আসানসোল, 1 নভেম্বর: চলছে উৎসবের মরশুম । বেশিরভাগ সংগঠনই মেতে আছেন পুজোয় । সেইভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না রক্তদান শিবির । এর ফলে রক্তের যোগান নেই । তাই তীব্র রক্ত সংকটে ভুগছে আসানসোল জেলা হাসপাতাল । প্রতিদিনই দুর্ঘটনাজনিত রোগী তো আছেই । এর সঙ্গে রয়েছে প্রসূতি, তাছাড়াও তিনশোর বেশি থ্যালাসেমিয়া শিশু-কিশোর আসানসোল জেলা হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল । এমন একটা সময়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মতন অবস্থা কর্তৃপক্ষের । আর তাই উপায়ান্তর না দেখতে পেয়ে রক্তদান করতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন আসানসোল জেলা হাসপাতাল ৷ সুপার থেকে শুরু করে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, নিরাপত্তারক্ষী, সমস্ত বিভাগের কর্মীরা অংশ নিলেন তাতে । তাঁরা রক্তদান করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও রক্তদান করতে আহ্বান জানিয়েছেন ।
আসানসোল জেলা হাসপাতালের উপরে গোটা আসানসোল মহকুমা তো বটেই আশেপাশের জেলা বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষজন, এমনকী পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের প্রান্তিক অঞ্চলের বাসিন্দারা নির্ভরশীল । প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে হাসপাতালে । তাই এই হাসপাতালের উপরে চাপ অনেক বেশি । উৎসবের মরশুমে দুর্ঘটনাজনিত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে । বাড়ছে প্রসূতি মায়ের সংখ্যাও ।
আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের মেডিক্যাল অফিসার সঞ্জিত চট্টোপাধ্যায় জানান, গত বছর অক্টোবর মাসে যে পরিমাণে ব্লাড ক্যাম্প করা গিয়েছিল এ বছর তার তুলনায় রক্তদান শিবির কম অনুষ্ঠিত হয়েছে । অন্যদিকে রক্তের চাহিদা বেশি বেড়েছে । এই সামঞ্জস্য না থাকায় রক্তের সংকট দেখা দিচ্ছে তীব্রভাবে । যার ফলে দৈনন্দিন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের রক্ত দেওয়া নিয়ে ঘুম ছুটেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের । তিনি বলেন, "আমি আহ্বান করেছিলাম সুপার সাহেবের কাছে, যদি চিকিৎসকরা রক্তদানে এগিয়ে আসে । আজ সবাই মিলে এগিয়ে এসেছে এবং এই বার্তাটাও মানুষের কাছে যাক । "
আরও পড়ুন: অন্ধকারে আলোর উৎস, মানব সেবায় রক্তদান 100 দৃষ্টিহীন যুবক-যুবতীর
আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাসের কথায়, "আজ যদি আমরা জরুরি ভিত্তিতে এই ক্যাম্পটা না করতাম তাহলে সত্যিই আজ হাসপাতাল চালানো যেত না । খারাপ পরিস্থিতির মুখে আমরা দাঁড়িয়ে ছিলাম । সেই কারণে এই সংকটের কথা জেনে সবাই এগিয়ে এসেছেন । সবাইকে শুভেচ্ছা রইল । তবে যেভাবে চাপ বাড়ছে হাসপাতালের উপরে তাতে সাধারণ মানুষকে সচেতন হয়ে রক্তদানের জন্য এগিয়ে আসতে হবে ।" চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাতে হাসপাতালে উপস্থিত হন জেলা শাসক এস পোন্নামবলম ।