রানিগঞ্জ, 29 জুন : মায়ের কষ্ট দূর করতে একাই কুয়ো খোঁড়ার কাজ শুরু করেছিল । মায়ের বহুদূর থেকে জল আনার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে ঝুড়ি-কোদাল নিয়ে নেমে পড়েছিল রানিগঞ্জের বল্লভপুরের আদিবাসী পাড়ার মেয়ে ববিতা সোরেন । ETV ভারত এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তারপরই ববিতার পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিলেন আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। ববিতার পড়াশোনার ভার বহন করতে চান তিনি। এমনকী তাঁর হাতে ল্যাপটপ তুলে দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন । বিধায়ক জানান, তাঁর বাড়িতে কুয়ো খোঁড়ার সমস্ত খরচ বহন করবে পঞ্চায়েত দপ্তর। ববিতাকে খুব শীঘ্রই সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয় বিধায়কের তরফে ।
রবিবার ববিতার বাড়ি গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন বিধায়ক ও রানিগঞ্জের BDO অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়। ববিতার খোঁড়া অসম্পূর্ণ কুয়োটি পাকাপাকিভাবে তৈরি করার আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে সংবর্ধনা জানানো হয় । সোরেন পরিবারের হাতে জবকার্ড তুলে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয় ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের তরফে । প্রসঙ্গত, কুয়োটি প্রায় 18 ফুট খুঁড়ে ফেলেছে ববিতা সোরেন । আর কয়েক ফুট খুঁড়তে পারলেই জল মিলবে । কুয়ো খোঁড়ার কাজে তাঁকে মা ও বোন সাহায্য করেছে বলে জানিয়েছে ববিতা ।
প্রত্যন্ত গ্রাম বক্তারনগরের আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দা ববিতা । মা ও বোনকে নিয়ে থাকে । সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 2018 সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে MA পাশ করেন । বর্তমানে B.Ed করছেন । স্বপ্ন, উচ্চশিক্ষিত হয়ে মা ও বোনকে দেখার । ববিতার মা মিনাদেবীর কথায়, "আমাকে প্রতিদিন প্রায় হাফ কিলোমিটার দূর থেকে জল আনতে হয় । তা দেখে মেয়ে বলল কুয়ো খুঁড়বে । টাকা-পয়সা নেই । তাই লোকজন দিয়ে কাজ করাতে পারিনি । কারণ, টাকা শেষ হলে মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালাব কী করে ? তার উপর লকডাউনে স্বামী ও ছেলের কাজ নেই । পঞ্চায়েতকে 5000 টাকা দিলে তবেই কুয়ো খুঁড়ে দেবে ।"
এদিকে সাহায্যের আশ্বাস পাওযার পর ববিতা ETV ভারতকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, "আমার কুয়ো খোঁড়ার খবর ছড়িয়ে পড়েছে । তার জন্য আমার পাশে দাঁড়াতে চাইছেন BDO ও বিধায়ক । কুয়োর খোঁড়ার বাকি কাজ সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি মিলেছে পঞ্চায়েতের তরফে । আমার পড়াশোনার ভার গ্রহণ ও পড়াশোনায় যাতে আমার সুবিধা হয় সে জন্য একটি ল্যাপটপ দেবেন বলেছেন বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় । এছাড়া সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন । সবটাই সম্ভব হয়েছে ETV ভারতের সহযোগিতায় ।"