ETV Bharat / state

ঘুরপথে আসতে 60 কিমি, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেল ব্রিজ ব্যবহার - দামোদরের উপরে রেল সেতুতে বিপজ্জনক পারাপার

ট্রেনের হুইসেল বাজলেই মনে হয় এই বুঝি মৃত্যু এল । ঝুঁকি নিয়েই এভাবে রুজির টানে রোজ পারাপার করে তিন জেলার শয়ে শয়ে মানুষ ।

Damodar rail bridge
Damodar rail bridge
author img

By

Published : Oct 18, 2020, 8:40 PM IST

বর্ধমান, 18 অক্টোবর : কুলকুল শব্দে বয়ে যাচ্ছে দামোদর নদ । নদের এপারে পশ্চিম বর্ধমান, অন্য পারে বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার প্রচুর প্রান্তিক গ্রাম । পশ্চিম বর্ধমানের হিরাপুর এলাকায় দামোদর স্টেশন পেরোলেই নদী । আদ্রা রেল ডিভিশনের অন্তর্গত রেল ব্রিজ রয়েছে দামোদরের উপর । আর এই রেল ব্রিজটিই কার্যত এই তিনজেলার মানুষের পায়ে হেঁটে পারাপারের পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে ।

হ্যাঁ, কার্যত প্রাণ হাতে করেই পারাপার । নিচে তাকালেই যেন মাথা ঘোরে । ট্রেনের হুইসেল বাজলেই মনে হয় এই বুঝি মৃত্যু এল । ঝুঁকি নিয়েই এভাবে রুজির টানে রোজ পারাপার করে তিন জেলার শয়ে শয়ে মানুষ ।

দামোদরের অববাহিকায় যে ছোটো ছোটো গ্রামগুলি আছে সেখানকার মানুষজন এই রেল ব্রিজ দিয়ে পায়ে হেঁটে, সাইকেলে, কিংবা মোটর সাইকেলে পারাপার করেন । কিন্তু কেন এই বিপজ্জনক পারাপার ?

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেল ব্রিজ ব্যবহার তিন জেলার মানুষের

স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন বাঁকুড়া, শালতোড়া, পুরুলিয়া, মধুকুণ্ডা-সহ বিভিন্ন এলাকায় যে গ্রামগুলো রয়েছে সেই গ্রামগুলি থেকে আসানসোল আসতে গেলে ঘুরপথে বাঁকুড়ার মেজিয়া দিয়ে একটি সেতু অথবা পশ্চিম বর্ধমানের ডিসেরগড়ে আরেকটি সেতু দিয়ে আসতে হয় ।

ঘুরপথে আসতে গেলে প্রায় 60 থেকে 65 কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতে হবে । তার তুলনায় এই রেল সেতু পেরিয়ে আসা মাত্র কয়েকশো মিটারের দূরত্ব । সেই কারণেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই রেল সেতুর উপর দিয়ে পারাপার করে সাধারণ মানুষ । অনেকেই কর্মসূত্রে আসানসোল আসেন । দিনমজুররা সকাল থেকেই লাইন দিয়ে বার্নপুর, হিরাপুর, ইসমাইল-সহ বিভিন্ন এলাকায় আসেন কাজের সন্ধানে । তাঁরা কেউ সাইকেল চালিয়ে, কেউ বা পায়ে হেঁটে রেল সেতু পারাপার করেন । আবার আসানসোল থেকে পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার প্ৰত্যন্ত গ্রামগুলোতে যান বিভিন্ন কাজের সন্ধানে বহু মানুষ । সারাদিন ধরেই চলতে থাকে বিপজ্জনক পারাপার ।

অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে জানা গিয়েছে, এই পারাপারের সময় ট্রেন চলে আসায় অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন । অনেকে মারা গেছেন । রেল থেকে বারবার সচেতন করার ফলেও মানুষের অভ্যাস পালটায়নি । পরবর্তীকালে রেলের আদ্রা রেল ডিভিশনের পক্ষ থেকে মানুষজনের দাঁড়ানোর জন্য কিছু দূরত্ব পরপর একটি করে স্ট্যান্ডিং প্লেস করে দেওয়া হয়েছে । কিন্তু, তাও হঠাৎ করে ট্রেন চলে এলে কিছুই করার থাকে না । দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হয় ।


তিন জেলারই বাসিন্দারা জানিয়েছেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন তবু উপায় নেই । দাবি করেছেন, সবাই একটি পাকাপাকি সেতু হলে ওই অঞ্চলের মানুষদের খুব সুবিধে হয় । কারণ, বাকি যে দুটি সেতু রয়েছে দামোদরের উপরে একটি বাঁকুড়া সঙ্গে সংযোগকারী এবং একটি পুরুলিয়া সঙ্গে সংযোগকারী সেগুলো অনেক দূরে হওয়ায় মধ্যবর্তী স্থানে একটি সেতু হওয়া প্রয়োজন ।

পুরুলিয়া জেলার একসময়ের সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া যখন রেলের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন সেই সময় তিনি উদ্যোগ নিয়েছিলেন সেতু তৈরি করার । কিন্তু সরকার বদল হলে তা ধামাচাপা পড়ে যায় । দামোদরের এপারে রয়েছে ইস্কো কারখানা ওপার থেকেও প্রচুর মানুষ, অস্থায়ী কর্মীরা এভাবেই ইস্কো কারখানায় কাজ করতে আসেন ।

রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক জানিয়েছেন, রেল এবং ইস্কো সেতু তৈরির ব্যাপারে সহযোগিতা করলে রাজ্য সরকার এগিয়ে আসবে ।

বর্ধমান, 18 অক্টোবর : কুলকুল শব্দে বয়ে যাচ্ছে দামোদর নদ । নদের এপারে পশ্চিম বর্ধমান, অন্য পারে বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার প্রচুর প্রান্তিক গ্রাম । পশ্চিম বর্ধমানের হিরাপুর এলাকায় দামোদর স্টেশন পেরোলেই নদী । আদ্রা রেল ডিভিশনের অন্তর্গত রেল ব্রিজ রয়েছে দামোদরের উপর । আর এই রেল ব্রিজটিই কার্যত এই তিনজেলার মানুষের পায়ে হেঁটে পারাপারের পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে ।

হ্যাঁ, কার্যত প্রাণ হাতে করেই পারাপার । নিচে তাকালেই যেন মাথা ঘোরে । ট্রেনের হুইসেল বাজলেই মনে হয় এই বুঝি মৃত্যু এল । ঝুঁকি নিয়েই এভাবে রুজির টানে রোজ পারাপার করে তিন জেলার শয়ে শয়ে মানুষ ।

দামোদরের অববাহিকায় যে ছোটো ছোটো গ্রামগুলি আছে সেখানকার মানুষজন এই রেল ব্রিজ দিয়ে পায়ে হেঁটে, সাইকেলে, কিংবা মোটর সাইকেলে পারাপার করেন । কিন্তু কেন এই বিপজ্জনক পারাপার ?

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেল ব্রিজ ব্যবহার তিন জেলার মানুষের

স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন বাঁকুড়া, শালতোড়া, পুরুলিয়া, মধুকুণ্ডা-সহ বিভিন্ন এলাকায় যে গ্রামগুলো রয়েছে সেই গ্রামগুলি থেকে আসানসোল আসতে গেলে ঘুরপথে বাঁকুড়ার মেজিয়া দিয়ে একটি সেতু অথবা পশ্চিম বর্ধমানের ডিসেরগড়ে আরেকটি সেতু দিয়ে আসতে হয় ।

ঘুরপথে আসতে গেলে প্রায় 60 থেকে 65 কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতে হবে । তার তুলনায় এই রেল সেতু পেরিয়ে আসা মাত্র কয়েকশো মিটারের দূরত্ব । সেই কারণেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই রেল সেতুর উপর দিয়ে পারাপার করে সাধারণ মানুষ । অনেকেই কর্মসূত্রে আসানসোল আসেন । দিনমজুররা সকাল থেকেই লাইন দিয়ে বার্নপুর, হিরাপুর, ইসমাইল-সহ বিভিন্ন এলাকায় আসেন কাজের সন্ধানে । তাঁরা কেউ সাইকেল চালিয়ে, কেউ বা পায়ে হেঁটে রেল সেতু পারাপার করেন । আবার আসানসোল থেকে পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার প্ৰত্যন্ত গ্রামগুলোতে যান বিভিন্ন কাজের সন্ধানে বহু মানুষ । সারাদিন ধরেই চলতে থাকে বিপজ্জনক পারাপার ।

অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে জানা গিয়েছে, এই পারাপারের সময় ট্রেন চলে আসায় অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন । অনেকে মারা গেছেন । রেল থেকে বারবার সচেতন করার ফলেও মানুষের অভ্যাস পালটায়নি । পরবর্তীকালে রেলের আদ্রা রেল ডিভিশনের পক্ষ থেকে মানুষজনের দাঁড়ানোর জন্য কিছু দূরত্ব পরপর একটি করে স্ট্যান্ডিং প্লেস করে দেওয়া হয়েছে । কিন্তু, তাও হঠাৎ করে ট্রেন চলে এলে কিছুই করার থাকে না । দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হয় ।


তিন জেলারই বাসিন্দারা জানিয়েছেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন তবু উপায় নেই । দাবি করেছেন, সবাই একটি পাকাপাকি সেতু হলে ওই অঞ্চলের মানুষদের খুব সুবিধে হয় । কারণ, বাকি যে দুটি সেতু রয়েছে দামোদরের উপরে একটি বাঁকুড়া সঙ্গে সংযোগকারী এবং একটি পুরুলিয়া সঙ্গে সংযোগকারী সেগুলো অনেক দূরে হওয়ায় মধ্যবর্তী স্থানে একটি সেতু হওয়া প্রয়োজন ।

পুরুলিয়া জেলার একসময়ের সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া যখন রেলের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন সেই সময় তিনি উদ্যোগ নিয়েছিলেন সেতু তৈরি করার । কিন্তু সরকার বদল হলে তা ধামাচাপা পড়ে যায় । দামোদরের এপারে রয়েছে ইস্কো কারখানা ওপার থেকেও প্রচুর মানুষ, অস্থায়ী কর্মীরা এভাবেই ইস্কো কারখানায় কাজ করতে আসেন ।

রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক জানিয়েছেন, রেল এবং ইস্কো সেতু তৈরির ব্যাপারে সহযোগিতা করলে রাজ্য সরকার এগিয়ে আসবে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.