দুর্গাপুর, 11 নভেম্বর: কাঁকসার সারদাপল্লিতে শুক্রবার একই বাড়িতে তিনজনের রহস্যমৃত্যু ঘটনা ঘটে ৷ সেই ঘটনায় এবার উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, তিনজনকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে ৷ সিমরান বিশ্বকর্মাকে খুন করা হয় মুখে বালিশ চাপা দিয়ে ৷ তারপর সীতাদেবীকে গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে খুন করা হয় ৷ আর তার আগে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে বাথরুমে খুন করে ফেলে দেওয়া হয় সোনুকে ৷ এরপরেই প্রশ্ন উঠছে আততায়ী কি একাই ছিল? কারণ একজনের পক্ষে তিনজনকে শ্বাসরোধ করে খুন করাও শুধু অসম্ভব নয়, অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে পুলিশের অনুমান । কাঁকসা থানার পুলিশ তাই পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে । ফরেনসিক বিভাগের আধিকারিকরা বিভিন্ন জায়গায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট-সহ বিভিন্ন জিনিসের নমুনা সংগ্রহ করেছেন ।
এই ঘটনায় মৃতদের পরিবারের অভিযোগের আঙুল এক যুবকের দিকে ৷ তাঁর সঙ্গে সিমরানের বন্ধুত্ব ছিল বলে জানা গিয়েছে ৷ পুলিশ যুবককে জিজ্ঞাসাবাদও করে ৷ তিনজনের দেহ উদ্ধারের আগে শুক্রবার ওই যুবকই বাড়িতে এসেছিলেন বলে সিমরানের মায়ের দাবি ৷ প্রতিমা বিশ্বকর্মা বলেন, "বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলাকালীন সিমরানের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় স্থানীয় এক যুবকের । গতকাল সেই বন্ধুই এসেছিল বাড়িতে । সেই বন্ধুর সঙ্গে আমার মেয়ের মাঝে মধ্যেই ঝগড়া হত । আমার মেয়ের এখনও বিবাহ বিচ্ছেদ মামলা চলছে ।" এরপরেই প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি প্রেম ঘটিত কারণে এই খুন ? তার উত্তর খুঁজছে পুলিশ ৷
তবে তদন্তে নেমে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তদন্তকারী আধিকারিকদের । পুলিশ জানতে পেরেছে আততায়ী খুনের পরে সিমরন ও সোনুর মোবাইল ফোনগুলি নিয়েও চম্পট দিয়েছে । শনিবার সকাল থেকেই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে কাঁকসা থানার আধিকারিকরা । বাড়ির পাশে একটি জঙ্গলে দুজোড়া দস্তানা বা গ্লাভস পড়ে থাকতে দেখা যায় । তাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায় ।
আততায়ীর টার্গেট কি ছিল সিমরান? বেশ কিছু প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে পুলিশের কাছে । যে ব্যক্তি হেলমেট পড়ে বাইক নিয়ে এসেছিলেন তিনি সিমরানদের পরিচিত ছিলেন ৷ সেটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট । সিমরানের কাকিমা রিঙ্কু বিশ্বকর্মার কথায়, "ওই হেলমেট পরা ব্যক্তি তাদের ঘরের ভেতরে ঢুকে যায় । সিমরানের বিয়ের পর থেকে আমাদের সঙ্গে তাদের কথাবার্তা হত না ৷ তাই তাদের বাড়িতে কে আসত আমরা তা দেখতাম না । বাইক নিয়ে হেলমেট পরিহিত ওই ব্যক্তি আসার পরেই আমি এবং গতকাল আমার সঙ্গে থাকা আমার ছোট ছেলে বাড়ির ভেতরে ঢুকে যাই । আমি মোবাইলে গান চালিয়ে রান্নাঘরে কাজ করছিলাম । আর আমি কিছুই জানি না ।"
আরও পড়ুন: