দুর্গাপুর, 20 সেপ্টেম্বর: সোমবার গভীর রাতে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। 10 ঘন্টারও বেশি সময় লাগে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে । 11টি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর জন্য কাজ করে। তবে আসানসোল-দুর্গাপুরের শিল্প বাণিজ্য ভবনের জন্য জমি সংক্রান্ত বিভিন্ন নথি ছাড়াও এই কার্যালয়েই নাগরিক পরিষেবার বহু তথ্য জমা ছিল। সেই সমস্ত নথি অগ্নিকাণ্ডে ভস্মিভূত হওয়ার পর বিরোধী রাজনৈতিক দল থেকে আমজনতার একাংশ এই অগ্নিকাণ্ডের পিছনে অন্তর্ঘাতের আশঙ্কার কথা প্রকাশ করে। 'সর্ষের মধ্যেই ভূত' এমন কথাও দুর্গাপুরের বাজারে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার 24 ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা বুধবার নেমে পড়েন অগ্নিকাণ্ডের পিছনে প্রকৃত কারণের খোঁজে।
অন্যদিকে, ভস্মিভূত কার্যালয়ে কাজ বন্ধ হয়ে গেলেও আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের কর্মীরা নাগরিক পরিষেবাকে অব্যাহত রাখার জন্য কোমর বেঁধে নেমে পড়েন এদিন সকাল থেকেই। অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করে নাগরিক পরিষেবা প্রদানের কাজও শুরু হয় পূর্ণদমে। প্রায় এক কোটি টাকার সম্পত্তি পুড়ে নষ্ট হয়েছে বলে দাবি উন্নয়ন পর্ষদ কর্তৃপক্ষের। প্রায় 20 হাজারের অধিক নথি ভস্মীভূত হয়েছে বলেও আশঙ্কা। এত নথি দগ্ধ হয়ে যাওয়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিকদের কপালে। বুধবার অগ্নিকাণ্ডের কারণ খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। নমুনা পরীক্ষার পরেই উঠে আসবে আসল রহস্য, আশাবাদী আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিকরা।
পর্ষদের ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জেরে সাধারণ মানুষকে যাতে সমস্যায় পড়তে না হয় সেজন্য এদিন সকাল থেকেই চালু করা হয়েছে অস্থায়ী ক্যাম্প। সেখানেই চলছে যাবতীয় কাজকর্ম। এই অগ্নিকাণ্ডের কারণ কবে উঠে আসে সেদিকে তাকিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকরা ৷ পাশাপাশি শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরের মানুষও। আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। এবং তিন দিনের মধ্যে সেই রিপোর্ট দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। সেই রিপোর্ট সামনে এলেই আসল কারণ জানা যাবে। আমাকে নিয়ে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের কর্মীদের একটি পরিবার। আমি আশাবাদী আমাদের পরিবারে এমন কোন পাপী মানুষ নেই যে এই ঘৃণ্য কাজ করতে পারে।"
আরও পড়ুন: অবৈধ নার্সিং ট্রেনিং সেন্টারে অভিযান স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের
এদিন দুপুরে হঠাৎই দমকলের একটি ইঞ্জিনকে আবার সিঁড়ি লাগিয়ে পর্ষদ ভবনে কাজ করতে দেখা যায়। এদিন আবার হঠাৎ করে দমকল বিভাগ কেন? এর উত্তর অবশ্য চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় দিতে পারেননি। তবে ঘুরিয়ে নাক দেখানোর মত দমকল বিভাগের কাজের সমালোচনাও শোনা গেল চেয়ারম্যানের মুখে। তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "অকারণে কাউকে দোষী বলে পাপ করতে চায় না। অপেক্ষায় থাকলাম ফরেনসিক বিভাগের তদন্তের রিপোর্টের। তবে সুযোগ বুঝে অনেকেই ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছেন। তাদের জন্য বলে রাখি যে সমস্ত নথি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে তার সমস্ত কপি রাজ্য সরকারের আরবান ডেভেলপমেন্ট দফতরে এবং আসানসোলে আড্ডার কার্যালয়ে সযত্নে রাখা আছে।"