দুর্গাপুর, 19 অগস্ট: স্কুলে আবর্জনার স্তুপ, চারিদিকে বড় বড় আগাছায় ঢাকা ৷ ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ মাঝেমধ্যেই বিষাক্ত কীটপতঙ্গের পাশাপাশি সাপের উপদ্রব স্কুলে ৷ আর এই নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে স্কুলে পড়াশোনা করছিল আদুরিয়া সরস্বতীগঞ্জ বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা ৷ সেই খবর পেতেই কোদাল আর ঝুড়ি নিয়ে বিদ্যালয়ের চারপাশে আবর্জনা, ও আগাছা সাফাই অভিযানে নেমে পড়লেন কাঁকসার মলানদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েতের নবনিযুক্ত প্রধান পাকুমণি সোরেন ৷
পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসার আদুরিয়া সরস্বতীগঞ্জ বিদ্যালয়ের চতুর্দিকে ছিল আবর্জনার স্তূপ ৷ সেই সঙ্গে চারিদিকে আগাছা আর জমা জল ৷ সেই নবনিযুক্ত পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে পৌঁছতেই, নড়চড়ে বসলেন তিনি ৷ তার পরেই নবনিযুক্ত মহিলা প্রধান পাকুমণি সোরেন স্কুল সাফাইয়ের উদ্যোগ নেন ৷ তবে, তিনি অন্য লোক লাগিয়ে স্কুলের পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন করার প্রচেষ্টা চালাননি ৷ পঞ্চায়েত প্রধান নিজেই নেমে পড়লেন স্কুলের চারপাশ পরিষ্কার করতে ৷
আজ সকালে প্রধান পাকুমণি সোরেনকে কোদাল হাতে স্কুলের আশপাশের আগাছা ও জঞ্জাল সাফাই করতে দেখা যায় ৷ সেগুলিকে ঝুড়ি মাথায় করে ফেলতেও দেখা যায় ৷ পাশাপাশি স্কুলের মূল প্রবেশ পথের সামনে গর্তে জমা জল দূর করার ব্যবস্থাও নেন তিনি ৷ ঝুড়ি করে মাটি নিয়ে এসে ওই গর্তে ফেলেন তিনি ৷ স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে আর কী কী সমস্যা রয়েছে ? তাও শোনেন মলানদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পাকুমণি সোরেন ৷
মিড-ডে মিল নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে তথ্য নেন ৷ পড়ুয়াদের পড়াশোনারও খোঁজ নিলেন তিনি ৷ প্রধানের এই ভূমিকার প্রশংসা শুরু হয়েছে এলাকায় ৷ এলাকাবাসীরা বলছেন, তাঁরা এইরকমই একজন মানবিক প্রধান চেয়েছিলেন ৷ প্রধান পাকুমণি সোরেন জানান, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শকে হাতিয়ার করেই এগিয়ে যেতে চান তিনি ৷ নিজে মাটির ঘরে থাকেন ৷ দিনমজুরির কাজ করেন ৷ মানুষের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যেই তিনি পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন ৷
আরও পড়ুন: বন্ধ স্কুলে সাপের আস্তানা, সর্প বিশেষজ্ঞ ডাকলেন প্রধান শিক্ষিকা
পাকুমণি সোরেনের মতে, মানুষ তাঁকে নির্বাচিত করে প্রধানের চেয়ারে বসিয়েছে ৷ তবে, যাঁরা তাঁকে প্রধানের চেয়ারে বসিয়েছেন, তাঁদের কোনদিনই ভুলতে পারবেন না ৷ স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, বৃহস্পতিবার থেকে স্কুল সাফাই শুরু হয়েছে ৷ শুক্রবার প্রধানকে নিজে স্কুল পরিস্কার করতে দেখেন তাঁরা ৷ প্রধানের এই ভূমিকার প্রশংসাও করেন প্রধান শিক্ষক ৷ এলাকাবাসীরাও প্রধানের কাজের প্রশংসা করেন ৷