আসানসোল, 16 জুলাই : বাঁশ ও চাটাইয়ের ছোট্ট একফালি ঘর । তাও চারিপাশে ভাঙাচোরা । মাথায় ছাদ বলতে তেমন পাকাপোক্ত নেই । কোনওমতে প্লাস্টিকের ছাউনি । তাও আবার শতছিন্ন । বর্ষার জলে ভেসে যায় সব । আর এই ঘরেই অসহায়ভাবে বাস করেন ষাটোর্ধ্ব কালিপদ চন্দ এবং স্ত্রী শিবানী চন্দ । কোনওদিন অনাহার তো কখনও অর্ধাহার । প্রতিবেশীদের দয়ায় দিন চলে । এই যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে যেন মৃত্যুও ভাল, বলছেন আসানসোলের মহিশীলা দক্ষিণপাড়ার এই বৃদ্ধ দম্পতি ।
একসময় হীরাপুরের ঢাকেশ্বরী এলাকায় থাকতেন পেশায় রাজমিস্ত্রী কালিপদবাবু । কিন্তু বার্ধক্যজনিত কারণে আর পারেন না কাজ করতে । বয়সের ভারে নুইয়ে পড়া শরীরটায় হাঁপানির পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন উপসর্গ ৷ স্ত্রী শিবানী দেবীও উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগে ভুগছেন । টাকার অভাবে কিনতে পারেন না প্রতিদিনের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওযুধ ৷ দীর্ঘদিন অপুষ্টির জন্য শীর্ণকায় শরীর হারিয়েছে ক্ষমতা ৷
আরও পড়ুন : রান্না করা খাবার নিয়ে ফুটপাথবাসীদের পাশে আসানসোলের দুই শিক্ষক
একমাত্র মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন আসানসোলের মহিশীলায় । মেয়ের কাছাকাছি থাকবেন বলেই মহিশীলা এলাকাতেই বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলে এসেছিলেন । কিন্তু আর্থিক অনটনের জন্য বাড়ি ভাড়া দিতে পারেননি । মেয়ের পরিবারেও অভাব । স্বামী নেই । কোনওমতে পরিচারিকার কাজ করে নিজের সংসার চালান । বাবা-মাকে দেখবেন কি করে ? অগত্যা স্বামী-স্ত্রী মিলে এই বাঁশের চাটাইয়ের ঘরেই কোনওরকমে সংসার পেতেছেন । প্রতিবেশীদের সহায়তায় কোনওমতে দিন কাটছে এই বৃদ্ধ দম্পতির ।
কিন্তু এইভাবে আর কতদিন ? প্রতিবেশীরাও চাইছেন এই বৃদ্ধ দম্পতির কোনও স্থায়ী সমাধান হোক । সরকারকে এগিয়ে আসার আর্জি জানাচ্ছেন তাঁরাও । অন্তত মাথা গোঁজার জন্য একটা স্থায়ী ঠিকানা পাক এই প্রবীণ দম্পতি, চাইছেন সকলেই ।