দুর্গাপুর , 5 জুলাই : কেন্দ্রে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেই ফের দেশের তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত ইস্পাত কারখানার কৌশলগত বিলগ্নীকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে BJP শাসিত সরকার । আগামী ১ অগাস্ট এর মধ্যে কারখানাগুলির নিলামের জন্য টেন্ডার জমার শেষ দিন ধার্য করে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আজ সকাল থেকে CITU ও INTUC এক সঙ্গে আন্দোলন শুরু করেছে ।
গতকাল প্রকাশিত এই বিজ্ঞাপনে স্পষ্ট এবার কেন্দ্রীয় স্টিল অথোরিটি অব ইন্ডিয়া লিমিটেড ( SAIL) এর পক্ষ থেকে দুর্গাপুরের ASP(Alloy steel plant),বিশ্বেশ্বরাইয়া স্টিল প্ল্যান্ট এবং সালেম স্টিল কারখানাকে কৌশলগত বিলগ্নীকরণ করা হচ্ছে । উল্লেখ্য, এর আগে প্রথম BJP সরকারের সময়ে 2016-এর সেপ্টেম্বর মাসে এই তিনটি কারুখানাকে কৌশলগত বিলগ্নীকরণের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয় । টেন্ডারের জন্য বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয় । তবে সেই সময় কোনও বেসরকারি সংস্থা এই তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা অধিগ্রহণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেনি ।
প্রথম মোদি সরকারের ভারী শিল্পমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র সঙ্গে আলোচনা করেন CITU ও INTUC নেতারা । পরে তাঁরা কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রীর কাছে দরবারও করে। অন্যদিকে TMCর শ্রমিক সংগঠন INTTUC , বিলগ্নীকরণ ঠেকাতে ৮৬ দিন ASP কারখানার গেটের বাইরে অবস্থানে বসেছিল । সেই সময় তাঁরা দিনরাত কারখানা পাহারা দেয় যাতে বেসরকারি সংস্থার কোনও প্রতিনিধি কারখানায় ঢুকতে না পারেন । ASP-র বিলগ্নীকরণ আটকাতে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের পূর্বতন সাংসদ মমতাজ সঙ্ঘমিতা কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন।
এ বার বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্র বর্তমানে BJPর দখলে । বর্তমান সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া ASP কারখনা প্রসঙ্গে বারবার ইতিবাচক কথায় শুনিয়ে এসেছেন। ঘটনাচক্রে গতকাল তাঁর জন্মদিনে সংবাদপত্রে প্রকাশিত ASP কারখনার বিলগ্নীকরণের টেন্ডারের বিজ্ঞাপন দুর্গাপুরের এই কারখানার শ্রমিকদের কাছে আগুনে ঘৃতাহুতির মতো । আজ সকালে CITU ও INTUCর পক্ষ থেকে ASP কারখানার গেটে অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়।
অন্যদিকে এই বিজ্ঞাপন প্রসঙ্গে জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন ," এটাই BJPর আচ্ছে দিন আর আলুওয়ালিয়ার দুর্গাপুরকে বাজেটের আগের দিনে দেওয়া উপহার । এরা পশ্চিমবঙ্গকে শ্মশান করে দিতে মরিয়া । তবে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আমরা আন্দোলন চালাব কেন্দ্রের এই অশুভ উদ্দেশের বিরুদ্ধে। যাঁরা বিজেপি করছেন তাঁরা এবার ভাবুন, এর আগে কেন্দ্রের বাজপেয়ীর সরকারের সময়ে MAMC, HFC, BOGL এর মত বড় বড় কারখানা বন্ধ হয়েছে । এবার ASP ।
জিতেন্দ্র তিওয়ারি আরও বলেন, " আসানসোলে হিন্দুস্তান কেবলস কারখানা তো খুলে দিয়েছেন বলে বাবুল সুপ্রিয় মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন । এঁরা আসলে প্রতারক । মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। দুর্গাপুরকে একসময় জার্মানির রুর শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে তুলনা করা হত । ASP কারখানা বন্ধ হলে দুর্গাপুরে আর রাষ্ট্রায়ত্ত ভারী কারখানা বলতে শধুমাত্র DSP কারখানা খোলা থাকল । শিল্পাঞ্চলবাসী শঙ্কিত যে এবার কি তাহলে DSPর ওপরেও কোপ পড়বে ? ''