আসানসোল, 8 জুন : আড়াই মাসেরও বেশি সময় পর আজ থেকে খুলে গেল মাইথন পর্যটন কেন্দ্র । লকডাউনের জেরে পর্যটন কেন্দ্রটি বন্ধ ছিল। বন্ধ ছিল জলাধারের ফেরিঘাট, স্থানীয় হোটেল, দোকানপাট । থমকে গেছিল বহু মানুষের রুজি, রোজগার । আজ ফের নতুন আশার আলো দেখছে মাইথন । দেখছে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ।
রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে রাজ্যের বেশ কয়েকটি পর্যটনস্থান খুলে দেওয়ার জন্য । সেই মতো আজ থেকে সাধারণ মানুষের জন্য খুলে যাচ্ছে মাইথন পর্যটন কেন্দ্র । মাইথন জলাধারকে ঘিরে তৈরি হয়েছে প্রকৃতির অদ্ভুত মিশেল। জলাধারের নীল জল । পাশেই সবুজ পাহাড় । আর জলাধারের মাঝে ছোটো ছোটো দ্বীপ । এরই আকর্ষণে বছরভর প্রচুর মানুষের আনাগোনা থাকে মাইথনে । তার উপর বাড়তি পাওনা জলাধারে নৌকাবিহার । সে এক আলাদা অনুভুতি । আর ভ্রমণবিলাসীদের জন্যই এখানে গজিয়ে উঠেছে একগুচ্ছ পর্যটন অনুসারী ব্যবসা । কিন্তু লকডাউনের কারণে সব বন্ধ হয়ে গেছিল । রুজিহীন হয়েছিলেন মাইথনের নৌকা চালকরা । বন্ধ হয়ে গেছিল হোটেল ব্যবসা । বন্ধ ছিল স্থানীয় দোকানপাট । এক লহমায় থমকে গেছিল মাইথনের স্বাভাবিক ছবি ।
আজ ফের নতুন আশার আলো দেখছে মাইথন । আজ প্রায় 80 দিন পর খুলল ফেরিঘাটের গেট । চলছে নৌকাগুলিকে পরিষ্কার করে আবার আগের অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা । কারও নৌকায় আবার জল উঠেছে, সেই জল ছেঁচে বাইরে ফেলছেন নৌকাচালকরা । স্থানীয় নৌকাচালক রিয়াজ আনসারির কথায়, "এই 80 দিন ধরে আমরা কীভাবে যে সংসার চালিয়েছি সেটা আমরাই জানি । আশা করছি এবার মানুষজন আসবেন ।"
স্পিডবোটের ব্যবসা করেন গোলাপ আনসারি । তিনি জানালেন, "দূরের পর্যটক না হলেও কাছাকাছির যাঁরা কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিতে আসেন তাঁরা একবার হলেও মাইথন ঘুরে যান । আজ সকালে দেখেছি মন্দিরে ভিড় হচ্ছে । আমরাও আশার আলো দেখছি ।"
পর্যটনস্থান খুলে যাওয়ার খবর আসতেই মাইথনের বিভিন্ন হোটেলকে স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে । হোটেলের সাফাই কর্মীরা PPE কিট পরে স্যানিটাইজ় করছেন । মাইথন হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মনোজ তেওয়ারি জানালেন, "আমরা সব হোটেল মালিকরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যখনই কোনও পর্যটক আসবেন, তাঁকে গেটের বাইরে দাঁড় করিয়ে সম্পূর্ণভাবে স্যানিটাইজ় করে নেওয়া হবে । তারপরই হোটেলে ঢুকতে দেওয়া হবে । পাশাপাশি তাঁর যদি জ্বর-সর্দি বা অন্য কোনও উপসর্গ থাকে তাহলে কোনওভাবেই তাঁকে হোটেলে ঢুকতে দেওয়া হবে না ।"
সবমিলিয়ে এখন পর্যটকদের পথ চেয়ে আশায় বসে মাইথন ।