কুলটি, 11 অগস্ট: রেশনের খাদ্যশস্য বন্টনে বারবার গরমিল ওঠার অভিযোগ উঠেছিল আসানসোল পৌরনিগমের 63 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মহম্মদ সেলিম আখতারের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত সেই রেশন দোকানটি সিল করে দিল খাদ্য দফতরের আধিকারিকরা । অভিযুক্তের রেশন লাইসেন্সও সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে খাদ্য দফতর সূত্রে খবর।
ঘটনায় ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক জলঘোলা শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে খাদ্য দফতরের আধিকারিক দীপক মণ্ডল বলেন, "ওই রেশন দোকানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল ৷ তদন্তে গরমিল পাওয়ায় দোকানটিকে সিল করে দেওয়া হয়েছে। সাসপেন্ড করা হয়েছে লাইসেন্স।"
বিজেপির আসানসোলের সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, "গরু চুরি থেকে শুরু করে লোহা চুরি, কয়লা চুরি, সব কিছুই করেছে তৃণমূল। এর আগে চালচুরির অভিযোগও উঠেছে। এবার কেন্দ্র সরকারের দেওয়া 400 কুইন্টাল খাদ্যশস্যে দুর্নীতি করেছে তৃণমূলের কাউন্সিলর। এ কথা আমরা বলছি না, বলছে রাজ্য সরকারের পরিচালিত খাদ্য দফতর। অর্থাৎ এর থেকে প্রমাণিত তৃণমূলের সবাই চোর।"
বিষয়টি নিয়ে অস্বস্থিতে তৃণমূল নেতৃত্ব ও পৌরকর্তারা। আসানসোল পৌরনিগমের ডেপুটি মেয়র মহম্মদ ওয়াসম উল হক বলেন, "এরকম একটি বিষয় শুনতে পেয়েছি। গোটা বিষয়টি খাদ্য দফতরের তদন্ত সাপেক্ষ। তাই এই বিষয়ে আমি কিছু বলবো না। তবে বিজেপির কিছু মন্তব্য করা উচিত নয়। তৃণমূলে যাদের ওরা দুর্নীতিগ্রস্থ বলে, বিজেপিতে গেলে তারাই ওয়াশিং মেশিনে পরিষ্কার হয়ে যায়।" অন্যদিকে, যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই সেলিম আখতারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি ৷
জানা গিয়েছে, 63 নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত কুলটির রেলপার এলাকার স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর মহম্মদ সেলিম আখতারের একটি রেশন দোকান রয়েছে । মূলত, ওই এলাকায় সংখ্যালঘু মানুষদের বসবাস। দারিদ্র্যসীমার নিচে বহু পরিবার রয়েছে। ওই রেশন দোকানের উপরে নির্ভরশীল পরিবারগুলি। এর আগেও ওই রেশন দোকানের বিরুদ্ধে খাদ্যশস্য বন্টনে গরমিলের অভিযোগ উঠেছিল। তখন হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছিল কাউন্সিলরকে। কিন্তু পুনরায় বিরাট বড় অঙ্কের গরমিলের অভিযোগ ওঠে রেশন দোকানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে বন্টন না ক'রে কুইন্টাল কুইন্টাল খাদ্যশস্য সেখান থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে তা বাজারে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। আর এর পরেই নড়ে চড়ে বসে খাদ্য দফতর। অভিযান চালিয়ে তদন্তে গরমিল পেয়ে রেশন দোকানটিকে সিল করে দেওয়া হয় ৷
আরও পড়ুন: বরাদ্দকৃত খাদ্য সামগ্রী না পেয়ে রেশন দোকানে তালা চা শ্রমিকদের
পাশাপাশি অভিযুক্তের রেশন লাইসেন্স সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ পাশাপাশি 400 কুইন্টাল রেশন সামগ্রী কোথায় গেল তা জানতে অভিযুক্তকে শোকজও করা হয়েছে ৷ আগামী 7 দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ তদন্তে দোষ প্রমাণিত হলে আখতারের রেশন লাইসেন্স বাতিলও হতে পারে বলে জানা গিয়েছে খাদ্য দফতর থেকে ৷