ETV Bharat / state

DSP Eviction Controversy: ডিএসপি কারখানার জমি থেকে উচ্ছেদের নোটিশ ঘিরে দড়ি টানাটানি বিজেপি-তৃণমূলের - durgapur steel plant

দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার জমিতে বসবাসকারীদের উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে ৷ বিষয়টি নিয়ে দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে ৷

ETV Bharat
সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া এবং লক্ষ্মণ ঘোড়ুই
author img

By

Published : Aug 18, 2023, 5:22 PM IST

সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়ার বক্তব্য

দুর্গাপুর, 18 অগাস্ট: বেশ কয়েকদিন ধরে শিল্প শহর দুর্গাপুর উত্তাল ৷ দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার লাগোয়া বস্তিগুলিতে কারখানার জন্য অধিগৃহীত ফাঁকা জমিতে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে বসবাসকারীদের উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়াকে কেন্দ্র করে এই বিতর্কের সূত্রপাত । এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি । একদিকে যখন বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া, দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইরা ডিএসপি উচ্ছেদ করতে এলে তাদের বুকের ওপর দিয়ে বুলডোজার চালানোর কথা বলছেন, তখন পালটা হাজার হাজার মানুষকে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বরা দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা নগর প্রশাসন ভবন ঘেরাও করে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ৷ তৃণমূল জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, "এটা মোদির উত্তর প্রদেশ নয়, এখানে কোন বুলডোজার চালাতে দেব না ।"

রাষ্ট্রায়ত্ত দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা ও মিশ্র ইস্পাত কারখানা লাগোয়া কারখানার জন্য অধিক গৃহীত ফাঁকা জমিতে দীর্ঘ প্রায় 50-60 বছরের বেশি সময় ধরে হাজার হাজার মানুষ বসবাস করছেন । চলতি মাসেই হঠাৎ করে দুর্গাপুরের পলাশডিহা, ফরিদপুর, তামলা বস্তি, প্রমোদনগর, ভিরিঙ্গি চাষিপাড়া, কাদারোড মেনগেট, ওল্ড কোর্ট-সহ আরও বেশকিছু এলাকার হাজার হাজার পরিবারকে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয় দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার পক্ষ থেকে । তা নিয়ে আন্দোলনে নামতে দেখা যায় রাজ্যের শাসক দলকে । দুর্গাপুরের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের নেতৃত্বে এই সমস্ত বস্তি বাঁচানোর দাবিতে আন্দোলন শুরু হয় ।

ক্রমশ যখন এই বিষয়ে শাসকদলের পাল্লা ভারী হতে শুরু করে তখন বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ এসএস আলুওয়ালিয়া এবং দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘড়ুই সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দেন, পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ করা যাবে না । এই ইস্যুতে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায় । বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার দুই নম্বর গেট লাগোয়া প্রমোদ নগরে ফের আবার সংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া প্রকাশ্য জনসভায় ঘোষণা করেন, "আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন । যদি বুলডোজার চালাতে হয় তাহলে আগে আমার বুকের ওপর দিয়ে চালাতে হবে । আমি কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি । আমি তাঁকে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছি আগে জমি দিন তারপরে আপনি জমি নেবেন ।"

আরও পড়ুন: 'তোলাবাজি করবেন না', তৃণমূলের মঞ্চে পুলিশ আধিকারিকের মন্তব্য ঘিরে প্রবল বিতর্ক

ঠিক তারপরের দিনেই, শুক্রবার, প্রায় উচ্ছেদের নোটিশ পাওয়া কুড়ি হাজার পরিবারকে দুর্গাপুরের গান্ধী মোড় থেকে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার নগর প্রশাসন ভবন পর্যন্ত মিছিল করতে দেখা গেল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে । তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন এটা নরেন্দ্র মোদির উত্তরপ্রদেশ নয় এখানে বুলডোজার চালানো যাবেনা । তাঁর কথায়, "এটা মোদির উত্তর প্রদেশ নয়, এখানে কোন বুলডোজার চালাতে দেব না ।"

যদিও এখনও দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার পক্ষ থেকে কী কারণে এই জমি প্রয়োজন ? কত টাকার প্রকল্প রয়েছে ইস্পাত কারখানা সম্প্রসারণ এর জন্য ? এইসব প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়নি সাধারণ মানুষদের জন্য । তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে আদৌ কি দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা সম্প্রসারণের জন্য জমি প্রয়োজন ? নাকি রাষ্ট্রায়ত্ত দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা ও মিশ্র ইস্পাত কারখানার বেসরকারি করনের প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রক? কারণ দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার সম্প্রসারণের জন্য কত টাকা বরাদ্দ ? কী কী পরিকল্পনা রয়েছে? সে সম্পর্কে কোনও তথ্যই এখনও সংবাদমাধ্যম কে দেয়নি দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার মুখ্য জনসংযোগ বিভাগ ।

দুই দল এখনও উচ্ছেদের নোটিশ পাওয়া মানুষদেরকে নিয়ে রাজনৈতিক জমি শক্ত করার ইস্যু খুঁজে পেয়েছে এটা বলাই যায় । কারণ সামনেই দুর্গাপুর পৌরসভা এবং তারপরেই লোকসভা নির্বাচন । তবে একটা প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে । কেন কারখানা কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ এত দশক পড়ে কারখানা লাগোয়া জমি ফেরত পেতে চাইছেন ? আদৌ কি রাষ্ট্রায়ত্ত ডিএসপি ও এএসপি কারখানার সম্প্রসারণ হবে? নাকি এই কারখানা দুটিকে বিলগ্নীকরণের দিকে এগিয়ে দেবে কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রক ? কারণ দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত দুর্গাপুরের সংবাদ মাধ্যমকে কি পরিকল্পনা রয়েছে এই জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে সে সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছুই বলা হয়নি । দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বেদবন্ধু রায়কে, কত টাকার প্রকল্প? কী পরিকল্পনা রয়েছে? এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি । তিনি শুধুই জানান যা কিছু হবে সরকারি নিয়ম মেনেই হবে ।

সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়ার বক্তব্য

দুর্গাপুর, 18 অগাস্ট: বেশ কয়েকদিন ধরে শিল্প শহর দুর্গাপুর উত্তাল ৷ দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার লাগোয়া বস্তিগুলিতে কারখানার জন্য অধিগৃহীত ফাঁকা জমিতে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে বসবাসকারীদের উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়াকে কেন্দ্র করে এই বিতর্কের সূত্রপাত । এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি । একদিকে যখন বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া, দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইরা ডিএসপি উচ্ছেদ করতে এলে তাদের বুকের ওপর দিয়ে বুলডোজার চালানোর কথা বলছেন, তখন পালটা হাজার হাজার মানুষকে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বরা দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা নগর প্রশাসন ভবন ঘেরাও করে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ৷ তৃণমূল জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, "এটা মোদির উত্তর প্রদেশ নয়, এখানে কোন বুলডোজার চালাতে দেব না ।"

রাষ্ট্রায়ত্ত দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা ও মিশ্র ইস্পাত কারখানা লাগোয়া কারখানার জন্য অধিক গৃহীত ফাঁকা জমিতে দীর্ঘ প্রায় 50-60 বছরের বেশি সময় ধরে হাজার হাজার মানুষ বসবাস করছেন । চলতি মাসেই হঠাৎ করে দুর্গাপুরের পলাশডিহা, ফরিদপুর, তামলা বস্তি, প্রমোদনগর, ভিরিঙ্গি চাষিপাড়া, কাদারোড মেনগেট, ওল্ড কোর্ট-সহ আরও বেশকিছু এলাকার হাজার হাজার পরিবারকে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয় দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার পক্ষ থেকে । তা নিয়ে আন্দোলনে নামতে দেখা যায় রাজ্যের শাসক দলকে । দুর্গাপুরের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের নেতৃত্বে এই সমস্ত বস্তি বাঁচানোর দাবিতে আন্দোলন শুরু হয় ।

ক্রমশ যখন এই বিষয়ে শাসকদলের পাল্লা ভারী হতে শুরু করে তখন বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ এসএস আলুওয়ালিয়া এবং দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘড়ুই সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দেন, পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ করা যাবে না । এই ইস্যুতে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায় । বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার দুই নম্বর গেট লাগোয়া প্রমোদ নগরে ফের আবার সংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া প্রকাশ্য জনসভায় ঘোষণা করেন, "আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন । যদি বুলডোজার চালাতে হয় তাহলে আগে আমার বুকের ওপর দিয়ে চালাতে হবে । আমি কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি । আমি তাঁকে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছি আগে জমি দিন তারপরে আপনি জমি নেবেন ।"

আরও পড়ুন: 'তোলাবাজি করবেন না', তৃণমূলের মঞ্চে পুলিশ আধিকারিকের মন্তব্য ঘিরে প্রবল বিতর্ক

ঠিক তারপরের দিনেই, শুক্রবার, প্রায় উচ্ছেদের নোটিশ পাওয়া কুড়ি হাজার পরিবারকে দুর্গাপুরের গান্ধী মোড় থেকে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার নগর প্রশাসন ভবন পর্যন্ত মিছিল করতে দেখা গেল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে । তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন এটা নরেন্দ্র মোদির উত্তরপ্রদেশ নয় এখানে বুলডোজার চালানো যাবেনা । তাঁর কথায়, "এটা মোদির উত্তর প্রদেশ নয়, এখানে কোন বুলডোজার চালাতে দেব না ।"

যদিও এখনও দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার পক্ষ থেকে কী কারণে এই জমি প্রয়োজন ? কত টাকার প্রকল্প রয়েছে ইস্পাত কারখানা সম্প্রসারণ এর জন্য ? এইসব প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়নি সাধারণ মানুষদের জন্য । তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে আদৌ কি দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা সম্প্রসারণের জন্য জমি প্রয়োজন ? নাকি রাষ্ট্রায়ত্ত দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা ও মিশ্র ইস্পাত কারখানার বেসরকারি করনের প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রক? কারণ দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার সম্প্রসারণের জন্য কত টাকা বরাদ্দ ? কী কী পরিকল্পনা রয়েছে? সে সম্পর্কে কোনও তথ্যই এখনও সংবাদমাধ্যম কে দেয়নি দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার মুখ্য জনসংযোগ বিভাগ ।

দুই দল এখনও উচ্ছেদের নোটিশ পাওয়া মানুষদেরকে নিয়ে রাজনৈতিক জমি শক্ত করার ইস্যু খুঁজে পেয়েছে এটা বলাই যায় । কারণ সামনেই দুর্গাপুর পৌরসভা এবং তারপরেই লোকসভা নির্বাচন । তবে একটা প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে । কেন কারখানা কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ এত দশক পড়ে কারখানা লাগোয়া জমি ফেরত পেতে চাইছেন ? আদৌ কি রাষ্ট্রায়ত্ত ডিএসপি ও এএসপি কারখানার সম্প্রসারণ হবে? নাকি এই কারখানা দুটিকে বিলগ্নীকরণের দিকে এগিয়ে দেবে কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রক ? কারণ দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত দুর্গাপুরের সংবাদ মাধ্যমকে কি পরিকল্পনা রয়েছে এই জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে সে সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছুই বলা হয়নি । দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বেদবন্ধু রায়কে, কত টাকার প্রকল্প? কী পরিকল্পনা রয়েছে? এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি । তিনি শুধুই জানান যা কিছু হবে সরকারি নিয়ম মেনেই হবে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.