জামুড়িয়া, 5 সেপ্টেম্বর : কথাতেই আছে সদিচ্ছা থাকলে, যে কোনও কাজই সুন্দর হয়ে উঠতে পারে ৷ একদিকে যখন লকডাউনে বহু সরকারি স্কুল নষ্ট হয়ে গিয়েছে, ভরে গিয়েছে আগাছায়, সেখানে জামুড়িয়ার মণ্ডলপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছবিটা একটু অন্যরকম, যা দেখলে সকলের মন এমনি ভাল হয়ে যাবে । এর পুরোটা হয়েছে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক ও অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ৷
গত বছর লকডাউন থেকে স্কুল বন্ধ থাকার সময়ে স্কুলকে সুন্দর করে গড়ে তোলার কাজ করেছেন শিক্ষক শিক্ষিকারা । তৈরি হয়েছে বাগান । স্কুলের দেওয়ালে লেগেছে নতুন রঙ । তৈরি হয়েছে নতুন মঞ্চ । সেখানে হ্যাঙারে ঝুলছে রঙবেরঙের গাছ । এই স্কুলে ডিজিটালাইজেশন হয়েছে আগে । স্কুলে প্রজেক্টর সাউন্ড ডিভাইস-সহ বিভিন্ন প্রযুক্তিগত মাধ্যমে পঠনপাঠন হত । তাছাড়াও স্কুলের দেওয়ালে ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করার জন্য নানান বাণী ও সচেতনতামূলক বার্তা লেখা হয়েছে । স্কুল খোলার পর ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে এসে নতুন রূপ দেখে চমকে তো যাবে, আনন্দও পাবে । তবে স্কুল বন্ধ থাকলেও পঠনপাঠন বন্ধ নেই ।
মণ্ডলপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক রাজীব রায় জানালেন, "করোনার আতঙ্ক কাটিয়ে আমরা লকডাউনে সপ্তাহে দু'দিন করে স্কুল এসেছি সবাই । সেই সময় স্কুল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা, বাগান করা, স্কুলের দেওয়ালে ছবি আঁকা ও অন্যান্য বার্তা লেখা, সবই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভাবনা থেকে হয়েছে।" তিনি আরও জানান, বর্তমানে সপ্তাহে দু'দিন করে বিভিন্ন পাড়ায় গিয়ে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিয়মিত পাঠদান করছেন । যাতে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশুনোর অভ্যেসের মধ্যে থাকতে পারে ।
স্কুলের শিক্ষিকা চুমকি দত্ত বললেন, "স্কুল আমাদের কাছে শুধু চাকরির জায়গা নয়, এটা আমাদের কাছে আশ্রমের মতো । ছাত্রছাত্রীদের সুস্থ মানসিক বিকাশ যাতে ঘটতে পারে, তাই স্কুলকে এরকম ভাবে সাজানো হয়েছে ।"
শিক্ষক শিক্ষিকাদের এমন উদ্যোগে খুশি অভিভাবকরাও । স্থানীয় অভিভাবক শ্যামল বাউরি জানালেন, এই স্কুল পরিকাঠামো ও পড়াশুনোতে এখন বেসরকারি স্কুলগুলিকেও ছাপিয়ে গিয়েছে ।