দুর্গাপুর, 9 ডিসেম্বর: পথ দুর্ঘটনায় নিয়ে নয়া 'হিট অ্যান্ড রান' আইনের বিরুদ্ধে স্টিয়ারিং ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন দুর্গাপুরের ট্রাকচালকরা ৷ এই আন্দোলনের জেরে বন্ধ হতে বসেছে জ্বালানি গ্যাস পরিবহণ ৷ তার ফলে গ্যাসের সংকট দেখা দিতে পারে বিভিন্ন জেলাজুড়ে বলে আশংকা ৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের আশ্বাস সত্ত্বেও ধর্মঘটে ট্রাকচালকরা ৷ প্রধানমন্ত্রী থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের কথায় বিশ্বাস নেই বলে দাবি আন্দোলনকারীদের । অশান্তি এড়াতে মোতায়েন কোকওভেন থানার পুলিশ । কিন্তু ট্রাকচালকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানাচ্ছে না ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটরর্স অ্যাসোসিয়েশন ৷
ট্রাকচালক নভেলেসকুমার যাদব বলেন,"মোদিকে বিশ্বাস করছি না আমরা । কৃষকদের আন্দোলনেও তাঁরা অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু তা রক্ষা করেননি । প্রয়োজনে চায়ের দোকান করে পেট চালাব । তবু গাড়ি চালাব না ৷ এই আইন অবিলম্বে প্রত্যাহার করা না হলে এই আন্দোলন চলবে । অনেক সময় রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটে অন্য গাড়ির চালকদের দোষে । সেক্ষেত্রে আমরা যেহেতু বড় গাড়ি চালাই আমাদেরকেই দায়ী করা হবে ।"
অন্যদিকে ওয়েষ্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটরর্স অ্যাসোসিয়েশনের এর সাধারণ সম্পাদক সজল ঘোষ ইটিভি ভারতকে বলেন, "আমাদের সর্বভারতীয় সংগঠনের পক্ষ থেকে চলতি মাসের 3 তারিখে স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করা হয় । লিখিত আশ্বাসের পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে ট্রাক চালকরা ।গত 3 তারিখ স্বরাষ্ট্র সচিব অজয়কুমার ভাল্লার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয় অল ইন্ডিয়া ট্রাক ফেডারেশনের ৷ সেই বৈঠকেই নতুন 'হিট অ্যান্ড রান' আইন এখনই লাগু না কারার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি ৷ তারপরও আমরা দেখছি বিক্ষিপ্তভাবে কোথাও কোথাও এভাবে আন্দোলন ও ধর্মঘট হচ্ছে ।"
তাঁর কথায়, "আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছিলাম এই ধরনের আন্দোলন বন্ধ করে দেওয়ার জন্য । এমনকী কোনও রাজনৈতিক দল যাতে এদেরকে ইন্ধন না দেয়, সেই আবেদনও জানিয়েছি । আমাদেরকে লিখিত নোটিশ দিয়ে 'হিট অ্যান্ড রান' নয়া আইন এখনই লাগু না করার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ।"
কেন্দ্রের নয়া 'হিট এন্ড রান' আইন প্রণয়নের পরই দেশজুড়ে ট্রাকচালকরা এই আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন । এই নয়া আইনে দুর্ঘটনা ঘটলে ট্রাকচালকদের 7 লক্ষ টাকা জরিমানা ও 10 বছরের কারাবাসের কথা বলা হয়েছে ৷ দেশজুড়ে বিক্ষোভ পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষে আসরে নামেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয়কুমার ভাল্লা ৷ তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক হয় ট্রাক আসোসিয়েশনের ৷ স্বরাষ্ট্র সচিবের আশ্বাস মেলার পরেই ধর্মঘট তুলে নেন ট্রাক চালকরা । কিন্তু ফের মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় গ্যাস সিলিন্ডার পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত ট্রাকচালকেরা ধর্মঘটের ডাক দেয় । তাতে সামিল হয়েছে ইন্ডিয়ান ওয়েলের দুর্গাপুরের বটলিন প্লান্টের ট্রাকচালকরা ৷ এর জেরে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে রাষ্ট্রায়াত্ত জ্বালানি গ্যাস সংস্থার গ্যাস পরিবহণ ৷
অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জাতীয় সড়কের অবস্থা বেহাল । কোথাও আবার ব্যাপক যানজট দেখা দিচ্ছে । সেই কারণেই দুর্ঘটনা ঘটছে বিভিন্ন সময় । এই দায় কেন্দ্রীয় সরকারের । এমনটাই অভিযোগ করেছেন ট্রাকচালকরা ৷ তাই গাড়ি দুর্ঘটনার নয়া আইন প্রত্যাহার করতে হবে ৷ এই দাবি তুলে তাঁরা জ্বালানি গ্যাস সিলিন্ডার পরিবহণ বন্ধ রেখেছেন । যতক্ষণ না পর্যন্ত তাদের দাবি মানা হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন ।
আরও পড়ুন: