ETV Bharat / state

সামাজিক দূরত্ব মেনে খোলা আকাশের নিচে চলছে ক্লাস - আসানসোলে গাছের নিচে ক্লাস

জীবনযাত্রা বদলে দিয়েছে কোরোনা। সামাজিক দূরত্ব রেখেই খোলা আকাশের নিচে সারাদিন চলল স্কুল। মুখে মাস্ক পড়ে দিনভর ক্লাস করল পড়ুয়ারা৷

classes are run under the open sky in Asansol
সামাজিক দূরত্ব মেনে খোলা আকাশের নিচে চলছে ক্লাস
author img

By

Published : Jul 5, 2020, 9:25 PM IST

Updated : Jul 8, 2020, 10:36 AM IST

আসানসোল, 7 জুলাই : আসানসোলের হিরাপুরের বরথোলা গ্রাম ৷ চারদিকে গাছগাছালি ভরাছোট্ট একফালি গ্রামের সব বাড়িই প্রায় কাঁচা । গ্রামে ঢোকার রাস্তাটিও কাঁচা ।গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ দিনমজুর। বাড়ির ক্ষুদে পড়ুয়ারা পড়তে যায় সরকারি স্কুলে। কিন্তু, এই পরিস্থিতিতে প্রায় সাড়ে তিন মাস স্কুল বন্ধ । বেসরকারি ইংরেজিমাধ্যম স্কুলগুলোর মত অনলাইন ক্লাস নেই গ্রামের ক্ষুদে পড়ুয়াদের ।

পড়ুয়ারা জানে না অ্যান্ড্রয়েড ফোন কি ? ফলে এই কোরোনা পরিস্থিতিতে ক্রমেই যেনতাঁরা পড়াশোনা থেকে দূরে চলে যাচ্ছে । আদিবাসী প্রত্যন্ত গ্রামের এই খুদেপড়ুয়াদের পুনরায় পাঠমুখী করতে এবার স্কুলকে তুলে নিয়ে আসা হল বাড়ির উঠোনে ।একের সঙ্গে অন্যের দূরত্ব রেখেই গাছতলাতে বসলো স্কুল । প্রত্যেকের মুখে দেখা গেলমাস্ক ৷

হিরাপুরের একদম প্রান্তিক অঞ্চলের এই বরথোল গ্রামের বেশিরভাগমানুষেরই সংসার চলে দিনমজুরের কাজ করে ৷ কিন্তু, Covid পরিস্থিতিতে আয় বন্ধ হয়েছে । ত্রাণএবং রেশন সামগ্রীতে কোনওমতে চলছে সংসার । বাড়ির পড়ুয়াদের প্রায় সাড়ে তিন মাসধরে স্কুল বন্ধ । পড়াশোনার পাঠ বন্ধ হয়ে গিয়েছে । নেই অনলাইন ক্লাসের সুবিধা ।দিন দিন স্কুল, পড়াশোনার থেকে দূরে চলে যাচ্ছিল এই প্রান্তিক এলাকার পড়ুয়ারা।পড়ুয়ারা যেন স্কুল ও পড়াশোনা থেকে দূরে না চলে যায় তার জন্য উদ্যোগ নেয় হিরাপুরসার্কেলের শান্তিনগর বিদ্যামন্দির ৷ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে হিরাপুরের বরথোল গ্রামেরওরাং পাড়ায় স্কুল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ।

সারাদিন গাছের তলায় চলছে পড়াশোনা । গ্রামের বিভিন্ন অংশকে ভাগকরে নেওয়া হয়েছিল । বিভিন্ন ক্লাসের জন্য গোটা গ্রাম জুড়ে বিভিন্ন গাছের তলায়চলেছে স্কুল । সামাজিক দূরত্ব মেনে ক্লাস করছেন পড়ুয়ারা ৷ কোথাও অংকন, কোথাও শরীরশিক্ষা,আবার কোথাও ছাত্রছাত্রীরা নামতা পড়লসুরে সুরে । ছিল মিড ডে মিলের আয়োজনও । বার্নপুরের সমাজসেবী ক্লাব নববিকাশ আজসাড়ে তিনশো ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মিড ডে মিলের ব্যবস্থা করেছিল । সারাদিন ধরেগাছতলায় স্কুলে হইচই আনন্দে মেতে রইল গ্রামের শিশুরা । শুধু ওই স্কুলের শিশুরাইনয় গ্রামের অন্যান্য শিশু যারা স্কুলছুট হয়েছিল তাঁরাও আজ পাঠমুখী হল । অর্থাৎএকদিকে যেমন Covid পরিস্থিতিতে শিশুদের পুনরায় স্কুলেপড়ার আস্বাদ দেওয়া গেল তেমনি স্কুলছুট পড়ুয়াদেরও ফিরিয়ে নিয়ে আসার, পড়াশোনায় উৎসাহিত করার একটাপ্রক্রিয়া চালানো হয় ।

খোলা আকাশের নিচে চলছে ক্লাস, দেখুন ভিডিও

আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) প্রশান্ত মন্ডল বলেন, "শান্তিনগরবিদ্যামন্দিরের উদ্যোগে এই ধরনের ক্লাস রাজ্যে প্রথম আসানসোলে শুরু হল । স্কুলছাড়াও শিক্ষক সংগঠন, স্থানীয় সমাজসেবী সংগঠন সহায়তা করেছে এই স্কুল চালানোর জন্য ।শান্তিনগর বিদ্যামন্দিরের পরিচালন কমিটির সভাপতি তথা তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের রাজ্যসভাপতি অশোক রুদ্র বলেন, "আগামী দিনে অন্যান্য গ্রামে ঘুরে ঘুরে এই ধরনের স্কুল করা হবে । যেসমস্ত পিছিয়ে পড়া গ্রামগুলিতে এই পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা থেকে দূরেচলে যাচ্ছে তাঁদের জন্য এই ধরনের উদ্যোগ । এরা অনলাইন ক্লাস জানে না, তাই এদের জন্য গ্রামের মুক্তাঞ্চলেস্কুলকেই নিয়ে আসা হল ।"

স্কুল ছাত্রী শিল্পা ওরাং বলে, "এইভাবে স্কুলে এসে আমার খুব ভালো লাগছে । খুব আনন্দ করে পড়েছি ।"

আসানসোল, 7 জুলাই : আসানসোলের হিরাপুরের বরথোলা গ্রাম ৷ চারদিকে গাছগাছালি ভরাছোট্ট একফালি গ্রামের সব বাড়িই প্রায় কাঁচা । গ্রামে ঢোকার রাস্তাটিও কাঁচা ।গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ দিনমজুর। বাড়ির ক্ষুদে পড়ুয়ারা পড়তে যায় সরকারি স্কুলে। কিন্তু, এই পরিস্থিতিতে প্রায় সাড়ে তিন মাস স্কুল বন্ধ । বেসরকারি ইংরেজিমাধ্যম স্কুলগুলোর মত অনলাইন ক্লাস নেই গ্রামের ক্ষুদে পড়ুয়াদের ।

পড়ুয়ারা জানে না অ্যান্ড্রয়েড ফোন কি ? ফলে এই কোরোনা পরিস্থিতিতে ক্রমেই যেনতাঁরা পড়াশোনা থেকে দূরে চলে যাচ্ছে । আদিবাসী প্রত্যন্ত গ্রামের এই খুদেপড়ুয়াদের পুনরায় পাঠমুখী করতে এবার স্কুলকে তুলে নিয়ে আসা হল বাড়ির উঠোনে ।একের সঙ্গে অন্যের দূরত্ব রেখেই গাছতলাতে বসলো স্কুল । প্রত্যেকের মুখে দেখা গেলমাস্ক ৷

হিরাপুরের একদম প্রান্তিক অঞ্চলের এই বরথোল গ্রামের বেশিরভাগমানুষেরই সংসার চলে দিনমজুরের কাজ করে ৷ কিন্তু, Covid পরিস্থিতিতে আয় বন্ধ হয়েছে । ত্রাণএবং রেশন সামগ্রীতে কোনওমতে চলছে সংসার । বাড়ির পড়ুয়াদের প্রায় সাড়ে তিন মাসধরে স্কুল বন্ধ । পড়াশোনার পাঠ বন্ধ হয়ে গিয়েছে । নেই অনলাইন ক্লাসের সুবিধা ।দিন দিন স্কুল, পড়াশোনার থেকে দূরে চলে যাচ্ছিল এই প্রান্তিক এলাকার পড়ুয়ারা।পড়ুয়ারা যেন স্কুল ও পড়াশোনা থেকে দূরে না চলে যায় তার জন্য উদ্যোগ নেয় হিরাপুরসার্কেলের শান্তিনগর বিদ্যামন্দির ৷ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে হিরাপুরের বরথোল গ্রামেরওরাং পাড়ায় স্কুল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ।

সারাদিন গাছের তলায় চলছে পড়াশোনা । গ্রামের বিভিন্ন অংশকে ভাগকরে নেওয়া হয়েছিল । বিভিন্ন ক্লাসের জন্য গোটা গ্রাম জুড়ে বিভিন্ন গাছের তলায়চলেছে স্কুল । সামাজিক দূরত্ব মেনে ক্লাস করছেন পড়ুয়ারা ৷ কোথাও অংকন, কোথাও শরীরশিক্ষা,আবার কোথাও ছাত্রছাত্রীরা নামতা পড়লসুরে সুরে । ছিল মিড ডে মিলের আয়োজনও । বার্নপুরের সমাজসেবী ক্লাব নববিকাশ আজসাড়ে তিনশো ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মিড ডে মিলের ব্যবস্থা করেছিল । সারাদিন ধরেগাছতলায় স্কুলে হইচই আনন্দে মেতে রইল গ্রামের শিশুরা । শুধু ওই স্কুলের শিশুরাইনয় গ্রামের অন্যান্য শিশু যারা স্কুলছুট হয়েছিল তাঁরাও আজ পাঠমুখী হল । অর্থাৎএকদিকে যেমন Covid পরিস্থিতিতে শিশুদের পুনরায় স্কুলেপড়ার আস্বাদ দেওয়া গেল তেমনি স্কুলছুট পড়ুয়াদেরও ফিরিয়ে নিয়ে আসার, পড়াশোনায় উৎসাহিত করার একটাপ্রক্রিয়া চালানো হয় ।

খোলা আকাশের নিচে চলছে ক্লাস, দেখুন ভিডিও

আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) প্রশান্ত মন্ডল বলেন, "শান্তিনগরবিদ্যামন্দিরের উদ্যোগে এই ধরনের ক্লাস রাজ্যে প্রথম আসানসোলে শুরু হল । স্কুলছাড়াও শিক্ষক সংগঠন, স্থানীয় সমাজসেবী সংগঠন সহায়তা করেছে এই স্কুল চালানোর জন্য ।শান্তিনগর বিদ্যামন্দিরের পরিচালন কমিটির সভাপতি তথা তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের রাজ্যসভাপতি অশোক রুদ্র বলেন, "আগামী দিনে অন্যান্য গ্রামে ঘুরে ঘুরে এই ধরনের স্কুল করা হবে । যেসমস্ত পিছিয়ে পড়া গ্রামগুলিতে এই পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা থেকে দূরেচলে যাচ্ছে তাঁদের জন্য এই ধরনের উদ্যোগ । এরা অনলাইন ক্লাস জানে না, তাই এদের জন্য গ্রামের মুক্তাঞ্চলেস্কুলকেই নিয়ে আসা হল ।"

স্কুল ছাত্রী শিল্পা ওরাং বলে, "এইভাবে স্কুলে এসে আমার খুব ভালো লাগছে । খুব আনন্দ করে পড়েছি ।"

Last Updated : Jul 8, 2020, 10:36 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.