আসানসোল, 1 জুলাই: ঘরের মধ্যে জ্বলন্ত উনুন রেখে শুয়েছিল একটি পরিবার। আর যার ফলে বিষাক্ত গ্যাসে দম বন্ধ হয়ে মারা গেলেন এক মহিলা। গুরুতরভাবে অসুস্থ এক কিশোর-সহ আরও 4 জন। ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোল দক্ষিণ থানার অন্তর্গত মহিশিলা অরবিন্দ পল্লী এলাকায়। মৃতার নাম হাসি নাথ (45)। স্থানীয় সূত্রে খবর জানা গিয়েছে, ওই পরিবারটি রুটি বিক্রি করত।
আসানসোলের মহিশীলার অরবিন্দ পল্লী এলাকায় সম্প্রতি ভাড়া বাড়িতে এসেছিলেন ত্রিলোকনাথ নাথ। তাঁর পরিবারে স্ত্রী, পুত্র ছাড়াও মেয়ে ও মেয়ের ছেলে, মেয়ে থাকত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন ওই পরিবারটি রুটি বিক্রি করত এলাকায়। গতকাল রাতেও রুটি বিক্রি করে বাড়ি ফিরেছিলেন তারা। কয়লার উনুন বাড়ির বাইরে রাখলে বৃষ্টিতে নিভে যেতে পারে, এই ভেবে উনুনটিকে বাড়ির মধ্যে রেখেই শুয়েছিল ওই পরিবারটি।
শনিবার সকালে প্রতিবেশীরা দেখেন দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। কোনও সাড়াশব্দ নেই। দীর্ঘক্ষণ ধরে দরজা না-খোলায় প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। তাঁরা ডাকাডাকি করে এবং তারপরেও কেউ দরজা খোলেনি। এরপরই প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেন। আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ ওই বাড়িটিতে যায় এবং কার্যত দরজার তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। ভিতরে দেখা যায় পরিবারের ছয় সদস্যই অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছে। তারমধ্যে 7 বছরের এক কিশোরীও রয়েছে।
তড়িঘড়ি পুলিশ তাদের আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎকরা ত্রিলোকনাথ নাথের স্ত্রী হাসি নাথকে মৃত বলে ঘোষণা করে। বাকি পাঁচজনকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভরতি করা হয় ৷ শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত কারোরই এখনও জ্ঞান ফেরেনি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন প্রত্যেকেরই অবস্থা সংকটজনক। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে মহিশীলা এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, খুব অল্প দিনে এখানে এসেছিলেন ওই পরিবারটি। দরিদ্র পরিবার রুটি বিক্রি করে কোনওমতে দিন চালাত। উনুন যাতে নিভে না-যায় সেই কারণে বাড়ির মধ্যে রেখেছিল। আর যার ফলে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে গেল। মৃতা হাসি নাথের দেহ শনিবার ময়নাতদন্ত হবে। পাশাপাশি তার পরিবারের লোকেদের জ্ঞান ফিরে এলে ও সুস্থ হলে তবেই মৃতদেহ তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: নাগপুর থেকে পুনেগামী বাসে আগুন! বুলধানায় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পুড়ে মৃত 25