আসানসোল, 7 এপ্রিল: শ্রদ্ধায়, শান্তিতে পালিত হচ্ছে গুড ফ্রাইডে ৷ প্রভু যিশুর অনুগামী ও ভক্তদের কাছে এই দিনটি একইসঙ্গে বেদনাদায়ক ও পবিত্র ! কারণ, এই দিনটিতেই ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন যিশু ৷ সেই উপলক্ষে সারা পৃথিবীতে এই দিনটিকে নানাভাবে উদযাপন করা হয় ৷ পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলও তার ব্যতিক্রম নয় ৷ এদিন সকালে আসানসোলে শোভাযাত্রা বের করা হয় ৷ নীরবে সেই শোভাযাত্রায় পা মেলান অসংখ্য মানুষ ৷ স্থানীয় গির্জায় বিশেষ উপাসনা ও প্রার্থনার বন্দোবস্ত করা হয়েছে ৷ তা চলবে দিনভর ৷ এই দিনে সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষকেই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও পারস্পরিক সম্মান জ্ঞাপনের বার্তা দিচ্ছেন খ্রিস্টের উপাসকরা ৷
শুক্রবার সকালে আসানসোলের চেলিডাঙা এলাকা থেকে একটি শোভাযাত্রা শুরু হয় ৷ প্রায় 4 হাজার মানুষ এই শোভাযাত্রায় যোগ দেন ৷ তাঁদের মধ্যে অনেককেই আকারে বড়, ভারী ক্রুশ বয়ে নিয়ে যেতে দেখা যায় ৷ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা প্রার্থনা সঙ্গীত গাইতে গাইতে জি টি রোড ধরে প্রায় 2 কিলোমিটার পথ হাঁটেন ৷ আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ এই শোভাযাত্রা সংগঠিত করতে সহযোগিতা করে ৷ শোভাযাত্রা ঘিরে যাতে কোনও রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা জোরদার করে পুলিশ ৷ শোভাযাত্রার আগে ও পরে ছিল পুলিশের এসকর্ট ভ্যান ৷ সঙ্গে ছিলেন অসংখ্য পুলিশকর্মী ৷ তাঁরাও শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের পাশে-পাশে হাঁটেন ৷ নজর রাখেন নিরাপত্তায় ৷
জি টি রোড ধরে এগিয়ে চলা শোভাযাত্রা শেষ হয় আসানসোলের হটন রোড মোড়ের সেক্রেড হার্ট ক্যাথিড্রালে ৷ সেখানে একটি বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয় ৷ সেই প্রার্থনায় শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারী সকলে যোগ দেন ৷ একের পর এক চলতে থাকে প্রার্থনা সঙ্গীত ৷ সব মিলিয়ে এক আবেগঘন, শান্তির বাতাবরণ তৈরি হয় ৷
শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ফাদার সার্তো ৷ তিনি বলেন, "এই পবিত্র দিনে আমরা দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর জন্য প্রার্থনা করি ৷ আমাদের প্রার্থনা, সারা বিশ্বে শান্তি বিরাজ করুক ৷ সুস্থ, নিরোগ হয়ে উঠুক সমগ্র পৃথিবী ৷"
আরও পড়ুন: পরম্পরা মেনে বিশেষ মর্যাদায় বেলুড় মঠে যিশু পুজো
গুড ফ্রাইডের সারাদিনের কর্মসূচি জানতে চাওয়া হলে ফাদার বলেন, এদিন শোভাযাত্রার পাশাপাশি সকালেই বিশেষ প্রার্থনা করা হয় ৷ সমগ্র মানবজাতির জন্য এই প্রার্থনার আয়োজন ৷ এদিন খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে অনেকে দিনভর উপবাস করেন ৷ দুপুরে ফের একবার প্রার্থনায় অংশ নেন তাঁরা ৷ বাইবেল পড়া হয় ৷ ক্রুশের আরাধনা করা হয় ৷ সন্ধ্যায় দীর্ঘ প্রার্থনা হয় ৷ বেশ কয়েকঘণ্টা ধরে প্রার্থনা ও ধ্যান করা হয় ৷ বহু মানুষ প্রার্থনায় অংশ নিতে গির্জায় আসেন ৷ অনেকে আবার বাড়িতেই সমস্ত আচার পালন করেন ৷ এখানে ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক কোনও ভেদাভেদ নেই ৷ যেকোনও ধর্মের মানুষই গির্জায় আসতে পারেন ৷ প্রভু যিশুর উপাসনা করতে পারেন ৷
