আসানসোল, 11 নভেম্বর: কয়েকদিন আগেই বীরভূমে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) 'বাঘ' বলে সম্বোধন (Tiger remark) করেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তিনি বলেছিলেন, বাঘকে বেশিদিন খাঁচায় বন্দি করে রাখা যায় না । শুক্রবার আসানসোলে সিবিআই (CBI) আদালতে অনুব্রত মণ্ডলের শুনানির সময় ফিরহাদ হাকিমের সেই উক্তিকেই হাতিয়ার করলেন সিবিআই আইনজীবী কালীচরণ মিশ্র । প্রভাবশালী তত্ত্ব খাঁড়া করতে গিয়ে তিনি বলেন, রাজ্যের মন্ত্রী যখন অনুব্রত মণ্ডলকে 'বাঘ' বলে আখ্যা দিচ্ছেন, তখন বুঝে নিতে হবে তিনি কতটা প্রভাবশালী ।
এ দিন সওয়াল জবাবে অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত জামিনের জন্য আবেদন করলে সেই আবেদনের বিরোধিতা করেন সিবিআই আইনজীবী । তিনি দাবি করেন, অনুব্রত মণ্ডল প্রভাবশালী এবং তাঁকে জামিন দেওয়া হলে তিনি সাক্ষীদের হুমকি দিতে পারেন । পাশাপাশি সরকারি আধিকারিকদের কাছ থেকে নথি প্রমাণ লোপাট করতেও পারেন । পাশাপাশি এই ঘটনার তদন্ত চলছে এবং গরু পাচার কাণ্ডের 15 কোটি টাকা অনুব্রত'র মধ্যস্থতায় বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছিল, সে বিষয়েও তদন্ত করা চলছে । তাই তাঁকে জামিন দেওয়া যাবে না । জামিন দেওয়া হলে এই তদন্তের গতি প্রকৃতি বাধা পেতে পারে ।
অন্যদিকে, অনুব্রত মন্ডলের আইনজীবী বলেন, "প্রায় 92 দিন ধরে অনুব্রত মণ্ডলকে হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং শুক্রবার নতুন করে কোনও তথ্য সিবিআই আদালতে জমা করতে পারেনি । তিনি যদি প্রভাবশালীই হবেন, তাহলে এত মানুষ সাক্ষী দিতেন না । যে কোনও শর্তে তাঁকে জামিন দেওয়া হোক । প্রয়োজন তিনি জেলাতে ঢুকবেন না ।"
আরও পড়ুন: 'জানলার কাচ তুলে দাও !' লটারি নিয়ে প্রশ্ন কানে যেতেই বললেন কেষ্ট
পাশাপাশি এ দিন বোমভোলা রাইস মিলের যে অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে রাখা হয়েছে, সেই অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার জন্য আদালতে পিটিশন দাখিল করেন অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী । তাঁর দাবি, "ওই রাইস মিলের কর্মীদের বেতন দেওয়া যাচ্ছে না এবং ইলেকট্রিসিটি বিল জমা করা যাচ্ছে না অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ থাকার কারণে ।" অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবীর দাবি ছিল, "যখন চার্জশিট জমা দেওয়া হয়ে গিয়েছে, তদন্ত শেষ হয়েছে তখন নতুন করে আর তাঁকে আটকে রাখার কী প্রয়োজন ।
ফিরহাদ হাকিমের "বাঘ" উক্তি নিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী দাবি করেন, "দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চলছে, কিন্তু সিবিআই সে বিষয়ে কিছু জানাতে না পেরে অন্যদিকে দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করছে । যদিও বিচারক সিবিআই আইনজীবীর ওই সওয়ালের কোনও উত্তর দেননি ।"
যদিও অনুব্রতর আইনজীবীর এই যুক্তি কাজে আসেনি ৷ দু পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর আবারও 14 দিনের জন্য অনুব্রতকে জেল হেফাজতে পাঠান বিচারক ৷ এই মামলার পরবর্তী শুনানি 25 নভেম্বর ৷