দুর্গাপুর, 5 মে : এক নাবালিকাকে নিষিদ্ধ মাদক দ্রব্য খাইয়ে ধর্ষণ ৷ এরপর ছবি তুলে রেখে তাকে ভয় দেখিয়ে একাধিক বার শারীরিক অত্যাচার করার অভিযোগ উঠল পশ্চিম বর্ধমান জেলার BJP সভাপতি ভাইপোর বিরুদ্ধে । ঘটনার নিন্দায় সরব তৃণমূল কংগ্রেস । যদিও পশ্চিম বর্ধমান জেলার BJP সভাপতি জানালেন, ধর্ষণের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ৷ ভাইপোর সঙ্গে ওই নাবালিকার প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল বলে জানতেন তিনি ।
দুর্গাপুরের কাঁকসা থানা এলাকায় থাকেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার BJP-র সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই । ওই একই গ্রামে বাস করেন ভাইপো সহদেব ঘোড়ুই । কাঁকসা দু'নম্বর মন্ডল BJP-র প্রাক্তন সভাপতি সহদেব ঘোড়ুই BJP-র এক বুথ সভাপতির বাড়ি যাতায়াত করত । সহদেব ঘোড়ুই দলীয় কাজকর্ম নিয়েই ওই BJP কর্মীর বাড়িতে যাতায়াত করত ।
অভিযোগ, সহদেব ওই দলীয় কর্মীর 16 বছর বয়সি নাবালিকা মেয়েকে প্রথমদিকে বোন বলত । একদিন ওই নাবালিকা কম্পিউটার প্রশিক্ষণের পর বাড়ি ফেরার পথে সহদেব রাস্তায় দেখা করে এবং ওই নাবালিকাকে দুর্গাপুরের একটি জায়গায় নিয়ে এসে তাকে লস্যি জাতীয় কোনও ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গে ‘‘নিষিদ্ধ মাদক’’ খাইয়ে দেয় বলে অভিযোগ । তারপর ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয় এবং সেই ছবি তুলে রাখে সহদেব ।
এরপর থেকেই ওই ছবি দেখিয়ে, এমনকী, বাবা-মাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিত এবং একাধিকবার সহদেব তাকে ধর্ষণ করে বলে আজ কাঁকসা থানায় জানায় নিগৃহীতা নাবালিকা । ওই নাবালিকার দাবি, মোবাইলে তুলে রাখা ছবি সোশাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখাত সে ।
নাবালিকার বাবার অভিযোগ, ‘‘আজ আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি সব দলেই দুষ্কৃতী আছে । রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়েছে সহদেব । কারণ সে জানে তার মাথার উপরে কাকার হাত আছে । আমার মেয়ে সহদেবকে বিয়ে করবে বলে । তারপরই সে প্রকৃত সত্য আমাদের সামনে বলে । আমরা চাই দোষীর কঠোরতম শাস্তি হোক ।’’
চাঞ্চল্যকর এই বিষয় নিয়ে কাঁকসার তৃণমূল নেতা দেবদাস বক্সী বলেন , ‘‘BJP যে দুষ্কৃতীদের দল এই ঘটনা সেই কথাকেই প্রমাণ করে । একজন জেলা সভাপতির ভাইপোর এই ধরণের কুকর্ম কখনোই মেনে নেওয়া যায় না । আমরা ওই মেয়েটির বাবা BJP করলেও চাইছি সুবিচার পান ।’’
BJP-র পশ্চিম বর্ধমান জেলার সভাপতি লক্ষ্মণ ঘড়ুই বলেন, ‘‘আমি এই ঘটনার কথা শুনে খুব অবাক হচ্ছি । কয়েকদিন আগেও মেয়েটির বাবা আমার কাছে এসেছিলেন বিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে । ধর্ষণের অভিযোদ তখন বলা হয়নি । আমার ভাইপো আমার সঙ্গে থাকে না । আমার বাড়ি থেকে দূরে থাকে । আমি জানতাম ওই মেয়েটির সঙ্গে তার প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক আছে । কিন্তু এখন এইসব কথা শুনলাম । তবে ওই নাবালিকার বাবা অত্যন্ত ভালো মানুষ । তিনি BJP-র একজন কর্মী এবং আমার সঙ্গে দীর্ঘদিন তিনি রাজনীতি করছেন আমি এটুকু বলতেই পারি।’’
ঘটনার পর থেকে দেখা মেলেনি অভিযুক্ত সহদেবের । এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দুর্গাপুরে কাঁকসা থানা এলাকায় । আজ দুপুরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ওই নাবালিকার বাবা। ঘটনার তদন্তে নেমেছে কাঁকসা থানার পুলিশ ।
এই ঘটনায় BJP-র জেলা সভাপতির পরিবারের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠছে ৷ বিরোধীদের কাছে এই ঘটনা যে আগামী দিনে একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার হতে চলেছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা ।