আসানসোল, 15 মার্চ: আরও জটিল অবস্থার সৃষ্টি হল কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে । মঙ্গলবার থেকে যে অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বুধবার তা আরও গভীর রূপ ধারণ করল । ওয়েবকুপার সদস্য তথা কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শ্রেণির অধ্যাপকরা স্পষ্ট জানিয়েছেন তাঁরা উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীর সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক নন (Kazi Nazrul University Teachers protest Against VC)। শিক্ষকরা দাবি করেছেন, যদি উপাচার্যকে না সরানো হয়, তবে বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর ক্ষেত্রে কোনওরকমের সহযোগিতা করবেন না তাঁরা ।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার চন্দন কোনারকে বরখাস্ত করেন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী । তারপরই তাঁকে ঢুকতে না দিয়ে মূল ফটকে আটকে দেয় নিরাপত্তারক্ষীরা । আর এই ঘটনা জানাজানি হতেই শিক্ষক-শিক্ষিকারা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন । চন্দন কোনার বরখাস্তের নোটিশ না মেনেই পুনরায় কাজে যোগ দেন বলে অভিযোগ । কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী জানান, ধর্মঘটে অনুপস্থিত শিক্ষকদের চন্দন কোনার সরকারি নির্দেশনামা না মেনে সম্পূর্ণ বেতন দিয়েছেন । শুধু তাই নয় শিক্ষকদের অ্যাটেনডেন্স রেজিস্টার অর্থমন্ত্রকে পাঠানোর ক্ষেত্রেও বাধার সৃষ্টি করছেন । সেই কারণেই তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে ।"
অন্যদিকে রেজিস্ট্রার চন্দন কোনারের দাবি, উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতি সাধনে বাধার সৃষ্টি করেছেন । তিনি তাঁর ব্যক্তিগত সুবিধা উপভোগ করার জন্য বিভিন্নভাবে অর্থ নিয়েছেন, দুর্নীতি করেছেন, এই সমস্ত বিষয়ে প্রশ্ন তোলায় তাঁকে টার্গেট করে বরখাস্ত করা হয়েছে ।
এদিকে মঙ্গলবার বিষয়টি না মিটলেও বুধবার ফের নতুন করে শিক্ষকরা উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীর বরখাস্ত চেয়ে বিক্ষোভে নামেন । অবিলম্বে সাধন চক্রবর্তীকে উপাচার্যের পদ থেকে সরাতে হবে বলে ওয়েবকুপার সদস্য সজল কুমার ভট্টাচার্য নেতৃত্বে শিক্ষকরা আন্দোলন শুরু করেন । সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে সজলবাবু বলেন, "আর্থিকভাবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেননি উপাচার্য । তিনি গাড়ি কিনেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায়, বাংলো কিনেছেন, টিভি কিনেছেন । বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ অর্থের অভাবে সম্পূর্ণ রূপ পায়নি । অথচ উনি টাকা নিয়ে দুর্নীতি করেছেন । আমরা তাঁর সঙ্গে কাজ করতে রাজি নই । বিশ্ববিদ্যালয়ে উনি উপাচার্য থাকলে আমরা উনাকে কোনও কাজে সহযোগিতা করব না ।"
উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই । তিনি বার্তা পাঠিয়ে জানিয়েছেন, রেজিস্ট্রার অনৈতিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ভিতর ঢুকে অফিস থেকে জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যাচ্ছেন । একশ্রেণির শিক্ষকরা তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন সেটা সর্বৈব মিথ্যা । তিনি বেশ কয়েকজনের নামে এফআইআর দায়ের করেছেন । যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে জন্মলগ্ন থেকে ভালোবেসে কাজ করে চলেছেন সেই সমস্ত শিক্ষকরা তাঁর সঙ্গে আছেন বলে দাবি করেছেন উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী ।
আরও পড়ুন : নেই উপাচার্য-রেজিস্ট্রার-ফিন্যান্স অফিসার, অচলাবস্থা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে