আসানসোল, 20 সেপ্টেম্বর: এখন উৎসবের মরশুম ৷ গণেশ পুজোর পর এবার দুর্গাপুজোর পালা ৷ তোড়জোড় শুরু, চারিদিকে পুজোকে ঘিরে বসছে জামাকাপড় থেকে সাজসরঞ্জামের হাট ৷ এরই মাঝে আসানসোলে রবীন্দ্রভবনেও বসল হাট, তবে তা জাদুকরদের নিয়ে ৷ ম্যাজিকে বৈচিত্র আনতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের জাদুকররা হাজির হয়েছিলেন এখানে ৷ ওয়ার্কশপে চলল নতুন ম্যাজিক ট্রিকস শেখা থেকে জাদু প্রদর্শন ও প্রতিযোগিতা । জাদুকরদের আশা, এর ফলে নতুন ম্যাজিক শিখেছে ছেলেমেয়েরা ৷ ম্যাজিকে বৈচিত্র্যও আসবে ।
বর্তমানে সঙ্গীত কিংবা অন্যান্য শিল্পকর্মের দিকে বেশি আগ্রহী মানুষজন ৷ যত শিল্পী দেখা যায় সেই পরিমাণে জাদুকর দেখা যায় না । তবে কি জাদু থেকে মুখ ফেরাচ্ছে এই প্রজন্ম ? বিষয়টা কিন্তু তা নয় । সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া আসানসোলের জাদু উৎসবে ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা জাদুকররা জানালেন, ম্যাজিক শিল্প অনেক ব্যয়সাপেক্ষ বিষয় । শুধু তাই নয়, সঠিক শিক্ষা এবং দীর্ঘ অধ্যাবসায়ের ফলে ধীরে ধীরে একজন জাদুকর গড়ে ওঠে । অনেকেরই সেক্ষেত্রে ধৈর্য থাকে না । কিন্তু একবার শিখে নিতে পারলেই কেল্লাফতে । কারণ জাদুশিল্পে প্রতিযোগিতা কম ।
যদিও বছরের পর বছর একই ধরনের ম্যাজিক লোকে দেখে আসছে ৷ ফলে জাদুতে বৈচিত্র হারাতে শুরু করেছিল ৷ আর সেই কারণেই নতুন ম্যাজিক ট্রিকস এবং পদ্ধতি নিয়ে আসার জন্য ওয়ার্কশপ হল আসানসোলে । ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের জাদুকররা তাঁদের নিজেদের আবিষ্কৃত ম্যাজিক শিখিয়ে দিলেন একে অন্যকে । ফলে ম্যাজিকের ব্যাপ্তি যেমন বাড়বে তেমনই নতুন-নতুন ম্যাজিক আসবে বলেও জাদুকরদের দাবি ।
শুধু তাই নয়, ম্যাজিকের জিনিসপত্র বিক্রির জন্য বিশেষ দোকানও করা হয়েছিল এই ওয়ার্কশপের মাঝখানে । যদিও ম্যাজিক বিষয়টি খুব গোপনীয় । তাই চরমতর গোপনীয়তা বজায় রেখেই এই ম্যাজিকের ওয়ার্কশপ এবং ম্যাজিকের দোকান দেওয়া হয়েছিল । সাধারণ মানুষের প্রবেশের অনুমতি ছিল শুধুমাত্র ম্যাজিক প্রদর্শন দেখার জন্য ।
আসানসোলের বিশিষ্ট জাদুকর সৌম্য দেব বলেন, "একটি শহরে যদি সঙ্গীত শিল্পী কয়েক হাজার থাকে তবে দেখা যায় জাদুকর মাত্র একজন । কারণ জাদু ব্যয়সাপেক্ষে একটি শিল্প । তবে কেউ যদি সত্যি গুরুমুখী বিদ্যা হিসেবে ম্যাজিক শিখতে চান আমরা উৎসাহী তাদের শেখাতে । সামনে আসছে উৎসবের মরশুম । আমরা যাতে নতুন নতুন ম্যাজিক দেখাতে পারি এবং ম্যাজিকের প্রতি মানুষের উৎসাহ তৈরি করতে পারি, তাই এই ওয়ার্কশপ । আমরা যারা এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত তারা অনেক সমৃদ্ধ হয়েছি ।"
আরও পড়ুন: রেলকর্মী জাদুকর কেকে লায়েল জাদু দেখাতে পাড়ি দিচ্ছেন শ্রীলঙ্কায়
আরেক জাদুকর সুব্রতরঞ্জন বিশ্বাসের কথায়, "ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে অনেক ম্যাজিশিয়ান এসেছেন এই ওয়ার্কশপে এবং জাদু উৎসবে । দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অন্য ম্যাজিশিয়ানদের সঙ্গে ভাবের আদানপ্রদান করে অনেক উন্নত হয়েছি । আগামিদিনে এরকমভাবে চলতে থাকলে ম্যাজিক সত্যিকারেই আরও বেশি মনোগ্রাহী হয়ে উঠবে ।"