ETV Bharat / state

দরিদ্রতা ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াইয়ের মাঝেই স্বর্ণপদকের স্বপ্ন দেখে অনামিকা

2013 সালে কলকাতায় রাজ্য প্যারা সাঁতার প্রতিযোগিতায় প্রথম । সেই থেকে যাত্রা শুরু । এরপর থেকে একের পর এক চোখ ধাঁধানো সাফল্য । জার্মানিতে গিয়ে দেশের হয়ে জেতেন পাঁচটি পদক ।

Durgapur news
অনামিকা গড়াই
author img

By

Published : Oct 20, 2020, 9:46 PM IST

দুর্গাপুর , 20 অক্টোবর: দুর্গাপুরের অনামিকা গড়াই । জন্মের দু'বছর পর থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াইয়ের পাশাপাশি আর্থিক অনটনের সঙ্গে লড়াই । আর এত সব প্রতিকূলতার মাঝেও বিশ্বমঞ্চে ভারতকে গর্বিত করেছে । দেশে ও বিদেশে সাঁতারের বিভিন্ন ইভেন্টে শারীরিকভাবে বিশেষভাবে সক্ষম অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী অনামিকা গড়াই বহু পদক পেলেও তার লক্ষ্য একটাই । লক্ষ্য- প্যারা অলিম্পিকে দেশের জন্য স্বর্ণপদক লাভ । লক্ষ্য- 50 মিটার ব্যাক স্ট্রোকে বিশ্ব রেকর্ড গড়া । কিন্তু, অনামিকার শারীরিক প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি তার স্বপ্নের পথে আজ প্রধান বাধা দরিদ্রতা ।

দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের বি-জ়োন আর্যভট্ট রোডের বাসিন্দা কিংশুক ও দোলা গড়াইয়ের একমাত্র মেয়ে অনামিকা গড়াই । সে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি বাংলা মাধ্যমের স্কুলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী । মাত্র দু'বছর বয়সে অনামিকার বাবা-মা জানতে পারেন, যে তাঁদের মেয়ে স্নায়ু রোগজনিত কারণে হাঁটাচলা করতে পারবে না । এমনকী তার দু'টি হাতও খুব বেশি সক্ষম নয় । অনামিকার বাবা সেই সময় বিভিন্ন অর্কেস্ট্রা দলে একজন গিটার শিল্পী হিসেবে কাজ করতেন । মা গৃহবধূ । চিকিৎসকরা বহু চেষ্টা চালিয়েও স্নায়ু রোগ থেকে অনামিকাকে মুক্তি দিতে পারেনি ।

Durgapur news
ফ্রেমবন্দী : 2014 ডিস্ট্রিক্ট মিট

শেষে একজন চিকিৎসক অনামিকার মা ও বাবাকে বলেন, তাদের মেয়েকে নিয়মিত ফিজ়িয়োথেরাপি করাতে । অনামিকার বাবা-মায়ের পক্ষে আর্থিক অনটনের কারণে নিয়মিত ফিজ়িয়োথেরাপি করানো হয়ে ওঠেনি । সেই সময় অনামিকার পিসি বলেন, তাকে সাঁতার শেখাতে । তাহলে সে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠবে ।

হার না মানা জেদ, স্বপ্ন দেখে প্যারা অলিম্পিকে সোনা জেতার

দুর্গাপুরের একটি সুইমিংপুলে জলে নেমে পড়ে অনামিকা গড়াই । তখন তার বয়স মাত্র 6 । ধীরে ধীরে অনামিকা একজন দক্ষ সাঁতারুর মতো সাঁতার কাটতে থাকে । প্রশিক্ষক ত্রিদেব ভট্টাচার্যর হাত ধরেই অনামিকার প্রথম সাঁতার শেখা । এরপর 2013 সালে কলকাতার কুমোরটুলিতে রাজ্য প্যারা সাঁতার প্রতিযোগিতায় নেমে সাফল্য পায় সে । তারপর থেকে আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি । 2017 সাল পর্যন্ত রাজ্য স্তরের প্যারা সুইমিং সমস্ত প্রতিযোগিতাতে শুধুই সাফল্য অনামিকা গড়াইয়ের । এরপর চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্স করা অনামিকা সাঁতারের জাতীয় প্রশিক্ষক প্রশান্ত কর্মকারের নজরে পড়েন । জাতীয় প্যারা সুইমিং প্রতিযোগিতায় প্রথম ইন্দোরে এরাজ্যের হয়ে তিনটি রৌপ্য পদক জয় করে।

পরের বছর কর্নাটকে রাজ্যের হয়ে দুটি স্বর্ণ এবং দুটি রৌপ্য পদক জয় করে অনামিকা । তার পরের বছর জয়পুরে তিনটি স্বর্ণপদক ও তার পরের বছর রাজস্থানে উদয়পুরে জাতীয় প্যারা সাঁতারের আসরে তিনটি স্বর্ণপদক এবং একটি ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে সে ।

এতদিন পর্যন্ত তার বাবা-মা আর্থিক অনটনের সঙ্গে লড়াই চালালেও অনামিকার জলের প্রতি এই ভালোবাসা যেন বন্ধ না হয় সেই চেষ্টা চালাচ্ছিলেন । কিন্তু জাতীয় স্তরে দারুণ সাফল্যের পর অনামিকার ডাক আসে জাকার্তায় এশিয়ান প্যারা সুইমিং চ্যাম্পিয়নশিপে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য । খুব কষ্ট করে তার মা-বাবা অনামিকাকে জাকার্তা পাঠালেও সেখানে কিছু কাগজপত্রে ত্রুটির কারণে জলে নামতে দেওয়া হয়নি তাকে । চোখের জল নিয়ে সে ফিরে আসে বাড়িতে ।

কিন্তু সেদিন আরও বড় সাফল্য পাওয়ার জেদ নিয়ে নিয়ে বাড়ি ফেরে সে । 2018 সালে জার্মানিতে আন্তর্জাতিক প্যারা সুইমিং চ্যাম্পিয়নশিপে চারটি বিভাগে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে অনামিকা । একটি স্বর্ণপদক ও পাঁচটি রৌপ্যপদক সহ মোট 6 টি পদক লাভ করে। তার লক্ষ্য ছিল- 2020 প্যারা অলিম্পিকে অংশ নেওয়া । কিন্তু প্যানডেমিক পরিস্থিতির কারণে তা বাতিল করা হয়েছে।

এদিকে মেয়েকে সাঁতারের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়াতে গিয়ে সমস্ত কিছু খুঁইয়েছে গড়াই পরিবার । অনামিকার মা দোলা গড়াই বলেন, "মেয়েকে নিয়ে আমার গর্বের শেষ নেই । কিন্তু আক্ষেপ- আমার মেয়ের জন্য কোনও সংস্থা বা সরকার কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। আমার আত্মীয় পরিজনরা কিছুটা সাহায্য করেছে । বাকি আর কেউ অনামিকার সাফল্যের জন্য আমাদের সাহায্য করেনি। আমি আমার সমস্ত গয়না বিক্রি করে দিয়ে আজ নিঃস্ব । বর্তমানে আমি অনামিকার জন্য একটি বেসরকারি সংস্থায় মহিলা নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করি ।"

অনামিকার বাবা কিংশুক গড়াই একজন ভালো গিটার বাদক । কিন্তু দীর্ঘ লকডাউনের কারণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি একটি বহুতল আবাসন প্রকল্পে নিরাপত্তাকর্মীদের সুপারভাইজ়ার হিসেবে কাজ করছেন । অভাবের সঙ্গে লড়াই করছে গড়াই পরিবার । আর ছোট্ট অনামিকার দু'চোখে শুধুই স্বপ্ন । দেশকে প্যারা অলিম্পিকে সোনা এনে দেওয়ার স্বপ্ন । শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তার কাছে আজ আর কোনও বাধা নয় । দুর্গাপুরের এই জলকন্যার চোখে রয়েছে বিশ্বরেকর্ড গড়ার স্বপ্ন । 50 মিটার ব্যাকস্ট্রোক তার সবচেয়ে প্রিয় ইভেন্ট । এই ইভেন্টে বিশ্বরেকর্ড থেকে মাত্র 10 সেকেন্ড পিছিয়ে আছে অনামিকা । এখনও পর্যন্ত 50 মিটার ব্যাকস্ট্রোক ইভেন্টে অনামিকার সেরা সময় 16 সেকেন্ড ।

অনামিকার বিষয়টি নিয়ে ETV ভারতের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে । মন্ত্রী লক্ষ্মীপুজোর পর অনামিকার পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন ।

দুর্গাপুর , 20 অক্টোবর: দুর্গাপুরের অনামিকা গড়াই । জন্মের দু'বছর পর থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াইয়ের পাশাপাশি আর্থিক অনটনের সঙ্গে লড়াই । আর এত সব প্রতিকূলতার মাঝেও বিশ্বমঞ্চে ভারতকে গর্বিত করেছে । দেশে ও বিদেশে সাঁতারের বিভিন্ন ইভেন্টে শারীরিকভাবে বিশেষভাবে সক্ষম অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী অনামিকা গড়াই বহু পদক পেলেও তার লক্ষ্য একটাই । লক্ষ্য- প্যারা অলিম্পিকে দেশের জন্য স্বর্ণপদক লাভ । লক্ষ্য- 50 মিটার ব্যাক স্ট্রোকে বিশ্ব রেকর্ড গড়া । কিন্তু, অনামিকার শারীরিক প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি তার স্বপ্নের পথে আজ প্রধান বাধা দরিদ্রতা ।

দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের বি-জ়োন আর্যভট্ট রোডের বাসিন্দা কিংশুক ও দোলা গড়াইয়ের একমাত্র মেয়ে অনামিকা গড়াই । সে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি বাংলা মাধ্যমের স্কুলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী । মাত্র দু'বছর বয়সে অনামিকার বাবা-মা জানতে পারেন, যে তাঁদের মেয়ে স্নায়ু রোগজনিত কারণে হাঁটাচলা করতে পারবে না । এমনকী তার দু'টি হাতও খুব বেশি সক্ষম নয় । অনামিকার বাবা সেই সময় বিভিন্ন অর্কেস্ট্রা দলে একজন গিটার শিল্পী হিসেবে কাজ করতেন । মা গৃহবধূ । চিকিৎসকরা বহু চেষ্টা চালিয়েও স্নায়ু রোগ থেকে অনামিকাকে মুক্তি দিতে পারেনি ।

Durgapur news
ফ্রেমবন্দী : 2014 ডিস্ট্রিক্ট মিট

শেষে একজন চিকিৎসক অনামিকার মা ও বাবাকে বলেন, তাদের মেয়েকে নিয়মিত ফিজ়িয়োথেরাপি করাতে । অনামিকার বাবা-মায়ের পক্ষে আর্থিক অনটনের কারণে নিয়মিত ফিজ়িয়োথেরাপি করানো হয়ে ওঠেনি । সেই সময় অনামিকার পিসি বলেন, তাকে সাঁতার শেখাতে । তাহলে সে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠবে ।

হার না মানা জেদ, স্বপ্ন দেখে প্যারা অলিম্পিকে সোনা জেতার

দুর্গাপুরের একটি সুইমিংপুলে জলে নেমে পড়ে অনামিকা গড়াই । তখন তার বয়স মাত্র 6 । ধীরে ধীরে অনামিকা একজন দক্ষ সাঁতারুর মতো সাঁতার কাটতে থাকে । প্রশিক্ষক ত্রিদেব ভট্টাচার্যর হাত ধরেই অনামিকার প্রথম সাঁতার শেখা । এরপর 2013 সালে কলকাতার কুমোরটুলিতে রাজ্য প্যারা সাঁতার প্রতিযোগিতায় নেমে সাফল্য পায় সে । তারপর থেকে আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি । 2017 সাল পর্যন্ত রাজ্য স্তরের প্যারা সুইমিং সমস্ত প্রতিযোগিতাতে শুধুই সাফল্য অনামিকা গড়াইয়ের । এরপর চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্স করা অনামিকা সাঁতারের জাতীয় প্রশিক্ষক প্রশান্ত কর্মকারের নজরে পড়েন । জাতীয় প্যারা সুইমিং প্রতিযোগিতায় প্রথম ইন্দোরে এরাজ্যের হয়ে তিনটি রৌপ্য পদক জয় করে।

পরের বছর কর্নাটকে রাজ্যের হয়ে দুটি স্বর্ণ এবং দুটি রৌপ্য পদক জয় করে অনামিকা । তার পরের বছর জয়পুরে তিনটি স্বর্ণপদক ও তার পরের বছর রাজস্থানে উদয়পুরে জাতীয় প্যারা সাঁতারের আসরে তিনটি স্বর্ণপদক এবং একটি ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে সে ।

এতদিন পর্যন্ত তার বাবা-মা আর্থিক অনটনের সঙ্গে লড়াই চালালেও অনামিকার জলের প্রতি এই ভালোবাসা যেন বন্ধ না হয় সেই চেষ্টা চালাচ্ছিলেন । কিন্তু জাতীয় স্তরে দারুণ সাফল্যের পর অনামিকার ডাক আসে জাকার্তায় এশিয়ান প্যারা সুইমিং চ্যাম্পিয়নশিপে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য । খুব কষ্ট করে তার মা-বাবা অনামিকাকে জাকার্তা পাঠালেও সেখানে কিছু কাগজপত্রে ত্রুটির কারণে জলে নামতে দেওয়া হয়নি তাকে । চোখের জল নিয়ে সে ফিরে আসে বাড়িতে ।

কিন্তু সেদিন আরও বড় সাফল্য পাওয়ার জেদ নিয়ে নিয়ে বাড়ি ফেরে সে । 2018 সালে জার্মানিতে আন্তর্জাতিক প্যারা সুইমিং চ্যাম্পিয়নশিপে চারটি বিভাগে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে অনামিকা । একটি স্বর্ণপদক ও পাঁচটি রৌপ্যপদক সহ মোট 6 টি পদক লাভ করে। তার লক্ষ্য ছিল- 2020 প্যারা অলিম্পিকে অংশ নেওয়া । কিন্তু প্যানডেমিক পরিস্থিতির কারণে তা বাতিল করা হয়েছে।

এদিকে মেয়েকে সাঁতারের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়াতে গিয়ে সমস্ত কিছু খুঁইয়েছে গড়াই পরিবার । অনামিকার মা দোলা গড়াই বলেন, "মেয়েকে নিয়ে আমার গর্বের শেষ নেই । কিন্তু আক্ষেপ- আমার মেয়ের জন্য কোনও সংস্থা বা সরকার কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। আমার আত্মীয় পরিজনরা কিছুটা সাহায্য করেছে । বাকি আর কেউ অনামিকার সাফল্যের জন্য আমাদের সাহায্য করেনি। আমি আমার সমস্ত গয়না বিক্রি করে দিয়ে আজ নিঃস্ব । বর্তমানে আমি অনামিকার জন্য একটি বেসরকারি সংস্থায় মহিলা নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করি ।"

অনামিকার বাবা কিংশুক গড়াই একজন ভালো গিটার বাদক । কিন্তু দীর্ঘ লকডাউনের কারণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি একটি বহুতল আবাসন প্রকল্পে নিরাপত্তাকর্মীদের সুপারভাইজ়ার হিসেবে কাজ করছেন । অভাবের সঙ্গে লড়াই করছে গড়াই পরিবার । আর ছোট্ট অনামিকার দু'চোখে শুধুই স্বপ্ন । দেশকে প্যারা অলিম্পিকে সোনা এনে দেওয়ার স্বপ্ন । শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তার কাছে আজ আর কোনও বাধা নয় । দুর্গাপুরের এই জলকন্যার চোখে রয়েছে বিশ্বরেকর্ড গড়ার স্বপ্ন । 50 মিটার ব্যাকস্ট্রোক তার সবচেয়ে প্রিয় ইভেন্ট । এই ইভেন্টে বিশ্বরেকর্ড থেকে মাত্র 10 সেকেন্ড পিছিয়ে আছে অনামিকা । এখনও পর্যন্ত 50 মিটার ব্যাকস্ট্রোক ইভেন্টে অনামিকার সেরা সময় 16 সেকেন্ড ।

অনামিকার বিষয়টি নিয়ে ETV ভারতের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে । মন্ত্রী লক্ষ্মীপুজোর পর অনামিকার পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.