আসানসোল, 15 জুন : সারা দেশজুড়ে চলছে স্বাধীনতার 75 বছর পূর্তির মহাসমারোহ । অথচ স্বাধীনতার 75 বছর পরেও খোদ আসানসোল পৌরনিগম এলাকার প্রান্তিক গ্রামে এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি (Master Brings Light To Village)। অন্ধকার হয়েই থাকে আসানসোল পৌরনিগমের 87 নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত নামো জামডোবা আদিবাসী গ্রাম । গ্রামে যাওয়ার রাস্তা নেই । নেই তেমন উন্নত নাগরিক পরিষেবা । গ্রামে আজও একটি স্কুল গড়ে ওঠেনি । 2 কিলোমিটার হেঁটে শিশুদের পাশের গ্রামে যেতে হয় পাঠ নিতে ।
তবু এত নেইয়ের মাঝেও আছে 'আলো' । শিক্ষার আলো । মোমবাতি ও লন্ঠনের আলোয় প্রতিদিন নৈশ স্কুলে আদিবাসী শিশুদের শিক্ষার আলো পৌঁছে দেন দীপ নারায়ণ নায়ক ৷ পেশায় তিলকা মূর্মু আদিবাসী স্কুলের শিক্ষক । কিন্তু তাঁর পরিচয় রাস্তার মাষ্টার হিসেবে । বিভিন্ন আদিবাসী গ্রামে রাস্তার মাঝেই শিশুদের পাঠ দেন দীপ । মাটির দেওয়ালে ব্ল্যাক বোর্ড আঁকা । তাতেই চলে শৈশবের পাঠ ।
আরও পড়ুন : সীমান্তে মডেল স্কুল, একটাও স্কুলছুট নেই, বললেন প্রধান শিক্ষক
দীপ নারায়ণ নায়েকের উদ্যোগে মোমবাতি ও লন্ঠনের আলোয় প্রতি সন্ধ্যায় চলে স্কুল । বিকেল থেকে তোড়জোড় শুরু হয়ে যায় । শিশুরা নিজেরাই ঝাড়ু দিয়ে রাস্তা ও বাড়ির দাওয়া পরিষ্কার করে । তারপর 'রাস্তার মাষ্টার' এসে পড়াতে শুরু করেন । ছন্দ মিলিয়ে পড়ার আনন্দ দানে এগিয়ে চলে স্কুল । ঝুপ করে অন্ধকার নামে । জ্বলে ওঠে মোমবাতি ও হ্যারিকেন । এই গ্রামে শিক্ষার আলোয় রোজ দীপাবলি হয় । শেষে বাচ্চাদের জন্য দুধ পাঁউরুটির ব্যবস্থা করেন দীপ নারায়ণ ।
মাষ্টারের পড়ানো দেখে খুশি গ্রামের মানুষরা । তাদের অনেক দাবি । স্কুল চায়, রাস্তা চায়, আলো চায় । রাত নেমে এলে দীপ নারায়ণ পড়ানো শেষ করে বাড়ি ফিরে যান । ছাত্রছাত্রীরা আবার পরের দিনের অপেক্ষায় থাকে । কখন মাস্টার আসবেন 'আলো' নিয়ে ।