে এবং 15 ঘণ্টা ধরে মেডিকেল কলেজের মূল গেট আটকে আদিবাসী আন্দোলনে পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্সকে কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকায় দেখা গেল ।
প্রসঙ্গত, বাম সরকারের আমলে দুর্গাপুরের বিজড়ায় দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার জন্য অধিগৃহীত জমি লিজ় নেয় তিনটি বেসরকারি সংস্থা । এই ফাঁকা জমিতে 132টি পরিবার চাষাবাদ করত । তার মধ্যে বেশ কিছু আদিবাসী পরিবারও ছিল । এই জমিতেই পরিকল্পনামাফিক বেসরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের উদ্বোধন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বর্তমানে এই জায়গায় আবাসন প্রকল্প ও স্যাটেলাইট টাউনশিপ গড়ে উঠেছে । ফাঁকা জমিতে চাষাবাদ করা 11 জন চাকরি পেলেও আরও 17 জন চাকরি পাননি । বর্ধমান জেলা আদিবাসী গাঁওতার পক্ষ থেকে বারংবার এই বেসরকারি সংস্থাকে 17 জনের চাকরির আবেদন করা হলেও তারা উচ্চবাচ্য না করায় অবরোধ শুরু করে আদিবাসীরা । প্রায় 15 ঘন্টা পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই 10 জনকে এবং 7 জনকে আগামী দু'মাসের মধ্যে কাজে নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় আদিবাসীরা ।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে CPI(M) পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, "রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে । অরাজকতা চলছে । এই নিয়ে খুব বেশি কিছু আর বলার নেই ।" BJP-র পশ্চিম বর্ধমান জেলার গুণীজন সেলের সভাপতি অমিতাভ বন্দোপাধ্যায় বলেন, "এ'সব শাসকদলের দ্বৈত মুখ । শাসকদলই এদের উস্কানি দিয়ে মদত দিয়ে এসব করিয়েছে । ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি করছে । মানুষ জবাব দেবে । অণ্ডালে জমি আন্দোলন নিয়েও একই ঘটনা ।" কিন্তু, এ'ভাবে রাস্তায় গাছ, বাঁশ ফেলে দীর্ঘ 15 ঘণ্টা হাসপাতালের গেট আটকে এইভাবে আন্দোলনকে কীভাবে মেনে নিয়ে পুলিশ চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকল? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন । প্রশ্ন উঠছে, দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করা যেতেই পারে । কিন্তু, আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির পরেও কেন চুপ প্রশাসন?