দুর্গাপুর, 23 নভেম্বর: ভাড়া বাড়ি থেকে বিহারের শাহরানপুরের বাসিন্দা এক যুবকের পচাগলা রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করল দুর্গাপুর থানার পুলিশ। মৃতের নাম ছোটন দুবে (25) ৷ দুর্গাপুরের ফরিদপুর বাউরি পাড়া এলাকায় এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনাস্থলে আসে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের দুর্গাপুর থানার পুলিশ ৷ আসেন এসিপি (কাঁকসা) সুমন জয়সওয়াল-সহ ফরেনসিক ল্যাবের কর্তারাও। যে ঘর থেকে মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে সেই ঘরের বাইরে তালা বন্ধ ছিল বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘরের ভেতর থেকে উদ্ধার হয়েছে মদের বোতল, গ্লাস-সহ একটি সোনালি রঙের কানের দুলও। একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার এক আত্মীয় ভর্তি আছে বলে, এই মর্মে বিহারের শাহরানপুরের বাসিন্দা ছোটন দুবে কয়েকদিন আগে এই বাড়ি ভাড়া নেয়। কিন্তু রহস্য মৃত্যুর পর প্রশ্ন উঠছে, এই ঘরে কি ছোটন দুবে একাই ছিল ? তাহলে ছোটন দুবের মৃতদেহ যখন ঘরের ভিতরে তখন বাইরের থেকে তালা দিল কে ? তদন্তে নেমেছে দুর্গাপুর থানার পুলিশ।
দুর্গাপুরের গান্ধি মোড়ের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক রোগীর আত্মীয় বলে পরিচয় দিয়েছিল ছোটন। ওই হাসপাতালের সামনে বাউরি পাড়ার বাসিন্দা গৌতম সাহার একটি দোকান আছে। গৌতম সাহা পাঁচটি ঘর তৈরি করে এই হাসপাতালে বিভিন্ন জেলা ও রাজ্য থেকে আসা রোগীর আত্মীয়দের ভাড়া দেন বলে খবর। সেই ঘরই ভাড়া নিয়ে থাকছিল ছোটন। এদিন সকালে দুর্গন্ধ পেয়ে এলাকার লোকজন পুলিশকে খবর দেয় ৷ এরপর বন্ধ ঘরের দরজা ভেঙে পুলিশ ওই ব্যাক্তির দেহ উদ্ধার করে। স্থানীয়দের দাবি এটি আদতে খুনেরই ঘটনা। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, এই বাড়িতে দুইজন ছিল। এলাকাবাসীর দাবি এবার বৈধ সবকিছু দেখে ঘর ভাড়া দিক বাড়ির মালিকরা।
কাঁকসার এসিপি সুমন কুমার জয়সওয়াল বলেন, "একটি পচা-গলা রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে বাড়ির ভিতর থেকে। ফরেনসিক বিভাগকে ডাকা হয়েছে। মৃত ব্যক্তির বাড়ি বিহারে বলে জানা গিয়েছে । সে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল স্থানীয় এক বেসরকারি হাসপাতালে তার আত্মীয় ভর্তি আছে এই কথা বলে। কিন্তু যেটা সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, যে ঘর থেকে মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে তার বাইরে তালা ঝোলানো ছিল ৷ আমরা সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করেছি। দ্রুত এই মৃত্যু রহস্য উদঘাটিত হবে।" মৃতদেহ উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। ফরেনসিক বিভাগের আধিকারিক তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ''ঘরের ভেতর থেকে বেশ কিছু সামগ্রী পাওয়া গিয়েছে। সে সম্পর্কে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সমস্ত রিপোর্ট দেব। তবে মৃতদেহ পচে গিয়েছিল।"
বাড়ির মালিক গৌতম সাহা অবশ্য নিজে খুব অসুস্থ এবং এই সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। এই এলাকাতেই কয়েক বছর আগে ভাড়া বাড়িতে বাস করা এক প্রেমিককে খুন করে তাকে ফেলে দেওয়া হয় ফ্লাই আ্যশ পন্ডে। সেই খুনের কিনারা করতে গিয়ে পুলিশের কালঘাম ছুটে গিয়েছিল। বারবার ভাড়া বাড়িতে থাকা এবং এই ধরনের অপরাধমূলক কাজকর্ম নিয়ে চিন্তিত এলাকার মানুষ এবং দুর্গাপুর থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন
350 টাকার জন্য কিশোরকে 50 বার ছুরির আঘাত, গলা কেটে নৃশংসভাবে খুন নাবালকের