ETV Bharat / state

লকডাউনে সংকটে আসানসোলের ফুল বাজার

লকডাউনের প্রভাব পড়েছে আসানসোলের ফুলের বাজারে ৷ লকডাউনে ছোটো-বড় প্রায় 150টি দোকান বন্ধ ৷ লকডাউনের জেরে ক্ষতির অঙ্ক প্রায় এক কোটি টাকা ৷

asansol flower market
আসানসোলের ফুল বাজার
author img

By

Published : May 24, 2020, 4:00 PM IST

Updated : May 29, 2020, 3:33 PM IST

আসানসোল, 24 মে: ভগবানের দুয়ারেই পড়েছে তালা, তাহলে ফুল কিনবে কে? ৷ সকাল হতেই ভিড়ে উপচে পড়ত বাজার, সারাদিনই ক্রেতাদের আনাগোনা লেগে থাকত দোকানগুলিতে ৷ বিয়েবাড়ি থেকে শুরু করে উপনয়ন বা শ্রাদ্ধ- সবক্ষেত্রেই প্রয়োজন হয় ফুলের ৷ এছাড়া নিত্যদিনের পুজোর জন্যও প্রয়োজন কুচো ফুলের ৷ চাহিদা থাকায় স্বাভাবিকভাবেই আয় ভালোই হত ফুলব্যবসায়ীদের ৷ কিন্তু লকডাউনের জেরে প্রভাবিত হয়েছে ফুলের বাজারও ৷

কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে জারি করা হয়েছিল লকডাউন ৷ দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেছে দুইমাস ৷ উৎসব-আয়োজন নেই, তাই বিক্রিও হচ্ছে না ফুল ৷ পচে যাওয়া ফুল পড়ে থাকছে রাস্তার ধারে ৷ বেশিরভাগ নার্সারিই বন্ধ । তবু ব্যবসায়ীরা দু'একটি ফুলের দোকান খুলে রেখেছেন সামান্য উপার্জনের আশায় ৷

আসানসোলে মোট দুটি বড় ফুলের বাজার রয়েছে ৷ একটি সুভাষ ইন্সটিটিউটের কাছে, অন্যটি রয়েছে গির্জা মোড়ের হকার্স মার্কেটে ৷ এছাড়াও বার্নপুর বাজার, কোর্ট বাজার, নিয়ামতপুর বাজার সহ শহরে মোট ১৫০ ফুলের দোকান রয়েছে । লকডাউনে তালা প্রতিটি দোকানেই ৷ কার্যতই মাথায় হাত দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা ৷

আসানসোল বাজারের পুরোনো GT রোডের ধারে সার দিয়ে বসে ফুলের দোকান । রংবেরঙের ফুল, ক্রেতাদের আনাগোনা, বিয়ের গাড়ি সাজানো, সব মিলিয়ে জমজমাট হয়ে থাকত আসানসোলের ফুল বাজার । কিন্তু লকডাউনের কারণে সর্বত্রই পড়েছে হতাশার ছাপ । এমনিতে ফুলের বিক্রি নেই । দু-একজন ক্রেতা আসেন নিত্য পুজোর ফুল কিনতে । কিন্তু তাতে কিইবা হয় । পাইকারি দরে কিনে আনা ফুল পচছে দোকানে ৷ হতাশ হয়ে পচা ফুলের স্তূপ বাইরে ফেলে রেখে দোকান বন্ধ করে চলে গেছেন অনেকে । রাস্তার পাশেও পড়ে রয়েছে ফুলের গোছা ।

লকডাউনে সংকটে আসানসোলের ফুল বাজার

শুধুমাত্র পয়লা বৈশাখের দিনেই আসানসোল বাজারে প্রত্যেক ফুল ব্যবসায়ী 50 থেকে 75 হাজার টাকার ফুল বিক্রি করতেন । বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ মাসে বিয়ের মরশুম, উপনয়ন কিংবা অন্নপ্রাশন থাকে । প্রতিবছরই এই সময়ে ফুল বাজারে ভালো ব্যবসা হত । এরসঙ্গে ঈদের সময় বিভিন্ন ক্লাব ডেকোরেশনের জন্য ফুল নিয়ে যায় । সব অঙ্ক মিলিয়ে এই গ্রীষ্মের মরসুমে ফুল বাজারে ১ কোটি টাকার ব্যবসা হত ।

পয়লা বৈশাখ থেকেই আগামী দিন কতটা দুর্বিষহ হতে চলেছে, তার চিত্রটা মোটামুটি স্পষ্ট হতে শুরু করেছিল ৷ বাঙালিদের নববর্ষে দোকান থেকে শুরু করে অন্যান্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলিকেও ফুল দিয়ে সাজানো হয় । সেইমতোই দোকানে আগে থেকেই বিভিন্ন ধরনের ফুল তুলে রেখেছিলেন ব্যবসায়ীরা । কিন্তু আচমকা লকডাউন হয়ে যাওয়ায় সব বন্ধ । বিয়ের মরশুম চালু হলেও লকডাউনের কারণে কোনও উৎসব-আনন্দ নেই । ফলে বিয়েবাড়ির মণ্ডপ থেকে গাড়ি সাজানোর অর্ডার নেই ব্যবসায়ীদের কাছে ৷

কতটা ক্ষতি হচ্ছে লকডাউনে, এই বিষয়ে আসানসোল ফুল বাজারের এক ব্যবসায়ী বীরেন চক্রবর্তী জানান, ‘‘একদিন ফুল কিনে এনে চারদিন ধরে সেই ফুল বিক্রি করা হচ্ছে । স্বাভাবিকভাবেই গরমে পচে যাচ্ছে ফুল । বাজারে কোনও ক্রেতা নেই । কীভাবে আগামী দিনে বাজার চলবে জানিনা ।’’

অন্য আরেক ব্যবসায়ী জয়ন্ত দাস জানালেন ,‘‘লকডাউনের ফলে সমস্ত মন্দির বন্ধ । নিত্য পুজোর জন্য সাধারণ মানুষ যা ফুল কিনে নিয়ে যাচ্ছে, তা খুবই সামান্য ৷ তাতে কি আর আয় হয়?’’

লকডাউন কবে উঠবে, কবেই বা ফিরবে পুরোনো বাজার, তা নিয়ে সংশয়ে ব্যবসায়ীরা ৷ হতাশার এই অন্ধকার থেকে কবে আলোর দিন ফিরবে, জানে না কেউ ।

আসানসোল, 24 মে: ভগবানের দুয়ারেই পড়েছে তালা, তাহলে ফুল কিনবে কে? ৷ সকাল হতেই ভিড়ে উপচে পড়ত বাজার, সারাদিনই ক্রেতাদের আনাগোনা লেগে থাকত দোকানগুলিতে ৷ বিয়েবাড়ি থেকে শুরু করে উপনয়ন বা শ্রাদ্ধ- সবক্ষেত্রেই প্রয়োজন হয় ফুলের ৷ এছাড়া নিত্যদিনের পুজোর জন্যও প্রয়োজন কুচো ফুলের ৷ চাহিদা থাকায় স্বাভাবিকভাবেই আয় ভালোই হত ফুলব্যবসায়ীদের ৷ কিন্তু লকডাউনের জেরে প্রভাবিত হয়েছে ফুলের বাজারও ৷

কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে জারি করা হয়েছিল লকডাউন ৷ দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেছে দুইমাস ৷ উৎসব-আয়োজন নেই, তাই বিক্রিও হচ্ছে না ফুল ৷ পচে যাওয়া ফুল পড়ে থাকছে রাস্তার ধারে ৷ বেশিরভাগ নার্সারিই বন্ধ । তবু ব্যবসায়ীরা দু'একটি ফুলের দোকান খুলে রেখেছেন সামান্য উপার্জনের আশায় ৷

আসানসোলে মোট দুটি বড় ফুলের বাজার রয়েছে ৷ একটি সুভাষ ইন্সটিটিউটের কাছে, অন্যটি রয়েছে গির্জা মোড়ের হকার্স মার্কেটে ৷ এছাড়াও বার্নপুর বাজার, কোর্ট বাজার, নিয়ামতপুর বাজার সহ শহরে মোট ১৫০ ফুলের দোকান রয়েছে । লকডাউনে তালা প্রতিটি দোকানেই ৷ কার্যতই মাথায় হাত দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা ৷

আসানসোল বাজারের পুরোনো GT রোডের ধারে সার দিয়ে বসে ফুলের দোকান । রংবেরঙের ফুল, ক্রেতাদের আনাগোনা, বিয়ের গাড়ি সাজানো, সব মিলিয়ে জমজমাট হয়ে থাকত আসানসোলের ফুল বাজার । কিন্তু লকডাউনের কারণে সর্বত্রই পড়েছে হতাশার ছাপ । এমনিতে ফুলের বিক্রি নেই । দু-একজন ক্রেতা আসেন নিত্য পুজোর ফুল কিনতে । কিন্তু তাতে কিইবা হয় । পাইকারি দরে কিনে আনা ফুল পচছে দোকানে ৷ হতাশ হয়ে পচা ফুলের স্তূপ বাইরে ফেলে রেখে দোকান বন্ধ করে চলে গেছেন অনেকে । রাস্তার পাশেও পড়ে রয়েছে ফুলের গোছা ।

লকডাউনে সংকটে আসানসোলের ফুল বাজার

শুধুমাত্র পয়লা বৈশাখের দিনেই আসানসোল বাজারে প্রত্যেক ফুল ব্যবসায়ী 50 থেকে 75 হাজার টাকার ফুল বিক্রি করতেন । বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ মাসে বিয়ের মরশুম, উপনয়ন কিংবা অন্নপ্রাশন থাকে । প্রতিবছরই এই সময়ে ফুল বাজারে ভালো ব্যবসা হত । এরসঙ্গে ঈদের সময় বিভিন্ন ক্লাব ডেকোরেশনের জন্য ফুল নিয়ে যায় । সব অঙ্ক মিলিয়ে এই গ্রীষ্মের মরসুমে ফুল বাজারে ১ কোটি টাকার ব্যবসা হত ।

পয়লা বৈশাখ থেকেই আগামী দিন কতটা দুর্বিষহ হতে চলেছে, তার চিত্রটা মোটামুটি স্পষ্ট হতে শুরু করেছিল ৷ বাঙালিদের নববর্ষে দোকান থেকে শুরু করে অন্যান্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলিকেও ফুল দিয়ে সাজানো হয় । সেইমতোই দোকানে আগে থেকেই বিভিন্ন ধরনের ফুল তুলে রেখেছিলেন ব্যবসায়ীরা । কিন্তু আচমকা লকডাউন হয়ে যাওয়ায় সব বন্ধ । বিয়ের মরশুম চালু হলেও লকডাউনের কারণে কোনও উৎসব-আনন্দ নেই । ফলে বিয়েবাড়ির মণ্ডপ থেকে গাড়ি সাজানোর অর্ডার নেই ব্যবসায়ীদের কাছে ৷

কতটা ক্ষতি হচ্ছে লকডাউনে, এই বিষয়ে আসানসোল ফুল বাজারের এক ব্যবসায়ী বীরেন চক্রবর্তী জানান, ‘‘একদিন ফুল কিনে এনে চারদিন ধরে সেই ফুল বিক্রি করা হচ্ছে । স্বাভাবিকভাবেই গরমে পচে যাচ্ছে ফুল । বাজারে কোনও ক্রেতা নেই । কীভাবে আগামী দিনে বাজার চলবে জানিনা ।’’

অন্য আরেক ব্যবসায়ী জয়ন্ত দাস জানালেন ,‘‘লকডাউনের ফলে সমস্ত মন্দির বন্ধ । নিত্য পুজোর জন্য সাধারণ মানুষ যা ফুল কিনে নিয়ে যাচ্ছে, তা খুবই সামান্য ৷ তাতে কি আর আয় হয়?’’

লকডাউন কবে উঠবে, কবেই বা ফিরবে পুরোনো বাজার, তা নিয়ে সংশয়ে ব্যবসায়ীরা ৷ হতাশার এই অন্ধকার থেকে কবে আলোর দিন ফিরবে, জানে না কেউ ।

Last Updated : May 29, 2020, 3:33 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.